নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
একের পর এক নাটকীয়তা। পরতে পরতে উত্তেজনা ছড়ানো। মাঠের সেই উত্তাপ নিমিষেই ছড়িয়ে ডাগ-আউট আর গ্যালারীতেও। ছোট ছোট খন্ড নাটকের পরিসমাপ্তি স্বস্তির জয়ে। তবে তাতেও মিশে থাকল দীর্ঘশ্বাস!
জিতলেই নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে প্রয়োজন ১২ রান, পেন্ডুলামের মতো দুলছে ম্যাচের ভাগ্য। থিসারার পরপর দুটি বাউন্সার। এর মধ্যে দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে গেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু টানা দ্বিতীয় বাউন্সারেও নো বল দিলেন না শ্রীলঙ্কান আম্পায়ার। ম্যাচের এ রকম টানটান মুহূর্তে এসে নো বল না পেয়ে সীমানার কাছে এসে উত্তেজিত হয়ে পড়েন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মাঠ থেকে ব্যাটসম্যানদের চলে আসার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন সাকিব। যা হলে টুর্নামেন্ট থেকে ডিসকোয়ালিফাইড হয়ে যেত বাংলাদেশ। তিক্ততা ছড়িয়ে পড়ত পুরো টুর্নামেন্টে। তবে মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতা আর ধৈর্য্যশীল আচরেণে বড় বিপদ থেকে বেঁচে গেছে বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে সাকিবের এমন আচরণের কড়া সমালোচনা করেছেন ধারাভাষ্যে থাকা সুনীল গাভাস্কার। এমন ঘটনা নাকি ক্রিকেট মাঠে দেখা ঠিক নয়। কিন্তু গাভাস্কার হয়তো ভুলে গেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠ ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। গাভাস্কার নিজেই এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন।
১৯৮১ সালে মেলবোর্ন টেস্টে ডেনিস লিলির এলবিডব্লিউর আবেদনে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার রেক্স হোয়াইট। কিন্তু গাভাস্কারের দাবি ছিল বলটি ব্যাট হয়ে প্যাডে লেগেছে। তাই তিনি আম্পায়ারের প্রতিবাদ জানিয়ে উইকেটে থাকা অন্য সঙ্গীকে নিয়েই মাঠ ছেড়েছিলেন!
শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটেই মাঠ থেকে উঠে আসার ঘটনা আছে। ক্রিকেট ইতিহাসেরই অংশ সেটা। যা শুরু করেছিলেন লঙ্কান সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা। ১৯৯৫ সালের মেলবোর্ন টেস্টে মুরালিধরনের বলে বারবার ‘নো’ ডাকছিলেন আম্পায়ার ড্যারেল হেয়ার। সেই ঘটনায় রানাতুঙ্গা মাঠ থেকে উঠে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রান্ত বদল করেন। এর তিন বছর পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আরেক ম্যাচে মুরালির বলে বারবার ‘নো’ ডাকছিলেন রস এমারসন। এবার দলবল নিয়ে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন রানাতুঙ্গা। পুরো দল বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও রানাতুঙ্গা মাঠের বাইরে কর্তাদের সঙ্গে আবার আলোচনা করে মাঠে ফিরে আসেন। এটা না ঘটলে মুরালিধরনের ক্যারিয়ারই হয়তো শেষ হয়ে যেত।
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ম্যাচ শেষে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের বাংলাদেশের ডেসিং রুমের একপাশের কাঁচ ভাঙা। শেষ ওভারের উত্তেজনা, দুই দলের মধ্যে হালকা ধাক্কাধাক্কি, ম্যাচ বয়কটের হুমকি, ছক্কায় ম্যাচ শেষের পর বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের উন্মাতাল উল্লাস...এসব দৃশ্য মাথায় রেখে দলের ড্রেসিংরুমের সামনে ভাঙা কাচ প্রশ্ন তুলে দেয়। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক এখন সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। যদিও আপাত অনুমান যা করা হচ্ছে, আসল ঘটনা তেমনটিও নয় বলেই সূত্রগুলো জানিয়েছে। রাগ-ক্ষোভ-প্রতিশোধস্পৃহা থেকে ড্রেসিংরুমে কোনো ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। বাংলাদেশ দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়রা ড্রেসিংরুমে বাড়তি উল্লাস করতে গিয়ে এর কাচের দরজাটি ভেঙে যায়।
ম্যাচের শেষ ওভারে যে উত্তাপ ছড়িয়েছে, যে কথার লড়াই, সেটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাঠ ছেড়ে চলে আসার পরিস্থিতি তৈরি হওয়া- সাকিবের সামনে নিষেধাজ্ঞার হুমকিই ছিল। স্বস্তির খবর, তেমনটা হয়নি। ম্যাচের রাতে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড সাকিবকে ২৫ শতাংশ ম্যাচ ফি জরিমানা আর একটি ডিমেরিট পয়েন্ট দিয়েছেন। আইসিসির কোড অব কন্ডাক্টের ২.১.১ আর্টিকেল ভাঙার দায়ে এই শাস্তি পেয়েছেন সাকিব। আরর আর্টিকেল ২.১.২ ভাঙার দায়ে একই শাস্তি পেয়েছেন একাদশের বাইরে থাকা নুরুল হাসান।
উত্তেজনার মুহূর্তে নুরুলের সঙ্গে কথার লড়াই হয়েছিল শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড়দের। টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য জানালেন, ম্যাচ রেফারি বুঝতে পেরেছেন ঘটনার উৎপত্তি আসলে আম্পায়ারের ভুলে! যেহেতু আম্পায়ারদের ভুলের কারণেই এত কিছু, সাকিব-নুরুলকে বেশি জরিমানা গুনতে হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।