Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরও তিন মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা আটক ২

গিয়াস কাদেরের বাসভবনে হামলা ও মামলার নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি

| প্রকাশের সময় : ১ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : দলের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর চট্টগ্রামের বাসভবনে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলা ও তার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়েরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপিবিএনপি নেতারা গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, মিথ্যা অভিযোগে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে হামলা চালিয়ে তার বাসভবন গুডস হিলে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট চালিয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় মামলা না নিয়ে উল্টো গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে কথিত হুমকি ও কটূক্তির অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে গতকাল আরও তিনটি মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের দায়েরকৃত তিনটি মামলার একটিতে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহামুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান ও মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বেগম রোজী কবির, গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক ফজু, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, মহানগর বিএনপিসাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফাভাবে করার মাধ্যমে দেশে আবারো একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করতেই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে লাগাতার গ্রেফতার ও নির্যাতন নিপীড়ন করে চলেছে সরকার। গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা এবং তার বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা তারই ধারাবাহিকতা। এ নির্যাতন ক্রমাগত তীব্র থেকে তীব্রতর করা হচ্ছে। সরকারের নির্দয়-নিষ্ঠুর আচরণে এটি সুস্পষ্ট তারা জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। আর এজন্য গণতন্ত্রকে নিঃশেষ করে ফেলছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে সরকার অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক পথে হাঁটছে। জনগণকে ভয় দেখাতে সরকার সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। জনগণকে ভয় পাইয়ে দিতে নিষ্ঠুরতার শেষ সীমানা অতিক্রম করেছে।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বাসায় পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হয়েছে অভিযোগ করে তারা বলেন, এই ঘটনায় মামলা না নিয়ে উল্টো তার বিরুদ্ধে ৪টি মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করিয়েছে। দেশে আওয়ামী একদলীয় শাসন চলছে বলেই এটা সম্ভব হচ্ছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাবন্দী সম্পূর্ণ নির্দোষ বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনকে দমন করার উদ্দেশেই বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন চালানো হচ্ছে এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে।
এদিকে ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মুহুরীর গতকাল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আ স ম শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। বাদীর আইনজীবী সমীর দাশগুপ্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেওয়া, উস্কানিমূলক বক্তব্য দেওয়া এবং তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করার অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আল ইমরান খানের আদালতে আরেকটি মামলা করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি। রনির আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তা মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা আকরামুল হক বাদি হয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরও একটি মামলা করেন। বুধবার একই অভিযোগে ফটিকছড়ি থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি দায়ের করেন উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জামালা উদ্দিন।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা সদরে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গিয়াস কাদের প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে বক্তব্য দেয়া হয়েছে বলে এসব মামলায় অভিযোগ করা হয়। একই অভিযোগে বুধবার সন্ধ্যার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার পৈত্রিক বাড়ি নগরীর গুডস হিলে হামলা চালিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের হামলায় ৮টি গাড়ি, বাসার দরজা জানালা, গার্ড রুম, অফিস রুমসহ বাড়ির বারান্দায় রাখায় আসবাবপত্র ভাঙচুর হয়। আধা ঘণ্টা তান্ডব চালালেও পুলিশ ছিল নিরব দর্শক। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশকে হামলার খবর জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। থানায় কোন মামলাও নেইনি। গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী এনামুল হক জানান, হামলার ঘটনায় এজাহার নিয়ে বাড়ির কেয়ারটেকার থানায় গেলে পুলিশ তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে। থানায় মামলা না নিলে আদালতে মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
অপরদিকে ফটিকছড়িতে উপজেলা বিএনপির নেতা মনছুর আলম চৌধুরী (৪৭) ও নুরুল ইসলাম মেম্বারকে (৬০) ছাত্রলীগের দায়েরকৃত মামলা গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে পুলিশ বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসাইন বলেন, মামলায় ওই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আটক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ