Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যার হার কেন বাড়ছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যার হার সতেরো বছরে ৩০ শতাংশ বেড়েছে। সরকারের নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন এমন এক সময় প্রকাশ করা হলো, যখন ডিজাইনার কেট স্পেড এবং তারকা শেফ এন্থনি বুরদিন-এর আত্মহত্যার ঘটনা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। গবেষণাটি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বা সিডিসি। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সতেরো বছরে আত্মহত্যার হার এবং পরিস্থিতি কি দাঁড়িয়েছে, এর চিত্র উঠে এসেছে গবেষণা প্রতিবেদনে। তাতে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী আত্মহত্যার হার বেড়েছে। বলা যায়, এক লাখ মার্কিনির মধ্যে ১৬ জন আত্মহত্যা করছেন। ২০১৬ সালে প্রায় ৪৫ হাজার মার্কিনি আত্মহত্যা করেছেন। সব বয়সের নারী পুরুষ, সব গোষ্ঠী এবং নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যেই আত্মহত্যার হার বেড়েছে বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদন তৈরির সাথে জড়িত অন্যতম একজন গবেষক ড. দেবোরা স্টোন বিবিসিকে বলেছেন, তাদের গবেষণায় অনেকটা সময় ধরে তারা আত্মহত্যা বৃদ্ধির হার অনুসরণ করেছেন। তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলোতে পরিস্থিতি কী, সেটাও তুলে এনেছি আমাদের গবেষণায়। ২৫টি রাজ্যে আত্মহত্যার হার ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, এটি আমাদের গবেষণায় নতুন আবিষ্কার বলা যায়। আত্মহত্যার হার বৃদ্ধির পিছনে একক কোন কারণ নেই বলে গবেষকরা বলছেন। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক রকম বিষয় কাজ করে আত্মহত্যা করার ক্ষেত্রে। তবে গবেষক ড. দেবোরা স্টোন বলেছেন, বেশিরভাগ আত্মহত্যার ঘটনার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়গুলো এবং অর্থনৈতিক সমস্যাকে তারা বড় কারণ হিসেবে পেয়েছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমের রাজ্য, যেগুলোতে এখনও গ্রামীণ পরিবেশ রয়েছে, সেই রাজগুলোতে অতীতের মতো এখনও আত্মহত্যার হার বেড়ে চলছে। এই রাজ্যগুলোতে অর্থনৈতিক সমস্যা আছে। আর এগুলোতে বসবাসকারী মানুষ এখনও অনেকটা একঘরে হয়ে রয়েছে। আত্মহত্যার ক্ষেত্রে মানসিক অসুস্থতার কী কোনো যোগসূত্র আছে? সিডিসি গবেষণায় দেখা গেছে, আত্মহত্যার ৫৪ শতাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে মানসিক অসুস্থতার কোনো বিষয় ছিল না। ন্যাশনাল অ্যাকশন অ্যালায়েন্স ফর সুইসাইড প্রিভেনশন এর ড. জেরি রিদ বলেছেন, গুরুতর অসুস্থতা এবং আত্মঘাতী আচরণের মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে বলে তিনি মনে করেন। তবে মানসিক অসুস্থতাই একমাত্র কারণ নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তার বক্তব্য হচ্ছে, অর্থনৈতিক অবস্থার পরিণতি এবং জীবনধারণের অবনতির সুযোগ মানুষকে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে ফেলে। আরেকজন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সিরেল বলেছেন, অনেকে মানুষের যাদের মানসিক অসুস্থতা চিহ্নিত হয়েছে তারা কিন্তু আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়নি। সিরেল আরো বলেন, এটা সরলীকরণ করা যাবে না যে, মানসিক অসুস্থতার কারণেই আত্মহত্যা করছে। বিশেষজ্ঞরা সাধারণ মানুষকে শিক্ষা দেয়া বা তাদের সচেতন করার কর্মসূচি নেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। মানুষ কোনো জটিল সমস্যায় পড়লে কিভাবে তা সামাল দেয়া যায় অথবা আবেগকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে? এসব প্রশ্নে শিক্ষা কর্মসূচি নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ড. রিদ বলেছেন, কিভাবে পড়তে হবে বা লিখতে হবে, এসব আমরা শিক্ষা নেই। সেখানে মানুষকে তার নিজের সঙ্কট সামাল দেয়ার শিক্ষা আমরা অবশ্যই দিতে পারি। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ