নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : বলতে গেলে ব্যাটসম্যানদের রাজত্বেই কাটছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের গত দু’টি রাউন্ড। সেই রাজত্বের রাজদÐ হাতে তুলে নিয়েছিলেন তুষার ইমরান। তবে পঞ্চম রাউন্ডে এসে বিসিএলে ছড়ি ঘুরাচ্ছেন বোলাররা। মিরপুর কিংবা রাজশাহী দুই ভেন্যুতেই প্রথম দিনটি কেটেছে বোলারদের দখলে।
শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে এবার আর পারেনি তুষার, পারেনি তার দল দক্ষিণাঞ্চলও। বলতে গেলে তাদের থিতু হতে দেননি পেসার এবাদত ও স্পিনার মোশাররফ হোসেনরা। দক্ষিণাঞ্চলও মুখ থুবড়ে পড়েছে ৫৯.৫ ওভারে মাত্র ১৯১ রানেই। মধ্যাঞ্চলের হয়ে গতির ঝড়টা তোলেন এবাদত। আগের ম্যাচেই করেছিলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং (৬১ রানে ৪ উইকেট)। নিজের সেরাকে এবার আরেকটু ছাড়িয়ে গেলেন এবাদত। ৩২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দিনটি একান্তই নিজের করে নেন সিলেটের এই গতিতারকা। এই বয়সেও বল হাতে কম জাননি মোশাররফও। তার ঘূর্ণির আবর্তে একে একে ফিরেছেন ৪ ব্যাটসম্যান। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই আগের রাউন্ডে জোড়া সেঞ্চুরি করা তুষারকে মাহমুদউল্লাহর তালুবন্দী করেছেন মাত্র ১৪ রানে, শুরু করা মাত্রই জিয়াকে (১) ফেলেছেন এলবিডবিøউ’র ফাঁদে, নিজের বলে নীচু হয়ে রাজ্জাককে ক্যাচে বন্দী করেছেন এক রানে, একটি মাত্র চার মারা রাব্বীর উইকেট চূর্ণ করেছেন কুইকারে। দুজনের বোলিং নৈপুণ্যের পর মধ্যাঞ্চলকে ব্যাট হাতে এগিয়ে নিলেন সাদমান ইসলাম। প্রথম দিনেই তুলে ফেলেছে ২ উইকেটে ১৫৪ রান। আগের রাউন্ডে সেঞ্চুরি করা ওপেনার সাদমান এবার অপরাজিত ৬৬ রানে।
দক্ষিণাঞ্চলের এমন দুর্দশার ইঙ্গিত ছিল না দিনের শুরুতে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দলকে দারুণ শুরু এনে দেন এনামুল হক ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি। ৬৫ বলে দুজনে গড়েন ৬৪ রানের জুটি। তবে দুজনের কেউই বড় করতে পারেননি ইনিংস। দুজনকেই ফিরিয়েছেন এবাদত। ৮ চারে ৪০ রান করা ফজলে রাব্বি ফিরেছেন শুরুতে। একটু পর তাকে অনুসরণ করেছেন ২৩ রান করা এনামুল। তিনে নামা ইমরুল কায়েসের শুরুটাও ছিল ভালো। দুই ওপেনারের মতো তিনিও বড় করতে পারেননি ইনিংস। আউট হয়েছেন দুই ছক্কায় ২৬ রান করে। বাকিদের আসা-জাওয়ার মিছিলে দুইশ’ পেরুনো স্কোরও হয়নি দক্ষিণাঞ্চলের।
এদিকে, পঞ্চম রাউন্ডে এসে প্রথম বিসিএলে ম্যাচ পেল মিরপুর। সেটিও নতুন আঙ্গিকে। টানা আন্তর্জাতিক ম্যাচের ভীড়ে অনেকটাই শ্রী হারিয়েছিল হোম অব ক্রিকেট। উইকেটে নেই আগের সেই ধার, ঘাস হারিয়েছে সৌন্দর্য্য। হারানো নেই গৌরব ফিরিয়ে আনতে নতুন করে ইংল্যান্ড থেকে ঘাস এনে লাগানো হয়েছে, পরিচর্যার পর তা সবুজাভ রঙ ছাড়িয়েছে চারিদিকে। তবে সেই রঙ কিছুটা ¤øান করার চেষ্টায় নেমেছিল বেরসিক বৃষ্টি। গতকাল বৈশাখী এই অনাকাক্সিক্ষত অতিথির কারণে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুটা হয়েছে বৃষ্টির আধিপত্যে। তাতে অবশ্য খুব একটা বিঘিœত হতে পারেনি সবুজ নতুন হোম অব ক্রিকেটের খেলা। তবে যে ৬৫ ওভার খেলা হয়েছে তাতে ২০৪ রান তুলতেই উত্তরাঞ্চলের খোয়া গেছে ৫ উইকেট। পেস সহায়ক উইকেটে পেসারদের চমৎকারভাবে সামলালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নিলেন উত্তরাঞ্চলকে। তবে দুই অফ স্পিনার সোহাগ গাজী ও মোহাম্মদ আশরাফুল লড়াইয়ে রাখলেন পূর্বাঞ্চলকে। আশরাফুল ২২ রানে নেন ২ উইকেট। সোহাগ ২ উইকেট নেন ৬০ রানে। প্রথম দিন শেষে উত্তরাঞ্চলের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২০৪ রান। জহুরুল ইসলাম ৪৩ ও আরিফুল হক ১৭ রানে ব্যাট করছেন।
সবুজ ঘাসে ছাওয়া উইকেটে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া পূর্বাঞ্চলের প্রথম সাফল্য পেতে অপেক্ষা করতে হয় ত্রয়োদশ ওভার পর্যন্ত। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জুনায়েদ সিদ্দিককে বোল্ড করে ফেরান সোহাগ। শান্তর সঙ্গে দ্রæত জমে ওঠে ওপেনার মিজানুর রহমানের জুটি। সম্ভাবনাময় এই জুটিও ভাঙেন অফ স্পিনার সোহাগ। তাকে সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে আবু জায়েদের দারুণ ক্যাচে ফিরে যান মিজানুর। ৭৪ বলে খেলা তার ৪৬ রানের ইনিংসে চার ৫টি। লাঞ্চের আগে আর কোনো উইকেট হারায়নি উত্তরাঞ্চল। লাঞ্চ বিরতির শেষ দিকে বৃষ্টি নামলে লম্বা সময় খেলা বন্ধ থাকে। আবার খেলা শুরু হলে দ্রæত ফিরে যান ফরহাদ হোসেন। তাকে এলবিডবিøউর ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
পূর্বাঞ্চলের দুই পেসার সৈয়দ খালেদ ও আবু জায়েদ দারুণ লাইন লেংথে বল করে ভুগিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু প্রথম দিনে কোনো সাফল্য পাননি তারা দুজন। এক প্রান্তে বল হঠাৎ নিচু হয়েছে। কখনও বাড়তি বাউন্স পেয়েছেন বোলাররা। সব দারুণভাবে সামাল দিয়েছেন শান্ত। তরুণ বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে খেলেছেন নিজের সব শট। শান্তকে ফিরিয়ে তার সঙ্গে অধিনায়ক জহুরুলের ৭৭ রানের জুটি ভাঙেন আশরাফুল। এলবিডবিøউ হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ১০৯ বলে ১১ চারে ৭৩ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন শান্ত।
পরের ওভারে ধীমান ঘোষকে এলবিডবিøউ করে উত্তরাঞ্চলকে চাপে ফেলেন আশরাফুল। ১৬৬ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে টানছেন জহুরুল ও আরিফুল। দুই জনে দিনের বাকি সময়টুকু কাটিয়ে দেন নিরাপদে। তাদের ব্যাটে দুইশ পার হয় দলের সংগ্রহ।
স ং ক্ষি প্ত স্কো র
উত্তরাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল, মিরপুর
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৬৫ ওভারে ২০৪/৫ (মিজানুর ৪৬, জুনায়েদ ৭, শান্ত ৭৩, ফরহাদ ৮, জহুরুল ৪৩*, ধীমান ১, আরিফুল ১৭*; আবু জায়েদ ০/৬৩, সাইফ ১/৩২, খালেদ ০/২৫, সোহাগ ২/৬০, আশরাফুল ২/২২, মুমিনুল ০/০)।
দক্ষিণাঞ্চল-মধ্যাঞ্চল, রাজশাহী
দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৪৯.৫ ওভারে ১৯১ (এনামুল ২৩, ফজলে রাব্বি ৪০, ইমরুল ২৬, তুষার ১৪, মিঠুন ১৮, নুরুল ২৮, মোসাদ্দেক ২১*, জিয়াউর ১, নাঈম ২, রাজ্জাক ১, কামরুল রাব্বি ৪; আবু হায়দার ০/৪০, শাকিল ২/৫০, এবাদত ৪/৩২, মোশাররফ ৪/৫৭)।
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৩৫ ওভারে ১৫৪/২ (সাইফ ৩০, সাদমান ৬৬*, মজিদ ৪৪, মার্শাল ১৪*; কামরুল ০/৪২, জিয়াউর ০/১১, নাঈম ১/৪৩, এনামুল ০/৭, রাজ্জাক ১/৫১)।
*প্রথম দিন শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।