পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
চীন থেকে সংগ্রহ করা পাকিস্তানের এইচকিউ-৭বি স্বল্পপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
এই মুহূর্তে চীনের কাছ থেকে পাকিস্তানের তিনটি বড় আকারের ও গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের চালান পাইপলাইনের রয়েছে: ২০১৫ সালে আটটি এয়ার-ইনডিপেনডেন্ট প্রপালশন (এআইপি)-পাওয়ার্ড সাবমেরিন কেনার চুক্তি হয়; ২০১৭ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনী (পিএএফ) তার পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গিবিমান-প্রজেক্ট আযম-এ চীনের সহয়তা নিশ্চিত করে; এবং ২০১৮ সালে পাকিস্তান নৌ বাহিনী চীনের কাছ থেকে আরো দুটি টাইপ ০৫৪এ ফ্রিগেট কেনার চুক্তি করে, ২০২১ সালের মধ্যে এ ধরনের ফ্রিগেট সংখ্যা চারটিতে দাঁড়াবে।
আর্থিক টানাপড়েন, পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কে জটিলতা, অন্য সূত্র থেকে একই ধরনের প্রযুক্তি লাভে অসমর্থ্য হওয়া এবং সর্বোপরি বেইজিং ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত স্বার্থ (বা উদ্বেগের) মধ্যে মিল থাকায় পাকিস্তানের টিকে থাকার পাশাপাশি ভারতের অগ্রগতির বিপরীতে প্রচলিত সামর্থ্য বৃদ্ধির জন্য এসব সরঞ্জাম গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই সংগ্রহ প্রক্রিয়াটিকে শুধু বিকল্প প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কিছুও মনে করা যায়। প্রজেক্ট আযম-এর মাধ্যমে চীনের গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) তহবিল, শিল্প সামর্থ্য ও অন্যান্য গুণগত অগ্রগতি কাজে লাগাতে পারে পাকিস্তান।
প্রত্যেক দেশেরই একটি মূল সরবরাহকারী থাকে
বিশ্বের হাতে গোনা কয়েকটি দেশের কাছে ইঞ্জিন ও সেমিকন্ডাক্টরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি বা ইনপুটগুলো রয়েছে। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত হয়। ২০০০ সালের দিকে পাকিস্তান যখন পরবর্তী প্রজন্মের সাবমেরিন পেতে চাইলো তখন প্রশ্ন তোলা হলো পাকিস্তান যখন তার ‘করাচি শিপইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস’ (কেএসইডবিøউ) -এ অগোস্টা ৯০বি শ্রেণীর সাবমেরিন উৎপাদন করতে পারছে তখন কেন অন্যগুলো প্রয়োজন। পাকিস্তান পুরোপুরি তৈরির না করে (ট্রাংকি ম্যানুফেকচারিং) মূল প্রস্ততকারকদের (ওইএম) কাছ থেকে ইনপুটগুলো আমদানি করে কেএসইডবিøউ-এ স্থানীয়ভাবে অগোস্টা ৯০বি বা চীনের হাঙ্গর (টু) সাবমেরিন উৎপাদন করছে। তবে একবার বিদেশী সরবরাহ চেইনটি অচল হয়ে পড়লে (মূল বা পররাষ্ট্র সম্পর্কের কারণে) পুরো অস্ত্র ব্যবস্থাটিই অচল হয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
অন্যদিকে, বিশ্ব অস্ত্র বাজারে বাস্তবতা হলো বড় শক্তিগুলোসহ বেশিরভাগ দেশ অন্তত গুরুত্বপূর্ণ ইনপুটের ক্ষেত্রে একটি মূল সরবরাহকারীর উপর নির্ভর করে। তহবিল, গবেষণা সামর্থ্য, অবকাঠামো ও শিক্ষিত মানব সম্পদ মূলত যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও (স্বল্প পরিসরে) রাশিয়াকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যারা প্রতিটি পর্যায়ে সত্যিকারের ট্রাংকি মেনুফেকচারিং বজায় রাখতে পারে। ফ্রান্সেরও দেশীয় সামর্থ্য উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইটালি, স্পেন, বেলজিয়ামসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের অংশীদার করতে চায় অথবা সেখান থেকে সংগ্রহ করে।
তাই একটি মূল সরবরাহকারীর উপর পাকিস্তানের নির্ভর করায় বিস্ময়ের কিছু নেই। আসলে একটি শীর্ষ শিল্প শক্তি হিসেবে চীনের উত্থানের কারণে পাকিস্তান তার সাপ্লাই চ্যানেল যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপ থেকে চীনের দিকে সরিয়ে নিতে পেরেছে। এতে পশ্চিমাদের সরবরাহ ব্যবস্থায় তাৎক্ষণিক কোন জটিলতা তৈরি হলে তা থেকে পাকিস্তান রেহাই পাবে। ইসলামাবাদ চীনের কাছ থেকে সহনীয় মূল্যে সফিসটিকেটেড অস্ত্র-সম্ভার আমদানি করতে পারছে।
নিশ্চিতভাবে পাকিস্তানের উপর চীনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে চীন চাইলে পাকিস্তানের প্রচলিত ও পারমাণবিক প্রতিরোধক সামর্থ্য বদলে দিতে পারে। বহু দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রও এটা চেয়েছে। তবে পাকিস্তানকে সামরিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পথে চীন বাধা দিতে চায় বলে মনে হয়না। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে বরং পাকিস্তানকে আরো শক্তিশালী করার দিকেই মনযোগী হতে পারে বেইজিং। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।