পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব তার আপন গতিতে এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিকটির সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন। তিনি বলেন, ইনকিলাব শুধু একটি দৈনিক পত্রিকা নয়; একটি আদর্শ, দর্শন। দেশের সংবাদমাধ্যম জগতে ইনকিলাব ব্যাপক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। আগামী দিনেও ইনকিলাব তার স্বকীয়তা বজায় রেখে সামনের দিকে আপন গতিতে এগিয়ে যাবে এবং আরো শক্তিশালী হবে। গতকাল (সোমবার) দৈনিক ইনকিলাবের ৩৩তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে ইনকিলাব ভবনে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের মিডিয়া জগতের অত্যন্ত প্রভাবশালী পত্রিকাটির ৩৩তম বর্ষে পদার্পণ এবং সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন। তিনি বলেন, আমার জন্য আজকে একটা সৌভাগ্যের দিন। এ জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। কত পত্রিকা আসছে কত পত্রিকা আবার কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহর রহমতে আমি ৩৩ বছর ধরে এই ভবনে। ভবনটির গোরাপত্তন আমার হাত ধরেই হয়েছে। সেখানে আমাকে আল্লাহ-তাআলা সম্মানের সাথে একটা ঠিকানায় এতটা বছর বসে থাকার তৌফিক দিয়েছেন। ৩৩ বছর অনেক মানুষের হায়াতও থাকে না, সংসারও টিকে না।
অনেক কিছুই হয় না। কিন্তু ৩৩ বছর আলহামদুলিল্লাহ এক ঠিকানায় বসে একটা কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আমার সাথে আরও কতগুলো প্রবীণ মানুষ রয়েছেন যাদেরকে নিয়ে ভবিষ্যতে লেখা হবে। যারা একেকজন একেকটি স্তম্ভ। তারা নিজেরাই পত্রিকার সবকিছু করতে পারে। আমরা সুখে-দুঃখে সবাই মিলে একটি পরিবার হিসেবে সব সময় একসাথে থেকেছি কাজ করেছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইনকিলাব তার অভিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ইনকিলাব শুধু একটি সংবাদপত্রই নয়। ইনকিলাব সংবাদপত্র শিল্পে নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে। পত্রিকার পাতায় পাতায় এনেছে নতুনত্ব। আমরা অন্যদের কাছ থেকে কিছু নেয়নি। আমরা এমন অনেক ট্রেন্ড সৃষ্টি করছি যা অন্যরা এখন অনুসরণ করছে, অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। আজকে যেসমস্ত কাগজগুলি দেশে ইসলামী সমাজ, ইসলামের প্রভাব বা এই রাষ্ট্রের মধ্যে মুসলিম সমাজের প্রভাব যারা কমিয়ে ফেলতে চান। যারা লাখো কোটি টাকা ব্যয় করে টেলিভিশন-পত্রিকা অনেক রকম কিছু ৩০-৪০ বছর থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা কিন্তু তাদেরটা নেইনি। ইনকিলাব যেই ধারনার সূচনা করেছে, নামাজের সময়সূচি, রমজান কেন্দ্রীক ব্যাপক আলোচনা, বিভিন্ন ধরণের প্রশ্নত্তোর, ইসলামী জীবন সম্পন্ধে আরও অনেক কিছুকে বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো জন্য এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এই কাজটা ইনকিলাব অতীতে করেছে, এখনো করছে। ইনকিলাবের প্রভাবে সকলে এই ধারাটা বজায় রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও দৈনিক ইনকিলাব অনেক প্রভাব রাখে। ইনকিলাবের এক মিলিয়ন (১০ লাখ) ফেইসবুক ফলোয়ার অন্যান্য কাগজের ১০ মিলিয়ন (এক কোটি) ফেইসবুক ফলোয়ারের থেকেও অনেক বেশি প্রভাবশালী। কারণ ইনকিলাবের ফেইসবুকে কোন পাজল নাই, কোন রসালো আলোচনা নাই, রগরগে ছবি নাই। এখানে ফেইসবুকে যেই পাঠকগুলো আছে তারা সিরিয়াস রিডার। তারা সিরিয়ার কোন বিষয়ে পড়া এবং বোঝার জন্য ইনকিলাবের সাথে রয়েছে। ইনকিলাবের ১০ লাখ মাইন্ডই ১০ লাখ চিন্তাশীল মানুষ। এরাই বাংলাদেশের মূলধারার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে।
গণমাধ্যমে সঙ্কট তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে প্রবীণ এই সম্পাদক বলেন, এখন অনেক কাগজ বড় বড় সাংবাদিক নিয়ে জন্ম হচ্ছে কিন্তু ছয় মাসের মধ্যেই ট্রায়াল এডিশনের আগেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই বছরের মধ্যে আরও কয়েকটা বন্ধ হবে। বড় বড় কাগজগুলো শুধু বাংলাদেশ না আমেরিকা, ইউরোপেও প্রিন্ট মিডিয়া, টেলিভিশনের অবস্থা হতাশার গল্প বলে, বন্ধের গল্প বলে। কিন্তু দৈনিক ইনকিলাব ইনশাআল্লাহ আমরা যেভাবেই আছি আল্লাহর অশেষ রহমতে এটি আগামী দিনে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। অর্থনৈতিক অবস্থা মজবুত হবে। যারা কৃত্রিম পয়সায়, হারাম পয়সায়, রাজনৈতিক প্রভাবে বড় বড় প্রাসাদ করছে এগুলো অনেক কিছুই থাকবে না।
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শাব্বির আহমদ মোমতাজী বলেন, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন ও ইনকিলাব একই পরিবারের সদস্যের মতো। ইনকিলাব সারাদেশে পাঠকদের মধ্যে এমন একটি অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে যে, এটি না পড়লে অনেকের ঘুম হয় না। এখানে এমন অনেক তথ্য পাওয়া যায় যা অন্য কোন পত্রিকায় দেখা যায় না।
সহকারী সম্পাদক ওবায়দুর রহমান খান নদভী বলেন, মানুষের চিন্তাধারাকে পাল্টে দেয়ার জন্য, পরিবর্তন করার জন্য ইনকিলাব প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। নামাজের সময়, কুরআন হাদীসের বাণী, মুসলিম জাতির আন্তর্জাতিক সংবাদ, ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য ইনকিলাবের পৃথক পাতা এখন সকলের কাছে অনুসরণীয়।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ফিচার সম্পাদক ভাষা সৈনিক অধ্যাপক আব্দুল গফুর, সহকারী সম্পাদক মোবায়েদুর রহমান, সহকারী সম্পাদক মুন্সী আব্দুল মান্নান, সহকারী সম্পাদক একেএম ফজলুর রহমান মুন্সী, চিফ নিউজ কর্ডিনেটর এস এম হাফিজুর রহমান, বার্তা সম্পাদক সাকির আহমদ, ক্রিড়া সম্পাদক রেজাউর রহমান সোহাগ, পরিচালক আব্দুল কাদের, চিফ রিপোর্টার রফিক মুহাম্মদ, আইটি ইনচার্জ সৈয়দ এ রহমান গালিবসহ ইনকিলাবের সকল সাংবাদিক কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শুভানুধ্যায়ী ইফতার ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।