পবিত্র ঈদুল ফিতরে বাড়ি যেতে রেলপথের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আর এ অগ্রিম টিকিট নেয়ার জন্য রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের প্রচন্ড ভিড় তৈরি হয়েছে। গতকাল সকাল ৮টা থেকে টিকিট প্রদান শুরু হলেও ১২-১৫ ঘণ্টা আগেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শত শত যাত্রী।
শুক্রবার সকাল থেকে ১০ জুনের টিকিট দেয়া হয়। এ ছাড়া শনিবার ১১ জুনের, রোববার ১২, সোমবার ১৩, মঙ্গলবার ১৪ এবং বুধবার ১৫ জুনের অগ্রিম টিকিট দেয়া হবে। আর ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরতি যাত্রীদের ১০ জুন দেয়া হবে ১৯ জুনের, ১১ জুন দেওয়া হবে ২০ জুনের, ১২ জুন দেয়া হবে ২১ জুনের, ১৩ জুন দেয়া হবে ২২ জুনের, ১৪ জুন দেয়া হবে ২৩ জুনের এবং ১৫ জুন দেওয়া হবে ২৪ জুনের ফিরতি টিকিট।
অপেক্ষমাণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অগ্রিম টিকিট পেতে তাদের অনেকেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগেই স্টেশনে হাজির হয়েছেন। ফলে লাইনে দাঁড়িয়েই ইফতার ও সেহরি সেরেছেন তারা। টিকিট কিনতে আসা আহসান হাবিব নামে একজন বলেন, নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা, পরিবারে সাথে ঈদ করার মজাটাই আলাদা। তাই দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে আছি টিকিট কেনার জন্যে।
এদিকে সুশৃঙ্খলভাবে অগ্রিম টিকিট দিতে স্টেশনে দায়িত্ব পালন করছে রেলপুলিশ। এ ছাড়া র‌্যাবের একটি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, আমরা ঈদ উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট বিক্রির সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। প্রায় ২৪টি কাউন্টার থেকে একযোগে টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। টিকিট কালোবাজারি রোধে পুরো স্টেশনের সঙ্গে কাউন্টারের ভেতর ও বাইরে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপনা করা হয়েছে।
এর আগে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, এবার ঈদে মোট সাত জোড়া বিশেষ ট্রেন থাকছে। ঈদের আগে পাঁচ দিন ও পরে সাত দিন বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। রেলে এই ১২ দিন কোনো বন্ধ থাকবে না। এই দিনগুলোতে সারা দেশের সব রুটেই ট্রেন চলাচল করবে।
তিনি আরও জানান, ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে যে ৩১টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে, সেসবের টিকিট সংখ্যা হবে ২২ হাজার। রেলপথের একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন।
চট্টগ্রামে রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু
চট্টগ্রাম ব্যুরো : অগ্রিম টিকিট বিক্রির গতকাল প্রথম দিনে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে ছিল মানুষের ভিড়। ঈদ সামনে রেখে নয়টি আন্তঃনগর ও একটি এক্সপ্রেস (চট্টলা) ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হয় স্টেশনের ১০টি কাউন্টারে। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো হচ্ছে-সুবর্ণ, তূর্ণা, গোধূলি, মেঘনা, মহানগর, সোনার বাংলা, পাহাড়ীকা, উদয়ন এবং বিজয়। সকাল আটটায় বিক্রি শুরু হয় ১০ জুনের টিকিট। স্বাচ্ছন্দ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিতে দেখা গেছে যাত্রীদের। ঈদের কয়েক দিন আগের ট্রেনগুলোর জন্য টিকেট নিতে আসা যাত্রীর ভিড় বাড়বে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। স্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ জানান, ১০টি ট্রেন মিলে ১০ জুনের মোট টিকেট আছে ৬ হাজার ৯৩৭টি। এর মধ্যে কাউন্টারে পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৯৭১টি। অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে ২৫ শতাংশ। ৫ শতাংশ ভিআইপি এবং ৫ শতাংশ স্টাফ কোটা। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়ে যায়। এবারও ঈদে প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি লাগানো হবে। আজ শনিবার থেকে ৬ জুন পর্যন্ত যথাক্রমে ১১ থেকে ১৫ জুনে যাত্রার টিকেট বিক্রি হবে কাউন্টারে।