Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঠোঁট ফুলে যাওয়া

| প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঠোঁট ফুলে যাওয়া বলতে বুঝায় ঠোঁটের অভ্যন্তরে ঠোঁটের কোষ বা কলায় ফ্লুইড বা জলীয় পদার্থ জমে ঠোঁট আকৃতিতে বড় হওয়া। ঠোঁট ফুলে গেলে ঠোঁটের স্বাভাবিক পুরুত্ব বৃদ্বি পায়। ঠোঁট ফুলে গেলে কোনো ভাবেই অবহেলা করা যাবে না।
কেন হয়? ১) সংক্রমণ-যেমন : কোল্ড সোর বা জ্বরঠোসা। ২) প্রদাহ। ৩) হারপিস জিনজাইভোস্টোমাইটিস। ৪) এলার্জি জনিত কারনে। ৫) আঘাতজনিত কারণ। ৬) পোকামাকড়ের কামড়ে। ৭) ক্যান্সার ৮) ওষুধের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া। ৯) সূর্যের আলোর প্রতিক্রিয়া বা সান বার্ন (কর্মক্ষেত্রে দেখা যায়)। ১০) অ্যানাফাইলেকটিক রিঅ্যাকশন। এক্ষেত্রে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ১১) ভাইরাসজনিত কারণে। ১২) অনেক সময় কোনো প্রসাধন সামগ্রী রাতের বেলায় প্রয়োগ করলে দেখা যায় সকাল বেলা ঠোঁট ফুলে গেছে বিশেষ করে নিচের ঠোঁট। এক্ষেত্রে ঐ প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে এবং ঠোঁট ফুলে যাওয়ার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
উপরোক্ত কারণগুলো ছাড়া কম গুরুত্বপূর্ণ যে সব কারণে ঠোঁট ফুলে যেতে পারে তা হল ঃ
*এক্রোমেগলি। * সেলুলাইটিস। * ক্রনস্ ডিজিস। * একজিমা। * কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস। *এনজিও ইডিমা। *হাইপোথায়ডিজম *কাওয়াসাকি ডিজিজ। *স্টিফেন জনসনস্ সিনড্রোম। * গ্লুকাগোনামা।
ঠোঁট ফুলে গেলে করণীয়: গরম অথবা ঠান্ডা প্যাক প্রয়োগ: এক খন্ড জীবাণুমুক্ত কাপড় বা গজে আইস কিউব বা বরফের টুকরা মুড়িয়ে ফুলা ঠোঁটের উপর কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। কোল্ড প্যাক ছাড়া গরম প্যাক ও প্রয়োগ করা যেতে পারে। গরম প্যাক ফুলা জায়গায় রক্ত জমা হওয়াকে বাধাগ্রস্থ করে এবং এভাবে ফুলা কমিয়ে দেয়। উপরে বর্ণিত গরম ও ঠান্ডা প্যাক উপকারী শুধুমাত্র যখন কোনো আঘাতের কারণে ঠোঁট ফুলে যায়।
চা পাতার ব্যাগ: ফুলা ঠোঁটে চা পাতার ব্যাগের প্রয়োগ আরেক কার্যকর উপশম পদ্ধতি। একটি টি ব্যাগ বা চা পাতার ব্যাগ কয়েক মিনিট গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। তারপর চা পাতার ব্যাগকে বের করে ঠান্ডা করতে হবে। ঠান্ডা হওয়ার পর চা পাতার ব্যাগ ফুলা ঠোঁটের উপর কয়েক মিনিট ধরে রাখতে হবে। এ পদ্ধতি ঠোঁট ফুলা কমতে সাহায্য করে থাকে।
মেডিকেটেড মলম ঠোঁটের উপর প্রয়োগ করা যেতে পারে শুষ্কাবস্থা অবসানের জন্য। কারণ ঠোঁট ফুলে গেলে স্থানটি শুষ্ক হয়ে যায়। হারপিস ভাইরাস জনিত কারণে ঠোঁট ফুলে গেলে অবশ্যই অ্যাসাইক্লোভির গোত্রভূক্ত ওষুধ সঠিক নিয়মে নির্দিষ্ট মাত্রায় সেবন করতে হবে। এলার্জি জনিত কারণে ঠোঁট ফুলে গেলে এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। প্রয়োজন হলে কর্টিকোস্টেরয়েড প্রয়োগ করা যেতে পারে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায়। কোনো কোনো সময় স্থানীয়ভাবে প্রয়োগকারী মলম ব্যবহার করা যেতে পারে। জীবাণুযুক্ত কোনো ফুলা থাকলে এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে। রোগীরা বাসায় বসে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে পাচ দিনের মধ্যে যদি ঠোঁট ভালো না হয় তবে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। তাই সবচেয়ে ভালো হয় ঠোঁট ফুলে গেলে কালবিলম্ব না করে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ঠোঁট শরীরের সংবেদনশীল অংশ যা মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ঠোঁটে কোনো সোয়েট গ্ল্যান্ড থাকে না। সোয়েট গ্ল্যান্ড ত্বককে তৈলাক্ত রাখে এবং পুষ্টি যোগায়। ঠোঁটে এই গ্ল্যান্ড থাকে না বলে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়। ঠোঁটের রোগ ছাড়া ও ঠোঁটের ও মুখের স্বাভাবিক যত্ন নিতে হবে। বিজ্ঞাপন নয় বরং একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঠোঁট ও মুখের পরিচর্যা করতে হবে।

-ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল: ০১৮১৭-৫২১৮৯৭
ই-মেইল: [email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন