পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুতের নানামুখি সমস্যা ও সংকট শুরু হয়েছে। বরিশাল মহানগরীতেই ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছেনা বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে। তবে এসব সমস্যা ও সংকটের পেছনে বিদ্যুতের কোন ঘাটতি না থাকলেও বিতরন ব্যবস্থার গলদই জনদূর্ভোগ বৃদ্ধি করছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় প্রায় সোয়া শ’ মেগাওয়াট চাহিদার পুরোটাই জাতীয় গ্রীড থেকে সরবরাহ করা হলেও বিতরন ব্যবস্থার ত্রুটি দক্ষিণাঞ্চলবাসীর পিছু ছাড়ছে না। হাসপাতাল ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার মত জরুরী পরিসেবা ছাড়াও শিল্প ও ব্যবসা-বানিজ্যেও সংকট ক্রমশ বাড়ছে। শুক্র-শনিবারে বন্ধের দিনগুলোতে চাহিদা কম থাকলেও বিদ্যুৎ সংকট লেগে থাকছে। বছরের পর বছর ধরে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠীতে জন দূর্ভোগ অব্যাহত থাকলেও পরিত্রান মিলছে না। জেলা শহরের যেসব এলাকায় পশ্চিমাঞ্চলীয় বিদ্যুৎ বিতরন কোম্পানী-ওজোপাডিকো বিদ্যুৎ বিতরন করছে, সেখানে গোলযোগের হার পল্লী বিদ্যুতের এলাকাগুলোর চেয়ে বেশী বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে ওজোপাডিকো এ বিষয়টি অস্বীকার করে যত দ্রুত সম্ভব পরিচালন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষে কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে। এ লক্ষে দুটি ভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে জানিয়ে আগামী অর্থ বছরের মধ্যেই ওজোপাডিকো’র আওতাভূক্ত দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বিদ্যুৎ বিতরন ও সরবরাহ ব্যবস্থা প্রায় নির্বিঘ্ন হবে বলেও জানান হয়েছে।
তবে প্রায়ই অনেক সময় ৩৩ কেভী সাব-স্টেশন পর্যন্ত ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধ থাকছে নানা কারিগরি ত্রুটির কারনে। গত বুধবার সন্ধা সাড়ে ৬টায় বরিশাল মহানগরীর রূপাতলী ৩৩ কেভী সাব-স্টেশন থেকে পলাশপুর সাব-স্টেশনমুখি ৩৩ কেভী লাইনে গোলযোগের কারনে গ্রীড সাব-স্টেশনই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের একটি বড় এলাকাই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে স্টেশন লোড গ্রহন করে বরিশাল ১৩২/৩৩ কেভী সাব-স্টেশনসহ সবগুলো ৩৩ কেভি সাব-স্টেশন চালু করা সম্ভব হলেও রূপাতলী-পলাশপুর ৩৩ কেভী লাইন টি অচল হয়ে পড়ে। ৩৩ কেভী লাইনের একটি পোলে ২টি ইনসুলেটেড পিন ফেটে গিয়ে পুরো সিষ্টেম অচল হয়ে পড়ে। রাত ১২টা পর্যন্ত ঐ ত্রুটি দুর করতে গিয়ে রূপাতলী-কাশীপুর সাব-স্টেশন থেকে বিকল্প ব্যবস্থায় পলাশপুর সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হয়। ফলে নগরীর প্রায় ২৫টি ফিডারে মধ্যরাত পর্যন্তই লোডসেড করতে হয়েছে। অথচ বিদ্যুতের কোন ঘাটতি ছিলনা। প্রায়ই নগরীর ৩৩ কেভী ও ১১ কেভি লাইনগুলোতে গোলযোগের কারনে গভীর রাতেও নগরীর অনেক বড় এলাকাতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কাশীপুর ৩৩ কেভী সাব-স্টেশনে গভীর রাতে বা শেষ রাতে কোন ১১ কেভী লাইন ট্রিপ করলে গ্রাহকগন টেলিফোন করে তাগিদ না দিলে তা চালু করা হয়না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার প্রায় সব এলাকাতেই এখনো কয়েক যুগের পুরনো জরাজীর্ণ হাই-টেনশন ও লো-টেনশন লাইন গ্রাহকদের দূর্ভোগ বাড়াচ্ছে। খোদ বরিশাল বিভাগীয় সদরেই ‘আকাশে মেঘ জমলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়’ বলে প্রবাদ চালু রয়েছে।
ওজোপাডিকো’র ২১ জেলার জন্য ৮৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের আওতায় ৪৪৪ কিলোমিটার নতুন ১১ কেভী ও ০.৪ কেভি লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় ৭০ কিলোমিটার ৩৩ কেভী নতুন লাইন নির্মাণ ছাড়াও ১শ কিলোমিটার লাইন পূণর্বাসন করা হবে। ২৬টি ৩৩/১১ কেভী ও ২ হাজার ১ শ’টি ১১/০.৪ কেভি নতুন বিতরন ট্রান্সফর্মার স্থাপন করা হচ্ছে। একই সাথে ৩০ হাজার নতুন বিদ্যুৎ খুটি স্থাপন, ৩টি ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন নির্মান ও ১১ টি অনুরূপ পুরনা সাব-স্টেশন পূণর্বাসনের পরিকল্পনা রয়েছে প্রকল্পের আওতায়। তবে আগামী অর্থ বছরের মধ্যে এ প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হলেও তা ২০১৯-এর ডিসেম্বরের আগে সম্পন্ন হবার সম্ভাবনা নেই। এ ছাড়াও প্রায় ১ হাজার ২শ কোটি টাকা ব্যয়ে আরো একটি উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ওজোপাডিকো’র বিতরন ও সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়নে।
দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বিদ্যুৎ বিতরন ও সরবরাহ ব্যবস্থা নিরবিচ্ছিন্ন করাসহ গ্রাহকদের উন্নত সেবা প্রদানের কথা বলে পিডিবি’র আওতায় রেখেই ২০০২ সালে ‘ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী-ওজোপাডিকো’ নামে একটি কোম্পানী গঠন করে সরকার। প্রথম দিকে পিডিবির কর্মকতা-কর্মচারীদের প্রবল বিরোধিতায় কোম্পানী গঠন প্রক্রিয়াসহ এর কার্যক্রম শুরু বিলম্বিত হয়। তবে কোন কর্মীকে চাকুরিচ্যুত না করাসহ বেতন-ভাতা ও আনুসঙ্গিক সুবিধাদি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবী দাওয়া মেনেই ২০০৫ সালের ১এপ্রিল থেকে ওজোপাডিকো তার বানিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। কবে একাজ সম্ভব হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ওজোপাডিকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে সেল ফোনে আলাপের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।