Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যৌন নিপীড়নবিরোধী আইন প্রণয়ন করছে সউদী আরব

পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ৮০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৮, ১০:০১ পিএম

প্রথমবারের মতো যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সউদী আরব। যে কোনও ধরনের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে নতুন ওই আইন প্রণীত হতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার দেশটির মন্ত্রিসভায় (শূরা কাউন্সিল) অনুমোদন পাওয়া ওই খসড়া আইনে যৌন নিপীড়নের সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও ৮০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এখন সউদী বাদশাহ এ নিয়ে ডিক্রি জারি করলে খসড়া আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে। কট্টর রক্ষণশীল ধারার দেশটিতে যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের চলমান কথিত সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। উল্লেখ্য, বিপুল নারী অধিকারকর্মীকে আটকের ঘটনা চলমান থাকায় যুবরাজের সেই সংস্কার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, যৌন হয়রানি বন্ধে আইন প্রণয়নে সউদী আরবের শূরা কাউন্সিলের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়াটির অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া এই খসড়া আইনে যৌন হয়রানির জন্য পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও ৮০ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এর আইনে সেখানে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপের সুযোগ ছিল না। শূরা কাউন্সিলের সদস্য লতিফা আল সালানকে উদ্ধৃত করে দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, খসড়া বিলটি সউদী আরবের আইনের ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। তিনি আরও বলেন, এটার মাধ্যমে একটি বড় আইনি শূন্যতা পূরণ হলো। যৌন হয়রানি রোধে এটা একটা বড় উদ্যোগ। ২০৩০ সাল নাগাদ তেল নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অর্থনীতি বহুমুখী করতে সউদী আরবে পরিচালিত হচ্ছে সংস্কার উদ্যোগ। সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেন। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত বছর নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সউদী আরব যা আগামী ২৪ জুন থেকে কার্যকর হবে। তবে স¤প্রতি ১১ জন মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতারের ঘটনায় সউদী যুবরাজের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নারীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করে যাওয়া সুপরিচিত কর্মীরাও রয়েছেন। তারা দীর্ঘ দিন ধরে নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার ও রক্ষণশীল দেশটির পুরুষ অভিভাবকত্ব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন। সউদী সরকারের দাবি, বিদেশি শক্তির সঙ্গে সন্দেহমূলক যোগাযোগ চালানো জন্য এসব আন্দোলনকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শত্রুদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া ও দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সউদী সরকার উচ্চাকাক্সক্ষী পরিকল্পনা ঘোষণা করলেও এখনও দেশটিতে নারীদের জন্য অন্যতম বড় বড় কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এখনও সউদী আরবে নারীদের পুরুষ অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা প্রচলিত। আইন অনুযায়ী নারীদের পড়াশুনা, ভ্রমণ বা অন্য কোনও কাজের জন্য বাবা, স্বামী বা ভাইয়ের অনুমতির দরকার পড়ে। সউদী অ্যাকটিভিস্টদের দাবি নারী অধিকারের লড়াইয়ের জন্য এই অভিভাবকত্ব একটি বড় ইস্যু। ২০১১ সাল থেকে প্রায় ৩০ জন অ্যাকটিভিস্ট ও বিদ্রোহীর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে সউদী আদালত। এইচআরডবি্লউ-এর মতে এদের অনেককেই ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মিডল ইস্ট আই।

রোহিঙ্গা নিধন



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী আরব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ