বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
১৯৩৪ ও ১৯৯০ সালে বিশ্বকাপের দু’আসরে খেলা মিসর এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ফুটবল মহাযজ্ঞে অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে মাঠে নামার আগে দেশটির তারকা ফরোয়ার্ড মোহাম্মেদ সালাহ’র কারণে তারা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কারণ প্রায় মাসখানেক আগে ইনজুরি আক্রান্ত হন সালাহ। স্বাভাবিকভাবেই তার এই ইনজুরি দু:শ্চিন্তায় ফেলে মিসরকে। আর এ দু:শ্চিন্তা মাথায় নিয়েই রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু করতে হচ্ছে আফ্রিকান দেশটিকে। আজ ‘এ’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মিশরের প্রতিপক্ষ উরুগুয়ে। যাদের দু’বার বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার রেকর্ড রয়েছে। রাশিয়ার একাতেরিনবার্গে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। ১৯৩০ ও ১৯৫০ সালে বিশ্বকাপ জয়ী উরুগুয়েকে ঘিরে মিসরের যতটা না তারচেয়ে বেশী দু:শ্চিন্তা সালাহ’কে নিয়ে।
গত মাসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুলের হয়ে খেলতে নেমে রিয়াল মাদ্রিদের অধিনায়ক সার্জিও রামোসের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে কাঁধে আঘাত পান সালাহ। তখন থেকেই তার বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। যদিও ইতোমধ্যে ইনজুরি কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। তবে তার ফিটনেস নিয়ে অনেকে দু:শ্চিতায় থাকলেও সালাহ নিজে আত্মবিশ্বাসী। আজকের ম্যাচে নিজের ফিটনেস নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সালাহ। শুধু তাই নয়, মিশরের কোচ কোচ হেক্টর কুপারও তাকে নিয়ে আশাবাদী। তিনি এই তারকা ফরোয়ার্ডকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য করেন। এই প্রথমবার বিশ্বকাপের কোন দলের হয়ে কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কুপার। মিসরের মূল ভরসা সালাহকে নিয়ে কুপার বলেন, ‘আমাদের জাতীয় দলটি শুধুমাত্র সালাহকে নিয়ে গঠিত নয়। সম্ভাব্য সেরা ফলাফল পাবার জন্য এখানে সব খেলোয়াড়ই একে অপরকে সহযোগিতা করে থাকে। বিশ্বকাপে এই প্রজন্মের একজন সেরা খেলোয়াড়কে দলে পেয়ে মিসর সত্যিকার অর্থেই অনেক সৌভাগ্যবান। কিন্তু আমাদের কৌশল শুধুমাত্র তাকে ঘিরেই নয়। সে ইনজুরি থেকে ফিরেছে। আমি আশাকরছি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই নিজের ফর্ম ফিরে পাবে সালাহ। গত কয়েকদিনের তুলনায় ফিটনেসের বেশ উন্নতিও হওয়ায় কাল (আজ) তার দলে থাকার ব্যপারে আমি আশাবাদী।’
এদিকে উরুগুয়ের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি বেশ স্বস্তিদায়ক ছিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের মুল পর্বে লড়াইয়ে নামার আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে তারা উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় পায়। এই নিয়ে চতুর্থবারের মত বিশ্বকাপে উরুগুয়ের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন অস্কার তাবারেজ। যে কারণে তার ওপর বাড়তি একটা চাপ ও প্রত্যাশা থাকছেই। গ্রুপের অন্যতম ফেবারিট দল হিসেবে উরুগুয়ের নক আউট পর্বে যাওয়াটাও অনেকটাই নিশ্চিত বলেই ধরে নিয়েছেন ফুটবলবোদ্ধারা। এই গ্রুপের বাকি দু’টি দল হলো সৌদি আরব ও স্বাগতিক রাশিয়া।
২০১০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেললেও গত বিশ্বকাপে শেষ ১৬ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল উরুগুয়েকে। অপেক্ষাকৃত সহজ গ্রুপে থাকলেও অধিনায়ক দিয়েগো গোডিন মনে করেন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভাল হলে পরে এগিয়ে যাবার আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। রাজধানী মন্টেভিডিও থেকে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে গোডিন বলেন, ‘উরুগুয়ের সমর্থকদের মতই আমরাও প্রথম ম্যাচে মিশরের চ্যালেঞ্জকে কাটিয়ে বিশ্বকাপে সামনে দিকে এগিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখছি। এ ম্যাচটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সকলের মনে এখন এই একটি ম্যাচ নিয়েই যত চিন্তা।’
ম্যাচকে সামনে রেখে মিশর যেমন তাদের তারকা ফরোয়ার্ড মোহাম্মেদ সালাহ’কে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তেমনি উরুগুয়েও দলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার লুকাস টোরেইরার ফর্মের দিকে চেয়ে আছে। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাত্র তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও এবারের সিরি-আ মৌসুমে সাম্পদোরিয়ার হয়ে দুর্দান্ত খেলেছেন তিনি। তাই ইতালিয়ান লিগে চার গোল করা এই মিডফিল্ডারের দিকে তাকিয়ে আছে উরুগুয়ে।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত আফ্রিকান কোন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হারেনি উরুগুয়ে। অপরদিকে বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখনো জয়ের দেখা পায়নি মিশর। এর আগে বিশ্বকাপে খেলা চার ম্যাচের মধ্যে দু’টিতে ড্র ও দ’ুটিতে হার রয়েছে তাদের। এবারের বিশ্বকাপের আফ্রিকান বাছাইপর্বে সব মিলিয়ে আট গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন সালাহ, যা একটি রেকর্ড। অন্যদিকে বিশ্বকাপে উরুগুয়ের করা শেষ ১৩ গোলের সাতটিতে সরাসরি যুক্ত লুইস সুয়ারেজ। যার মধ্যে পাঁচ গোল নিজে করেছেন এবং অন্য দু’টি করিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।