বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা মহানগরীর একটি বেসরকারি ছাত্রাবাসে সাগর দত্ত নামে এক কলেজ ছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এসময় একই কক্ষে সজিব সাহা নামে আরও এক ছাত্রকে গুলিতে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ভোর রাতে কুমিল্লা নগরীর উত্তর রেইসকোর্স এলাকার বিএইচ ভূঁইয়া হাউজ ভবনের নীচতলার একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিব্ধ আহত সজিবকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে বুধবার সকালে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নগরীর রেইসকোর্স এলাকার ভূঁইয়া হাউজ নামের তিন তলা ভবনের নীচতলার ৩টি কক্ষের একটি কক্ষে থাকতো কলেজ ছাত্র সাগর দত্ত (১৮)। নিহত সাগর দত্ত কুমিল্লা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও সে জেলার চান্দিনা উপজেলার চিরাল্লা গ্রামের শংকর দত্তের ছেলে। গুলিবিব্ধ আহত সজিব সাহা (২১) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজিরপুর গ্রামের রাখাল সাহার ছেলে ও ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রী পাস কোর্সের ছাত্র। ওই ভবনের অপর দুই কক্ষে তাদের আরও ৪ সহপাঠী ভাড়ায় থাকতো। ওই ভাড়াটিয়াদের মধ্যে একজনের বোনের সাথে সজিবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বুধবার ভোরে পাশের কক্ষের দুই সহপাঠী সজিব ও সাগরের কক্ষে প্রবেশ করে সজিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় সজিবকে গুলি করার সময় তাকে বাঁচাতে সাগর ধস্তাধস্তি শুরু করে। এসময় তারা সাগরকে গলা কেটে হত্যা করে এবং সজিবের বুকের বাঁম পাশে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ সজিবকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ, ডিবি, র্যাব ও পিবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থার পৃথক টিম ঘটনাস্থলে যায়। দুপুরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হয়। এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পরই নীচ তলার অপর দুটি কক্ষের সহপাঠিরা পালিয়ে যাওয়ায় ঘটনার বিষয়ে এখনো বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত ও তাদের গ্রেফতারে ডিবিসহ পুলিশের পৃথক ৩টি টিমের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ছাত্রীকে ‘যৌন হয়রানি’র অভিযোগে জাবি ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার
জাবি সংবাদদাতা : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে ‘যৌন হয়রানি’র অভিযোগে সাহেদ ইসলাম ওরফে আল আমিন নামের এক ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে বুধবার রাত দেড়টার দিকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অভিযুক্ত এই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্রকে মারধর করা হচ্ছে এমন খবরে প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে উপস্থিত হয়ে আল আমিনকে গণধোলাইয়ের হাত থেকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন লিখিত বক্তব্যে জানায়, ‘শ্লীলতাহানি’র অভিযোগকারী ছাত্রীর সাথে তার পরিচয় হয় ফেইসবুকে। পরিচয়ের তৃতীয় দিন, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনের মাঠে (বৃন্দাবন বলে পরিচিত) তাদের দেখা হয়। এসময় আল আমিন ঐ ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাব দেয়ার পরপরই শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলে ছাত্রীটি তাকে বাঁধা দেয়। এরপর পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়েটি আল আমিনকে ফোনকল করে পুনরায় তার সাথে দেখা করতে চয়। রাত দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় দেখা করতে এলে ঐ ছাত্রীর সাথে থাকা বিভাগের সহপাঠি এবং সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করে। আল আমিনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার পর প্রক্টর সিকদার মো জুলকারনাইন সাংবাদিকদের বলেন, “আল আমিন একজন বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ। যেহেতু ঘটনাটি যৌন নিপীড়নের পর্যায়ে পড়ে সেহেতু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী যে সেল রয়েছে তারাই দেখবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা বিধি ভঙ্গের কারণে প্রক্টরিয়াল টিম তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আল আমিন ইতিপূর্বে ৪৬ ব্যাচে জাবিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষমান তালিকায় থাকা এক ছাত্রীকে ভিসি কোটায় ভর্তি করানোর প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলে ঐ ছাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাকে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানায়। ঐ ছাত্রী আল আমিনের কথায় বিশ্বাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগে এক বছর ক্লাস করার পর বার্ষিক পরীক্ষার ফরম ফিলাপের সময় ধরা পড়ে এবং জানতে পারে যে, সে আসলে জাবির শিক্ষার্থীই নয়। ভর্তি জালিয়াতির এই ঘটনায় এ বছরের ১৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আল আমিনকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।