২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
প্রতি বছর ৭ এপ্রিল বিশ্ব ব্যাপী স্বাস্থ্য দিবস হিসাবে উদযাপিত হয়ে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডড়ৎষফ ঐবধষঃয ঙৎমধহরুধঃরড়হ) - এর উদ্যোগে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সর্বত্র সরকারী ও বেসরকারীভাবে দিবসটি উদযাপন করা হয়। দিবসটির মূল লক্ষ্য সকল মানুষের সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং সে উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড ত্বরানিত করে এবং জনগণকে সচেতন করে বলিষ্ট পদক্ষেপ রচনা করা।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “সবার জন্য সুস্বাস্থ্য” (ঐবধষঃয ভড়ৎ অষষ)।
পৃথিবীর সব দেশেই নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার নিমিত্তে বিভিন্ন রকম নীতিমালা ও কর্মপদ্ধতি বিরাজমান। এটি প্রধানত ঐ নির্দিষ্ট রাষ্ট্রটির অর্থনৈতিক কাঠামো, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দক্ষতার উপর নির্ভরশীল। এতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো বিরাজমান। সামগ্রিকভাবে উন্নত দেশগুলোতে নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণের অনেক রকম কার্যকরী ও ফলপ্রসু কাঠামো প্রতিষ্ঠিত আছে। কিন্তু উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবার সামগ্রিক কাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। সারা পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা পেতে ব্যর্থ। কিন্তু এটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। প্রতিটি মানুষেরই তার প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাবার অধীকার আছে এবং যে কোন বিবেচনাতেই এর ব্যত্যয় করা সুযোগ নেই। কোন কোন দেশে বিত্তবানদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নাগালের মধ্যে আছে বা যারা স্বাস্থ্যসেবা কিনতে পারছে, তারাই আদর্শমানের স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্তের মানুষ অনেক সময়ই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পেতে ব্যর্থ হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জোরালোভাবে প্রস্তাব করছে যে, পৃথিবীর প্রতিটি রাষ্ট্র অবশ্যই সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নীতি (টহরাবৎংধষ ঐবধষঃয ঈড়াবৎধমব) চালু করবে। যাতে করে কোন একজন মানুষও স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবার ঝুঁকিতে না থাকে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পেতে গিয়ে বছরে বিভিন্ন দেশে কমপক্ষে এক কোটি মানুষ ১.৯ ডলারের কম উপার্জনক্ষম মানুষের বলয়ে ঢোকে, অর্থাৎ চরম দারিদ্রসীমার নীচে অবস্থান করতে বাধ্য হয়। গড়ে ৮ কোটি মানুষ তার প্রত্যহিক মোট খরচের ১২ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্যসেবার জন্য খরচ করে। এটি একটি ব্যাপক অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করে। উন্নত দেশগুলোর নাগরিকরা ব্যক্তিগতভাবে অথবা রাষ্ট্রীয় পলিসির কারণে এ স্বাস্থ্যসেবাটুকু নিতে সমর্থ হয়। কিন্তু এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা- এসব মহাদেশের রাষ্ট্রগুলো বা এদের জনগণ এসুবিধা দিতে বা পেতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা বলতে সকল মানুষের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বুঝায় যাতে করে তাকে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে না হয়। একই সাথে এটি সকল মানুষের বিনা মূল্যে চিকিৎসা প্রাপ্তির বিষয়টি বুঝাইনা । এটি আসলে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যসেবা নীতিকে এমনভাবে ঢেলে সাজাতে উৎসাহ দেই যাতে করে যে কোন রাষ্ট্র তার অর্থনৈতিক কাঠামোর মধ্যেই জনগণের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করে সকল মানুষের স্বাস্থ্যসেবা পাবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। এখানে স্বাস্থ্যসেবা বলতে শুধুমাত্র ওষুধ প্রদানকে বুঝাই না ঃ ক) বর্তমানের সকল রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, খ) সম্ভাব্য সকল অসংক্রামক রোগের প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থাপনা গ) মৌসুম ভিত্তিক সংক্রামক রোগের সময়চিত প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ঘ) জীবন ব্যাপী সকল মানুষের আদর্শ সু-স্বাস্থ্য বজায় রাখা সকল প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক কাঠামো তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা বুঝাই।
ডাঃ শাহজাদা সেলিম
সহকারী অধ্যাপক
এন্ডোক্রাইনোলজী বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়
ফোন ঃ ০১৮২৬ ২০০৬৬৫,
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।