Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোটাস কামালের নেতৃত্বে সুসংহত আ.লীগ গফুর-মোবাশ্বের দ্বন্দ্বে বেকায়দায় বিএনপি

কুমিল্লা-১০ নাঙ্গলকোট-সদর দক্ষিণ-লালমাইয়ে বইছে নির্বাচনী হাওয়া

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কুমিল্লা-১০আসনের এমপি পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামালের হাত ধরে নাঙ্গলকোট এখন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। একইভাবে সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলায় লোটাস কামালের একক নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুসংহত। লোটাস কামাল গত ৯ বছরে তার নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের রূপকার হয়ে ওঠেছেন। ফলে আসন্ন একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কব্জা থেকে আসন পুনরুদ্ধার বিএনপির জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। কেননা বিএনপি নিজেরাই লড়ছে নিজেদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিএনপির রাজনীতিতে দুই নেতার একজন সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূইয়া ও আরেকজন নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মোবাশ্বের আলম ভূইয়ার চরম দ্ব›েদ্ব কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসনে গ্রæপিংয়ের রাজনীতিতে বেসামাল হয়ে পড়েছে বিএনপি
নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা, সদর দক্ষিণ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও নবগঠিত লালমাই উপজেলার আটটি ইউনিয়ন রয়েছে কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসন এলাকায়। এ আসনে ভোটার বেশি নাঙ্গলকোটে। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কঠিন সময়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা লোটাস কামালের জন্য নতুন এলাকা সত্তে¡ও তিনি বিএনপি প্রার্থী মোবাশ্বের ভূইয়াকে পরাজিত করে চমক দেখান। ওই সময়ে নৌকা জয়ের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমানে কুমিল্লা জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন। কুমিল্লা-১০ আসনের সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয় লোটাস কামালের হাত ধরে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হোন লোটাস কামাল। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হওয়ার পর কেবল তার নিজ নির্বাচনী এলাকাই নয়, গোটা কুমিল্লার উন্নয়নে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন। বাস্তবায়ন করেন নতুন উপজেলা লালমাই। এমপি ও মন্ত্রিত্বের এ সময়টিতে লোটাস কামাল তার নির্বাচনী এলাকায় বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, কৃষি, ক্রীড়া, বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়নের দুয়ার খুলে দিয়েছেন। গণমানুষের সামনে তুলে ধরছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রূপচিত্র। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নাঙ্গলকোটের অনেক বিএনপি নেতা লোটাস কামালের হাতে ফুল দিয়ে আ.লীগে যোগদান করেছে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল গোটা কুমিল্লায় ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ গড়ার লক্ষ্য নিয়েও সাংগঠনিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আসন্ন একাদশ নির্বাচনে কুমিল্লা-১০ আসনে নেতাকর্মীদের দৃষ্টিতে লোটাস কামালই আওয়ামী লীগের কÐারি। নেতাকর্মীরা মনে করেন, তাদের আশা-ভরসার নেতা লোটাস কামালের হাত ধরে কুমিল্লা-১০ আসন তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের ঘরেই থাকবে।
এদিকে কুমিল্লা-১০ আসনের তিন উপজেলাতেই বিএনপি বেকায়দায় অবস্থায় রয়েছে। দলের দুই নেতা সাবেক এমপি আবদুল গফুর ভূইয়া ও মোবাশ্বের আলম ভূইয়ার দ্ব›দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। নাঙ্গলকোটের বাসিন্দা ওই দুই ভূইয়ার দ্ব›েদ্বর প্রভাব সদর দক্ষিণ ও নতুন উপজেলা লালমাইয়েও প্রভাব ফেলেছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে গফুর ভূইয়া নাঙ্গলকোট থেকে বিএনপির এমপি নির্বাচিত হোন। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে এমপি গফুর ভূইয়া নাঙ্গলকোটে নানা ঘটনায় সমালোচিত হন। ২০০৭ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সময়ে একটি খুনের মামলায় গফুর ভূইয়া গ্রেফতার হলে নাঙ্গলকোট বিএনপিতে নেতৃত্বের পালাবদল ঘটে। নাঙ্গলকোট বিএনপির নেতা বনে যান ব্যবসায়ি মোবাশ্বর আলম ভূইয়া। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মোবাশ্বর আলম ভূইয়া দলের মনোনয়ন নাটকীয়তায় জিতে গিয়ে হেরে যান আওয়ামীলীগের প্রার্থী লোটাস কামালের কাছে। ২০০৮ সালের নির্বাচন ঘিরে বিএনপি নেতা সাবেক এমপি গফুর ভূইয়া ও মোবাশ্বের ভূইয়ার মধ্যে যে দ্ব›দ্ব সৃষ্টি হয় তা আজো নিরসন হয়নি। কুমিল্লা-১০ আসনের সবচেয়ে বড় উপজেলা নাঙ্গলকোটে বিএনপির বড় শক্তিই হচ্ছে সাবেক এমপি গফুর ভূইয়া। আর এমনটিই মনে করছেন সেখানকার তৃণমুল নেতাকর্মীরা। তারা জানান, আগামীতে গফুর ভূইয়া মনোনয়ন পেলে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবেই দলের হয়ে কাজ করবে। কারণ গফুর ভূইয়ার পক্ষেই সম্ভব আসনটি পুনরুদ্ধার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুমিল্লা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ