Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারও সংঘাতের আশঙ্কা করছেন ইমাম রশিদি, নেমেছেন মাঠে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:২৮ পিএম

শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে মওলানা ইমদাদুল রশিদির অভাবনীয় ভূমিকার কারণে আপাতভাবে আসানসোলে উত্তেজনা নিরসন হলেও এখনও গুজবের মধ্য দিয়ে ছড়ানো হচ্ছে ঘৃণার বিষ। এইসব গুজবে আবারও সম্প্রীতির আসানসোলে হিংসার আগুন জ্বলে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শহরের চেতলডাঙ্গা নদী তীরবর্তী এলাকার নুরানি মসজিদের ওই ইমাম। তাই আসানসোলবাসীকে তিনি গুজবে কান দিতে মানা করেছেন। অনুসারীদের নিয়ে মাঠে নেমেছেন গুজবের বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে।
সাম্প্রদায়িক ঘৃণার মারণাস্ত্রে খুন হওয়া ১৬ বছরের কিশোর পুত্রের শেষকৃত্যে প্রতিশোধের বিপরীতে মাওলানা রশিদি আহ্বান জানিয়েছেন জীবনের। বলেছেন, ‘কোনও প্রতিহিংসা নয়। প্রতিশোধ নিতে যদি কারোর মৃত্যু ঘটাও, তাহলে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাব। আমি তোমাদের সঙ্গে ৩০ বছর ধরে আছি, আমাকে যদি তোমরা ভালোবাসো তাহলে আর কাউকে যেন এভাবে মরতে না হয়।’ মওলানার এই তৎপরতায় আপাতভাবে শান্ত হয় আসানসোল। তবে তিনি মনে করছেন আবারও শহর অশান্ত হতে উঠতে পারে গুজবের কারণে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেছেন, ‘অনেক ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পড়ছে- এই হয়েছে, ওই হয়েছে, এখানে আক্রমণ হয়েছে, ওই বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে…যখন আস্তে আস্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে, ঠিক তখন এমন সব ভুয়া কথায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে।’

সাম্প্রদায়িক ঘৃণার মারণাস্ত্রে খুন হওয়া ১৬ বছরের কিশোর পুত্রের জানাজায় প্রতিশোধের বিপরীতে মাওলানা রশিদি আহ্বান জানিয়েছেন জীবনের। বলেছেন, ‘কোনও প্রতিহিংসা নয়। প্রতিশোধ নিতে যদি কারোর মৃত্যু ঘটাও, তাহলে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাব। আমি তোমাদের সঙ্গে ৩০ বছর ধরে আছি, আমাকে যদি তোমরা ভালোবাসো তাহলে আর কাউকে যেন এভাবে মরতে না হয়।’ শনিবার নুরানি মসজিদের দ্বিতীয় তলার এক কক্ষে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সে সময় তার সঙ্গে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় মানুষ ছিল। মওলানা ইমদাদুল বলেছেন, ‘একজন ইমামের যা করার কথা, আমি কেবল সেই দায়িত্বটা পালন করছি। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে আমি মানুষজনের সঙ্গে কথা বলছি। তাদেরকে বলছি গুজবের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করতে। আমি তাদেরকে গুজবে কান দিতে মানা করেছি। সবাইকে বলেছি, যদি নিজে ঘটনা না দেখে থাকেন, অথবা এ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন, তাহলে ধরে নেন এটা নিশ্চিত একটা গুজব।

এই বছরের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল রশিদির নিহত ১৬ বছরের ছোট ছেলে সিবতুল্লাহর। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার রেল লাইন এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর বুধবার রাতে পাওয়া যায় মরদেহ। বৃহস্পতিবার ছেলের মৃতদেহ শনাক্ত করেন রশিদি। ধারণা করা হচ্ছে সিবতুল্লাহকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ছেলের দাফন অনুষ্ঠানের পর ৩০ হাজার মানুষের এক জমায়েতে রশিদি বলেছিলেন, আমি শান্তি চাই। আমার ছেলেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমি চাই না আর কোনও পরিবার তাদের প্রিয়জনকে হারাক। চাই না আর কোনও বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হোক। যদি প্রতিশোধের কোনও ঘটনা ঘটে তাহলে আমি আসানসোল ছেড়ে চলে যাবো। যদি আমাকে আপনারা ভালোবেসে থাকেন তাহলে আপনারা আর আঙ্গুল তুলবেন না। শুক্রবার এবং শনিবার সবসময়ই কেউ না কেউ রশিদির সঙ্গে ছিলেন। কেউ শ্রদ্ধা জানাতে, কেউ সমবেদনা জানাতে আবার কেউ এসেছেন তাকে অভিনন্দিত করতে।

শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, সিবতুল্লাহর মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করেছেন তারা। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সংঘাতের মামলাতেও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • গনতন্ত্র ১ এপ্রিল, ২০১৮, ৯:৩৯ পিএম says : 0
    জনগন বলছেন, “ সর্দার “ একতাবিহীন জাতী আমরা খন্ড, খন্ড, দল বেঁধে হই সর্দার, সারাবিশ্বে আজ আমরা অহেলিত দাঁড়িয়ে আছি খাঁদের পাড় ৷ কেউ কাউকে করিনা বিশ্বাস ইমান ভেংগে ছাড়খার, আঘাত রুখার নেই ক্ষমতা অন্তর ভরতি অহংকার ৷ আপন স্বার্থে আমরা অন্ধ বুঝতে চাইনা অন্যের অধিকার, আছার খেয়ে পা’ ভাংগি পথ চলতে হয়নি তবু হুশিয়ার ৷ মুরগীর বাচ্চা যেমনি করে চিল নেয় জোবল মেরে, আমরা দাঁড়িয়ে সেই বিপর্যয়ে ভাতৃত্বের বন্ধন ছেড়ে ৷
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ