Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নাইন-ইলেভেন ঘটনায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছে সউদী আরব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার ঘটনায় নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে করা সউদী আরবের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন এক মার্কিন বিচারক। বুধবার ওই বিচারক জানান, তিনি অভিযোগ থেকে সউদী আরবকে নিষ্কৃতি দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ পাননি। ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাই সউদী আরবকে হতাহতদের পরিবারকে কোটি কোটি ডলার দিতে হবে বলে রায়ে জানান তিনি। এই আদেশের ফলে সউদী আরবকে টুইন টাওয়ার হামলা সংক্রান্ত বেশ কিছু মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতেই হচ্ছে।
২০১৬ সালেরই ৯/১১ বার্ষিকীর দিনেই জাস্টিস এগেইনস্ট স্পন্সরস অব টেররিজম অ্যাক্ট নামে এ সংক্রান্ত একটি বিল মার্কিন সিনেটে মৌখিক অনুমোদন পায়। সুযোগ তৈরি হয়, এ ঘটনায় সউদী সংশ্লিষ্টতার বিপরীতে স্বজন হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন পরিবারগুলো কিংবা ঘটনায় আহত হওয়া মার্কিন নাগরিকদের। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিলে ভেটো দিলেও মার্কিন পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সেই ভেটোর বিপরীতে রায় আসে। ফলে স্বজন হারানো ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন পরিবারগুলোর পক্ষে সউদী আরবের বিরুদ্ধে মামলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। হামলার নেপথ্যে সউদী আরবের সংশ্লিষ্টতা ছিল, এমন অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে ২৫টি মামলা হয়েছে। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা এসব মামলায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এমনই এক মামলার বিচারকার্য পরিচালনা করতে গিয়ে মার্কিন জেলা জজ জর্জ ড্যানিয়েলস বলেছেন, সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ খারিজের জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ ছিল না তার কাছে।
২০১৬ সালের সেই জাস্টিস অ্যাগেইনস্ট স্পন্সর অব টেররিজম অ্যাক্ট (জাসটা) আইন অনুযায়ী সউদী আরবের বিরুদ্ধে বিচারকার্য পরিচালনা হছিল। সউদী আরব বরাবরই হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে আসছে। তবে বুধবারের ঘোষণার পর সউদী আরবের আইনজীবীরা কোনও মন্তব্য করেননি। নিউ ইয়র্কে সউদী শেয়ারবাজারের একটি অনুষ্ঠানেও প্রশ্ন করা হয়েছিলো এই রায়ে যুক্তরাষ্ট্রে সউদী বিনিয়োগে কোনও প্রভাব পড়বে কিনা। ক্যাপিটাল মার্কেট কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ এলকও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ড্যানিয়েলের এই রায়, হামলায় নিহতদের পরিবার ও আহত ২৫ হাজার মানুষের দাবির পক্ষেই গিয়েছে। তবে বিচারক রায়ে আরও বলেন, সউদী আরবের ন্যাশনাল কমার্শিয়াল ব্যাংক, আল রাজি ব্যাংক ও সউদী বিনলাদিন গ্রæপ এই হামলায় অর্থ জোগান দিয়েছে এমন দাবি সত্য নয়।
২০১৬ সালের জুনে সিআইএ প্রধান জন ব্রেনান বলেন, নাইন ইলেভেনের হামলা সংক্রান্ত ২০০২ সালের কংগ্রেসের গোপন প্রতিবেদন সউদী আরবের সম্পৃক্ততার প্রমাণ নয়। সউদী মালিকানাধীন টেলিভিশন আল আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রেনান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি ২৮ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনটিকে ৯/১১ হামলায় সউদী আরবের যোগসাজশের প্রমাণ হিসেবে জনগণের গ্রহণ করা উচিত হবে না।’ তবে সমালোচকরা মনে করেন, সিআইএ প্রধান জন ব্রেনান-এর এমন বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সউদী আরবের ব্যাপক লবিংয়ের ফলাফল। এই লবিংয়ে সাবেক দুই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবিøউ বুশ এবং বারাক ওবামাও প্রভাবিত ছিলেন বলে মনে করা হয়।
সউদী আরব দাবি করে, কোনও বাদী প্রমাণ করতে পারেনি যে ওই হামলার সঙ্গে সউদী আরব জড়িত ছিল। তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী জেমস ক্রেন্ডলার বলেছেন, মামলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় তিনি খুশি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী আরব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ