২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
বাংলা নাম তরমুজ । ইংরেজি নাম : Water melon. বৈজ্ঞানিক নাম: Citrullus vulgaris. তরমুজ গ্রীষ্মকালের স্বল্পসময়ের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় ফল। গুণে মানে তরমুজ সবার প্রিয়। শীতে বীজ বপন করা হলে গ্রীষ্মে ফল পাকে এবং খাওয়ার উপযোগী হয়। আফ্রিকার তাগালগে সর্বপ্রথম এই ফল আবিস্কৃত হয়। যেখানে এ ফল চধশধিহ নামে পরিচিত। সাধারণত মরুর দেশে এই ফল বেশি খাওয়া হয়। সেখানে এর শাঁস দিয়ে আচার তৈরি হয়। আবার পাকা তরজুমের কালো বিচি রোদে শুকিয়ে ভেষজ ওষুধ তৈরি করা হয়। তরমুজ ক্যালসিয়াম ও লৌহ সমৃদ্ধ পুষ্টিকর ফল। তরমুজ বহু জাতের হয়। তবে বাংলাদেশে মাত্র দু-তিন জাতের তরমুজ উৎপাদন করা হয়। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তরমুজের বীজ রোপন করা হয়। তবে গ্রীষ্মের চাহিদা অনুযায়ী এবং ভালো দাম পাওয়ার আশায় আগস্টের প্রথম দিকেও বীজ বপন করা হয়। তরমুজের চাষ কিছুটা সহজ । মাদা করে বীজ বপন করে চারা বের হওয়ার সাথে সাথে সার ও নিয়মিত পানি সেচ দিলেই হয়। দো-আঁশ মাটিতে তরমুজ ভালো হয়।
পুষ্টি তালিকা : তরমুজে প্রতি ১০০ গ্রামে আছে-জলীয় অংশ ৯৫.৮, ক্যালসিয়াম ১১ মিগ্রা, মোট খনিজ ০.৩, লৌহ ৭.৯ মিগ্রা, আঁশ ০.২, ক্যারোটিন (মাইক্রোগ্রাম) ০, খাদ্যশক্তি (কিলোক্যালরি) ১৬, ভিটামিন বি-১ ০, আমিষ ০.২, ভিটামিন ০.০৪ মিগ্রা, চর্বি ০.২, ভিটামিন সি ১ মিগ্রা, শর্করা ৩.৩ মিগ্রা।
ভেষজ গুণ : * তরমুজের রস মিষ্টি, শীতগুণ সম্পন্ন শক্তিদায়ক। তরমুজ শরীর ঠান্ডা রাখে ক্লান্তি দূর করে।
* শাঁস খেলে লিভারের উপকার হয়, পিলে কমায়। পেট পরিস্কার রাখে, হজম শক্তি বাড়ায়। পেটের অসুখ এবং আমাশয়ে তরমুজ বেশ উপকারী।
* আমাশার রোগী আদা জিরে ভাজা গুঁড়ো গোলমরিচ এবং লবণ মিশিয়ে তরমুজ খেলে উপকার পাবেন।
* তরমুজের শরবত শরীরকে ঠান্ডা ও তাজা রাখে। নিয়মিত মধু মিশিয়ে তরমুজ খাওয়া ভালো। তরমুজের রস খেলে শরীরের লাবণ্য বজায় রাখে, দীর্ঘদিন বেশ চনমনে থাকা যায়। * অর্শ রোগীদের পক্ষে তরমুজ খাওয়া বেশ ভালো। তরমুজের রস খেলে প্রস্রাব পরিস্কার হয়।
* পাকা তরমুজের এক কাপ রসে একটু জিরে গুঁড়ো ও একটু চিনি মিশিয়ে খেলে হৃদরোগীরা উপকার পাবেন। টাইফয়েড জ্বরে আধাপাকা বা কাঁচা তরমুজের রস দুই চামচ দিনে তিন চার বার করে দুই দিন খাওয়ালেই বেশ উপকার পাওয়া যায়।
* দীর্ঘদিন অপুষ্টিতে ভূগতে থাকলে তরমুজের শাঁসের শরবত বেশ উপকারী। কাঁচা তরমুজের শাঁস কুচিয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর শুকনো শাঁস গুঁড়ো করতে হবে। এক কাপ দুধে এক চামচ গুড় গুলে নিয়ে সকাল-বিকাল খেলে দশ বারো দিনেই ফল পাওয়া যাবে। গবেষণার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় গবেষকরা গবেষণায় দেখেছেন, তরমুজ নিয়মিত খেলে হার্টের সুরক্ষা হয়। রক্তনালীতে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। শরীর জুরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। হৃদরোগীরা নিয়মিত তরমুজ খেলে হৃদরোগ হ্রাস পায়। উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান হয়। ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়। শরীর ঠান্ডা থাকে। হজমশক্তি বাড়ে। সুনিদ্রা হয়। যারা মোটাসোটা তাদের ওজন কমে। রোদে ঘুরে সানস্ট্রোক হলে বা জ্বর এলে তরমুজের শরবত খেলে দ্রæত কাজ দেয়। তবে এই ফলটি আমাদের দেশে স্বল্প সময়ের জন্য পাওয়া গেলেও বিশেষ পরিচর্যায় সারা বছর চাষ করা যায়।
-ডা: মাও: লোকমান হেকিম
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।