Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কেউ শোনে না ইছামতির কান্না!

পাবনা থেকে মুরশাদ সুবহানী | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

পাবনার ঐহিত্যবাহী নদী ইছামতি। শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এই নদীর বুক ফাঁটা কান্না শোনে না কেউ। প্রায় ২০ বছর ধরে পাবনার ইছামতি নদী খনন করা হবে, সচল করা হবে এই ধরণের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে কিছুই হয়নি। দীর্ঘদিনে নদী শুকিয়ে গেছে। পরিনত হয়েছে ময়লা আবর্জনা ফেলার ভাগারে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, মশা উৎপাদনের নিরাপদ স্থানে পরিনত হয়েছে। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে ইছামতি নদী খনন করার হবে বলে বিগত জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো খুব জোরে সোরে আওয়াজ দিয়ে ছিলেন বটে। কিছুদিন পর থেমে যায় সেই আওয়াজ। ফিরে আসেন নদী সচল করা হবে এই আওয়াজে। ইছামতি নদী পাড়ে স্থিতিবান রায়তদের উচ্ছেদ করে জটিলতা না বাড়িয়ে বরং নদীর যে টুকু টিকে সেই অংশ প্রবাহমান করে পূর্বে ফকিরপুর ঘাট দিয়ে সাঁথিয়া পাউবো’র ইছামাতি সেচ ক্যানেলের সাথে সংযোগ এবং পশ্চিমে পাবনা শহরের অদূরে চর সাধুপাড়া স্লুইস গেট থেকে চরের মধ্যে ক্যানেল করে এই নদী পদ্মা নদীর শাখা নদী মরা পদ্মার সাথে সংযোগ করা হলে ইছামতি নদীর নব্য ফিরে আসবে। প্রবাহমান হবে ইছামতি নদী। শহরের মধ্যে নদী খনন করে এর দুই পাড় বেঁধে দিলে শহরের সৌন্দর্য্য আরো বাড়বে। গতকাল মঙ্গলবার ইছামতি নদীর চিত্র ধারণ করতে গিয়ে দেখা যায় বর্তমানে এই নদীর কোন গভীরতা নেই। এককালের স্রোতবাহী এই নদী, যে নদী পথে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাবনায় এসেছেন, এই নদী পথে গেছেন শাহাজাদপুর কাছারীবাড়ীতে, যে নদী পথে চলতো ঢাকার সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য সেই ইছামতি নদী এখন মৃতপ্রায়, আর্বজনার ভাগার। বিভিন্ন নদীতে পানির টান পড়ায় কালে কালে এই নদী গভীরত্ব ও পানির প্রবাহ হারিয়ে ফেলে। এই নদীর যে অংশটুকু এখন দৈর্ঘ্য-প্রস্থে আছে সেটি বহাল রেখে নদীর গীভরত্ব বাড়িয়ে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। প্রায় ২০ বছর আগেও এই কাজ কয়েকবার চেষ্টা করেছে পাউবো। অনেক পরে বিএনপি’র ক্ষমতাকালে গণস্বাস্থ্যের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বীরমুক্তিযোদ্ধা ড. জাফরুল্লাহর সহযোগিতায় নদীর নব্য ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। পাবনার ফকিরপুর ঘাটের কাছে এবং শহরে মধ্যে ইছামতি নদীর নোনা মাটি এবং কচুরী পানা পরিষ্কার করা হলেও বাস্তবে নদীর নব্য ফেরেনি। ইছামতি নদী পাবনা শহরে তার আদি চেহারা ফিরে পায়নি। নদীতে পানির প্রবাহ না থাকায় এটা নর্দমায় পরিণত হয়েছে। শহরের প্রায় অধিকাংশ আবর্জনা, বর্জ্য এই নদীতে ফেলায় শহরের বায়ু দুষণ ও গন্ধ ছড়িয়ে নাগরিক জীবনকে বিষময় করে তুলেছে। যদিও পাবনা পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি সাইন বোর্ড লটকানো আছে, ‘ময়লা আর্বজনা ইছামতি নদীতে ফেলবেন না।’ মানছে কে? পাবনার ইছামতি নদীকে প্রবাহমান করতে হলে এই কাজের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাবনা পৌরসভা এবং জেলা প্রশাসন এই তিন দপ্তরের সমন্বয় জরুরী বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।



 

Show all comments
  • selina ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ৩:১৩ পিএম says : 0
    No water flow in rivers virtually no Bangladesh.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইছামতি

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ