Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দোষারোপের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দোষারোপের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট সামপ্রদায়িক উত্তেজনা। রাম নবমীর র‌্যালি থেকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের সৃষ্ট সামপ্রদায়িক উত্তেজনায় এ পর্যন্ত ৫ জনের প্রাণহানির খবর দিয়েছে সে দেশের সংবাদমাধ্যম ক্যাচ নিউজ। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত হওয়ার পর পারস্পরিক দোষারোপের খেলায় মেতেছে রাজনৈতিক দলগুলো। বিহারের ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের একজজন মন্ত্রী-পুত্রের সংশ্লিষ্টতার আলামত মিলেছে। কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল বিজেপি ও রাজ্য সরকারের দায়িত্বে থাকা জনতা দলকে (সমন্বিত) দায়ী করছে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তেজনায় তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপি পরস্পরকে দোষারোপ করছে ঘটনার জন্য। দোষারোপের খেলায় রয়েছে কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি আর সিপিএম-ও। হিন্দু দেবতা রামের জন্ম বার্ষিকী উদযাপনের রাম নবমীর র‌্যালি থেকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দাঙ্গার কবলে পড়ে বিহারের ভাগলপুর, ঔরঙ্গাবাদ, মুঙ্গের, নালন্দা, শেখপুরা এবং জামুই। এর আঁচ এসে লাগে পশ্চিমবঙ্গের রানীগঞ্জ ও আসানসোলে। দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত ৫ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ অহির এ ঘটনায় বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দুষছেন। তিনি দাবি করেছেন, ওই দুই রাজ্যের সরকারের দায়িত্ব ছিল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। পশ্চিমবঙ্গ সিপিএম-এর সাধারণ সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র দায়ী করেছেন বিজেপি-তৃণমূল উভয় দলকেই। তিনি দাবি করেছেন, ওই দুই দল ভোটারদের কাছে টানতে ‘প্রতিযোগিতামূলক সামপ্রদায়িকতা’র লড়াইয়ে নেমেছে। বহুজন সমাজ পার্টির নেতা মায়াবতী কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দ্বৈতনীতির অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি তাদের নিজেদের দলের দ্বারা শাসিত রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রে একরকম আর অন্য রাজনৈতিক দলের শাসিত রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রে আরেক রকম অবস্থান নেয়। পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে জানিয়েছে, রাম নবমী উপলক্ষে ১৭ মার্চ ভাগলপুর শহরে ‘ভারতীয় নববর্ষ জাগরণ সমিতি’ নামে এক সংগঠনের এক মিছিল থেকে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। রাম নবমী পালনের নামে ওই মিছিলের অনুমতি নেওয়া হলেও মুসলিম অধ্যূষিত স্থানগুলোতে ওই মিছিল থেকে সা¤প্রদায়িক উসকানি ছড়ানো হচ্ছিলো। মোটরবাইক মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবের ছেলে অরিজিৎ শাশ্বত। ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিহারের এক টিভি চ্যানেলের প্রবীণ সাংবাদিক কুন্দন সিং বলেছেন, ‘‘মন্ত্রীর ছেলের উস্কানিমূলক ভাষণের পর থেকেই হিংসা শুরু হয়েছিল।” বিহারের ঘটনায় সেখানে ক্ষমতাসীন জনতা দলকেই (সমন্বিত) দায়ী করছে বিরোধীরা। লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল ও কংগ্রেসের অভিযোগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের ব্যর্থতার কারণেই সেখানে সামপ্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না মুখ্যমন্ত্রী। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের পক্ষে তেজস্বী যাদব সামপ্রদায়িক উস্কানির অভিযোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবের ছেলে অরিজিৎ শাশ্বত চৌবেকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। কংগ্রেস বলছে, বর্তমান সরকারের ছায়াতলে বিহারে বিজেপির আধিপত্য বাড়ছে। তারা বলছে, মুখ্যমন্ত্রী তাদের কাছে যেন অসহায়। আর মায়াবতীর অভিযোগ, রামনবমী পালনে মিছিল ঘিরে যারা হিংসা ছড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়ায় পরিবর্তে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে টার্গেট করা হচ্ছে। অথচ বিহারে একই ধরনের ঘটনায় সরকার এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। ডয়েচে ভেলে, ক্যাচ নিউজ, টাইমস অব ইনডিয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ