মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : আসন্ন রাজ্য বিধানসভা ও সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখেই জম্মু-কাশ্মীরে পিপলস ডেমক্রেটিক পার্টি (পিডিপি)’র সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জোট ভেঙে দিয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কিন্তু কাশ্মীর সমস্যা খুবই পুরনো এবং সেখানে কখনো কাক্সিক্ষত ফল আসেনি। বিজেপি’র অতীতের পারফরমেন্স তারই স্বাক্ষী।
১৯৯৮ এবং কারগিল ঘটনার চারমাস বাদে ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া দলটি ১৮২টি আসন লাভ করে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে আবেগ তুঙ্গে উঠলেও ৮ নভেম্বর মুদ্রানোট বাতিল সেই আবেগ ও রাজনৈতিক প্রভাব হাওয়ায় মিলিয়ে দেয়।
এর প্রথম উদাহরণ হলো বিজেপি’র নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক এলায়েন্স (এনডিএ) ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো তৎকালিন অখÐ উত্তর প্রদেশে (ঝাড়খন্ড তখন এর অংশ ছিলো) ১৯৯৮ সালের মার্চে যেখানে লোকসভার নির্বাচনে বিজেপি ৮৫টি আসনের মধ্যে ৫৮টি লাভ করে সেখানে ১৯৯৯ সালে কারগিল ঘটনার চারমাস বাদে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে মাত্র ২৯টি আসন লাভে সক্ষম হয়।
তাহলে কারগিল ঘটনা নিয়ে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে কেন বিজেপি এমন ফল করেছিলো সেটা একটি প্রশ্ন। তৎকালীন বিজেপি’র প্রধানমন্ত্রী ও লাখনৌ-এর এমপি অটল বিহারী বাজপেয়ী কারগিল থেকে পূর্ণ ফায়দা হাসিল করতে পারেননি। যদিও এই রাজ্যের বহু সৈনিক সাহসিকতার পুরস্কার পেয়েছেন, এমনকি পরম বীর চক্র পুরস্কারও পেয়েছেন।
বিজিপি কারগিলের সাফল্য থেকে ঘোর হিন্দিভাষী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ফায়দা লুটতে চাইবে এটাই ছিলো স্বাভাবিক। কিন্তু ১৯৯৯ সালে সেখানে কংগ্রেসের আসন শূন্য থেকে কেন লাফ দিয়ে ১০-এ দাঁড়িয়েছিলো তারও কোন জবাব নেই। অথচ ১৮ মাস আগে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি নামে দলের একটি অংশের বেরিয়ে যাওয়া ও তৃণমূল কংগ্রেসের এনডিএ’র সঙ্গে তা মেলানোর কারণে কংগ্রেস বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছিলো।
এসব প্রশ্নে জবাব পাওয়া যাবে ১৯৯৯ সালে উত্তরপ্রদেশে সংঘটিত রাজনৈতিক ঘটনাবলীর মধ্যে। সেসময় রাজ্যের ক্ষমতায় ছিলো বিজেপি এবং মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের বিরুদ্ধে ইনকমবেন্সি ফ্যাক্টর কাজ করেছে। বাজপেয়ী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে সুম্পর্ক ছিলো না। সিংয়ের প্রথম মেয়াদকালে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। দ্বিতীয় মেয়াদে মাত্র দুই বছরের মাথায় ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে তাকে পদত্যাগ করতে হয়।
একইভাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের চার মাসের মাথায় পাঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে মোদি ম্যাজিক কাজ করেনি, যদিও দলটি উত্তর প্রদেশে বেশ ভালো ফল করেছিলো। অবশ্য ২০১৭ সালের মার্চে উত্তর প্রদেশে বিজেপি’র ভালো করার পেছনে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য ও ক্ষমতাসীন সমাজবাদি পার্টির মধ্যে অশান্তিকে দায়ী করেন অনেকে। সার্জিক্যাল স্টাইক বা মুদ্রানোট বাতিল বিজেপি’র সাফল্য এনে দেয়নি।
জম্মু-কাশ্মিরের প্রতিবেশী পাঞ্জাব আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের শিকার হলেও বিজেপি-আকালি দলের জোট সেখানে জয়ী হতে পারেনি। দেশের জন্য জীবন দেয়া সেনাদের সংখ্যাও এই রাজ্যে সর্বোচ্চ। বিজেপি’র জোটের কিছু শরিক দল যেমন জেডি(ইউ) ও রাম বিলাস পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)-কে নিয়ে সমস্যা ছিলো। আর শিবসেনার মতো ক্ষুদ্র দলের সর্বভারতীয় পর্যায়ে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা ছিলো না।
১৯৯৬ সালে জেডি(ইউ)’র সাবেক সংস্করণ সমতা পার্টি যখন এনডিএ-তে যোগ দেয় তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে আর্টিকেল ৩৭০, ইউনিফর্ম সিভিল কোড, রাম মন্দির, ইত্যাদি ইস্যুতে বিজেপি’র সঙ্গে তাদের মতপার্থক্য রয়েছে। এসব ইস্যুতে বর্তমান মোদি সরকারের নীতি সম্পূর্ণ আলাদা। এনডিএ-তে মেহবুবা মুফতি যখন একমাত্র মুসলিম মুখ তখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কী হয় তা এখন দেখার বিষয়। কারণ জেডি(ইউ) ও এলজিপি দুই দলই মুসলিম ভোট পেতে মরিয়া। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।