যদি স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে চান তাহলে পালিয়ে আসা পুরো ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমকে গ্রহণ করতে চায় মিয়ানমার। শনিবার এ কথা বলেছেন মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা থাউং তুন। সিঙ্গাপুরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক এক সম্মেলনে সাংগ্রি-লা’তে বক্তব্য দিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ওই সম্মেলনে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, জাতিসংঘের ‘রেসপনসিবিলিট টু প্রটেক্ট’ (আরটুপি) ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে রোহিঙ্গা সঙ্কট বিবেচনা করা যাবে কিনা। এর জবাবে তিনি ওই কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে আরো বলা হয়, তথাকথিত আরটুপি ফ্রেমওয়ার্ক অনুমোদিত হয় ‘২০০৫ ইউএন ওয়ার্ল্ড সামিটে’। এর অধীনে জাতিসমুহ তার নিজস্ব জনগণকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিনিধন, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ থেকে রক্ষা করতে সম্মতি দিয়েছে। একই সঙ্গে সম্মিলিতভাবে অন্যদেরকে এই দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত ও সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় তারা। এমন ইস্যুতে থাউং তুন বলেন, যদি আপনারা স্বেচ্ছায় ভিত্তিতে ৭ লাখ মানুষকে ফেরত পাঠাতে পারেন তাহলে আমরা তাদেরকে গ্রহণ করতে রাজি আছি। এ সময় তিনি জাতি নিধন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, এটাকে কি জাতি নিধন বলা যাবে? এখন আর কোনো লড়াই চলছে না। তাই এটা কোনো যুদ্ধাপরাধ নয়। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এটাকে বিবেটনায় নেয়া যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের সুস্পষ্ট প্রমাণ প্রয়োজন। এমন গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হতে হবে। এ অভিযোগকে হালকাভাবে দেখা উচিত হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ শে আগস্ট সৃষ্ট নৃশংসতা থেকে জীবন বাঁচাতে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাদের ওপর সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধরা গণধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ সহ সব রকম অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। এসব বিষয়কে প্রামাণ্য হিসেবে তুলে ধরেছে বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন। একে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ। রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত যাওয়া নিয়ে জানুয়ারিতে একটি প্রত্যাবর্তন বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, দু’বছরের মধ্যে প্রত্যাবর্তন সম্পন্ন হওয়ার কথা।