Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারে অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে

অ্যামনেস্টির সেনাবান্ধব প্রতিবেদন প্রকাশের পর বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহারে বিষোদ্গার করছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনের কারণে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তার পরও রাখাইনে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। অ্যামনেস্টি মিয়ানমারের সেনাদের পক্ষে যায় এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা নতুন করে হত্যাযজ্ঞের শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন। আর আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনও অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনের কারণে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে অ্যামনেস্টির ওই প্রতিবেদন নিয়ে মিয়ানমারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাঙ্গাপ্রবণ উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অ্যামনেস্টির বিশেষ প্রতিবেদনকে পুঁজি করে মিয়ানমারের সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ নাগরিকরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহারে বিষোদগার করছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা অ্যাকটিভিস্টরা অভিযোগ করেছেন, অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনটি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হয়ে করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা কুইন্ট জানিয়েছে, অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে রোহিঙ্গা অ্যাকটিভিস্টরা। তারা সংস্থাটির এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যরা অবশ্য মনে করছেন, যতই ত্রুটিপূর্ণ হোক না কেন, পুরো রাখাইন সংকটে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের পূর্ণ তদন্তে এ প্রতিবেদনও যুক্ত হবে। অ্যামনেস্টি দাবি করেছে, সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে তারা এ বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে সমাধানে আসতে পেরেছে যে আরসা যোদ্ধারা ওই হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী। এ প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিভিন্ন রোহিঙ্গা অ্যাডভোকেসি গ্রুপকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে কেবল আরসাকে দায়ী করা হয়নি, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে বলে মনে করেন মানবাধিকারকর্মীরা। অথচ এর রোহিঙ্গারাই কয়েক দশক ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকারে পরিণত হয়েছেন। তাদের ওপর দিয়ে গণহত্যা, ধর্ষণ, অঙ্গহানি, বসতবাড়ি ও ক্ষেতের ফসল ভস্মীভূত করে দেয়াসহ হেন কোনো নিপীড়ন নেই, যেটা করা হয়নি। রোহিঙ্গাদের ভয় হচ্ছে, অ্যামনেস্টির এই উসকানিমূলক প্রতিবেদন রাখাইনে অবস্থান করা নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের জীবনকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলবে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে রাখাইন রাজ্যে হিন্দু সমপ্রদায়ের ওপর ব্যাপক হত্যাকান্ডের বিষয়টি আলোকপাত করেছে অ্যামনেস্টি। সংস্থাটির দাবি, গত বছরের আগস্টে শিশুসহ অন্তত ৯৯ হিন্দুকে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি-আরসা। অ্যামনেস্টি বলছে, রাখাইনের মধ্যে ও সীমান্ত এলাকায় তদন্ত করে তারা হিন্দুদের নির্বিচারে হত্যাকান্ডের তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে, যাতে আরও হিন্দু গ্রামবাসীকে অপহরণ ও আইনবহির্ভূত হত্যাকান্ডের ঘটনাও ঘটে থাকতে পারে। গত বছরের আগস্টে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকিতে আরসার হামলার জের ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল অভিযান শুরু করে। ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ