মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইন্ডিয়া টুডে : ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় দলের কাছে পৌঁছতে পারা মমতা ব্যনার্জি ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলের মুখ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সোমবার দিল্লী পৌঁছেছেন। জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) প্রধান শরদ পাওয়ারের বাড়িতে আজ মঙ্গলবার বিরোধী দলগুলোর এক বৈঠক ডাকা হয়েছে। মমতা এ বৈঠকে যোগ দেবেন।
তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর বিমানযোগে কোলকাতা এসে মমতা ব্যানার্জির সাথে সাক্ষাত এবং ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে অ-কংগ্রেস অ-বিজেপি ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন বিষয়ে আলোচনা শুরু করার কয়েকদিন পর মমতা দিল্লীতে গেলেন।
মমতা ব্যানার্জি নিজেকে নেত্রী হিসেবে এমন পর্যায়ে নিজেকে উন্নীত করেছেন যিনি বিরোধী দলগুলোর সবার কাছে পৌঁছতে পেরেছেন। গত কয়েকদিন থেকে তার টুইটার টাইমলাইন থেকে বিষয়টি মূল্যায়ন করা যায়।
বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) সুপ্রিমো মায়াবতী রাজ্যসভা নির্বাচনে পরাজয়ে অখিলেশ যাদবের নেতৃত¦াধীন সমাজবাদী পার্টির (এসপি) সাথে সমঝোতার কোনো ক্ষতি হবে না বলে ঘোষণার পর মমতা টুইট করেন ঃ আমি মায়াবতীজির মন্তব্যকে স্বাগত জানাই। আমরা জাতির স্বার্থে বলিষ্ঠ ভাবে এ মিশনে তার সাথে আছি।
একই দিনে মমতা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর বক্তব্য খন্ডন করে দেয়া অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর নাইডুর বিবৃতিকে সমর্থন করেন। রাজনৈতিক বিবেচনা চালিত হয়ে এনডিএ থেকে তেলেগু দেসম পার্টি (টিডিপি) এনডিএ থেকে বেরিয়ে গেছে বলে অমিত শাহ অভিযোগ করেন।
মমতা ব্যানার্জি টুইটে বলেন, চন্দ্রবাবু নাইডু সত্য কা বলেছেন বলে আমি তার প্রশংসা করি। খুব ভালো হয়েছে। তথাকথিত বহু নেতা আছেন যারা মিথ্যা ছড়ান। এটা তাদের অভ্যাস। তারা রাজ্যগুলোর সাথে ঠিক আচরণ করে না, অথচ দেখায় যে তহবিল দিয়ে আনুক‚ল্য করছে। এসব হচ্ছে ভুয়া কেন্দ্রবাদ।
কিছুদিন আগে অররিয়া লোকসভা উপ নির্বাচন ও জাহানাবাদ বিধানসভা উপ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) সুপ্রিমো লালু প্রসাদকে অভিনন্দন জানান।
শক্তিশালী বিরোধী নেত্রী হিসেবে মমতা ব্যানার্জির রাজনৈতিক উত্থানের কারণ হচ্ছে পার্লামেন্টে তার দলের শক্তি। লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের ৩৪ জন এমপি রয়েছেন। বিজেপি, কংগ্রেস ও এআইডিএমকের পরে লোকসভায় তাদের স্থান। রাজ্যসভায় তৃণমূলের ১২ জন সদস্য। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূল ৫টির মধ্যে ৪টি আসনে জয় পেয়েছে। একটি আসনে তারা কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করায় তিনি জয়ী হন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধান সভায় ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের রয়েছে ২১৩টি আসন।
মমতা ব্যানার্জি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতাদের চেনেন। সোনিয়া গান্ধী, শরদ পাওয়ার ও আম আদমি পার্টি নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালসহ কয়েকজন প্রধান বিরোধী নেতার সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
একদিকে মহাজোট ও অন্যদিকে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনে যখন সমান্তরাল আলোচনা চলছে তখন মমতা ব্যানার্জি তার পথ খোলা রেখেছেন। একই সাথে বিরোীদলের নেতাদের এক সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই মমতার সাথে সাক্ষাত করে প্রমাণ করছেন যে ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করতে হলে যে কোনো পদক্ষেপে তিনিই হবেন প্রধান।
তিনি সোনিয়া গান্ধীর নৈশভোজে নিজে না গিয়ে সিনিয়র তৃণমূল নেতা ও এমপি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি কংগ্রেসের সাথে যোগাযোগের পথ খোলা রাখলেন। মমতা আজ শরদ পাওয়ারের বাড়িতে আলোচনা যোগ দেবেন।
মমতা সম্প্রতি তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও ও তার মেয়ের সাথে সাক্ষাত করেন। বৈঠকের পর রাও সাংবাদকদের বলেন, তারা একটি নন বিজেপি, নন কংগ্রেস কেন্দ্রীয় ফ্রন্ট গঠন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছেন।
কয়েকমাস আগে জনতা দল (ইউনাইটেড) প্রধান নিতিশ কুমারকে অনেকেই ২০১৯ সালে মোদিকে চ্যালেঞ্জকারী হিসেবে দেখা হচ্ছিল। কিন্তু বিহারে মহাগতবন্ধন ভেঙ্গে যাওয়া ও এনডিএ জোটে জেডি (ইউ) -এর ফিরে যাওয়ায় সে সম্ভাবনা শেষ। এখন মোদি সরকারের সবচেয়ে তীব্র সমালোচক হচ্ছেন মমতা। তৃণমূল কংগ্রেস এখন তাকে ২০১৯ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে তাকে বিরোধীদের প্রধান হিসেবে প্রদর্শন করতে চাইছে।
বিরোধী দলের বহু নেতাই রাহুল গান্ধীকে মোদি বিরোধী জোটের প্রধান হিসেব মেনে নিতে আগ্রহী নন। উ্র প্রদেশের নির্বাচনে কংগ্রেস আবারো খারাপ ফল করেছে।
এ অবস্থায় বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় দলের কাছে পৌঁছতে পারা মমতা ব্যনার্জি ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলের মুখ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।