Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে জনদুর্ভোগে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রাজধানীতে বৃষ্টি মানেই পানিজট-যানজট। স্যুয়ারেজ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজপথ ও অলি-গলিতে পানি জমে যায়। এ পানিতে ছড়িয়ে পড়ে ব্যবস্থাপনার বাইরে থাকা বিপুল পরিমান বর্জ্য। এতে নাগরিকদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগ-বিড়ম্বনায়। পানি জমতে যে সময় লাগে, তার থেকে বেশি সময় লাগে পানি সরতে। এ জন্য নগরবাসী দুষছেন ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাকে। তাদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে এ সমস্যা চলতে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটি আমলে নিচ্ছে না।
দুই সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন সড়কে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খানাখন্দক ও খোঁড়াখুঁড়ির গর্তে বৃষ্টির পানি জমে একাকার হয়ে আছে। কোথয় সমতল আর কোথায় খানাখন্দক বুঝার উপায় নেই। এ সব সড়কে প্রতিদিন অহরহ ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। গতকালের টানা বৃষ্টিতে এ সড়কগুলোদিয়ে চলাচলকারীদরে পড়তে হয়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে।
গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকেই কখনো মাঝারি কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে ঢাকায়। এতে সৃষ্টি হয়েছে জনভোগান্তির। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ঢাকায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে যা গত সাতদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানিবদ্ধতা ও যানজট দেখা দিয়েছে। জুতা হাতে হাঁটু পানি পাড়ি দিয়ে অনেককে হেঁটে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। মধ্যরাতের বৃষ্টির কারণে সকাল থেকেই পানি জমেছে ধানমন্ডি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে।
সোমবারের বৃষ্টি স্বস্তি দিলেও গতকাল মঙ্গলবার সকালে অফিসযাত্রীরা পড়েন দুর্ভোগে। গণপরিবহন কম থাকা এবং বেশিরভাগ বাসস্ট্যান্ডে পানি জমে থাকায় এলোমেলো হয়ে যায় পরিবহন ব্যবস্থা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী ফ্লাইওভার এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত তীব্র যানজট। অন্য রাস্তাগুলোতে হঠাৎ হঠাৎ তীব্র যানজট হলেও বেশিরভাগ রাস্তা ছিল ফাঁকা। রাজধানীর জাহাঙ্গীর গেট থেকে কাওরান বাজার, পান্থপথ সিগন্যাল থেকে ৩২ নম্বর ও ধানমন্ডি ২৭ থেকে সায়েন্সল্যাবের রাস্তায় মাঝারি যানজট তৈরি হলেও অন্যান্য রাস্তা বৃষ্টিতে ফাঁকা দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরপুর-১, ৬ ও ১০ নম্বর আল-হেলাল হাসপাতালের পাশের সড়ক, মিরপুর ১২ ও ১৩ নম্বর, কালশী রোড, পূরবী, বসুন্ধারা আবাসিক এলাকার মেইন গেট থেকে ডি ব্লক পর্যন্ত এবং ধানমন্ডির সড়কগুলোতে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও পুরাতন ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড, সাতরাওজা, নাজিরা বাজার, বংশালসহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে যায়। এদিকে সড়কে পানিবদ্ধতার কারণে যানজটের পড়ে রাজধানীবাসী। রাজধানীর মতিঝিল, গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, বাংলা একাডেমি, শাহবাগ, মিন্টু রোড, হাতিরঝিল, গুলশান-১, মহাখালী, মালিবাগ রেলগেট থেকে আবুল হোটেল, নীলখেত থেকে গাবতলী ও মিরপুরে প্রচন্ড যানজট দেখা গেছে। সিগন্যাল ছাড়াও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে কমপক্ষে ১৫ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত বসে থাকতে হয়েছে অফিস ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে।
বৃষ্টিতে রিকশা চলাচল কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেককেই। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ ভোগান্তির শিকার বেশি হয়েছে। তাদের অনেককেই কাকভেজা হয়ে বাসায় ফিরতে দেখা গেছে।
অহিদুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী জানান, মিরপুর-১২ নম্বরে ছোট থেকে বড় হয়েছি। এখানকার গলিতে জন্মের পর থেকে পানি জমতে দেখিনি- আজকেই প্রথম দেখলাম।
রায়না আফরোজ নামে এক শিক্ষিকা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সপ্তাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্মদিবস। চাইলেও কেউ ঘরে থাকতে পারে না। মৌচাক থেকে আবুল হোটেলের সড়কের একপাশে সামান্য পানি জমেছে। অথচ বাসে ২০০ মিটারের এ সড়ক পার হতে সময় লাগলো ৪০ মিনিট। রামপুরা থেকে আবুল হোটেলের সড়কেও একই অবস্থা। ###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজধানী জনদুর্ভোগে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ