Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লালমনিরহাটে তিস্তা-ধরলার ভাঙ্গনে পাচঁ শতাধিক বসতবাড়ি বিলিন, দুর্ভোগে বানভাসীরা

লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০২২, ৭:১২ পিএম | আপডেট : ৮:৩৭ পিএম, ২১ জুন, ২০২২

ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢালে তিস্তার ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লালমিনরহাটে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত ৫দিন ধরে পানিবন্দি থাকা এসব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে বহুগুনে। এদিকে পানির তীব্র ¯্রােতে গত ৩ দিনে তিস্তা- ধরলা অববাহিকায় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি। পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন বাঁধে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। হাতিবান্ধার গড্ডিমারি গ্রামের বৃদ্ধ শমসের আলী ইনকিলাবকে বলেন, চোখের পলকে তিস্তায় ভেসে গেল আমার ঘরবাড়ি । কিছুই রক্ষা করতে পারলাম না । একই কথা বললেন, চর সির্ন্দুনার মজিবর, সালেক, শাহা আলী, আ: হামিদ সহ বেশ কয়েকজন । তিস্তার তীব্র ¯্রােত ভেসে নিয়ে গেছে তাদেও বসত বাড়ি ।

হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ২ নং ও ৩ নং ওয়ার্ডের চর সিন্দুর্না এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। গত ৩ দিনে প্রায় ৫০ টি পরিবার নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। উপজেলার চরসিন্দুর্না গ্রামের জরিনা খাতুন(৪০) জানান,তিস্তার পানি এসে ঘরবাড়ির সবকিছু ভেসে গেছে। কিছু মালামাল আটক করে নৌকায় করে এপারে নিয়ে এসেছি। মুরগি ছাগল সবকিছুই ভেসে গেছে। জায়গা জমি নাই। স্থানীয় হাটখোলায় বাজারে মানুষের জমিতে আশ্রয় নিয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নিবার্হী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান নদী ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত তিনদিনে তিস্তা- ধরলায় ৫’শ ৪৩টি ঘরবাড়ি বিলিন হয়েছে । ভাঙ্গনরোধে জিও ব্যাগ ফেলানো হচ্ছে । অন্যদিকে পানিবন্দি পরিবারের গুলোর মাঝে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির ও খাবারের তীব্র সংকট ।
মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে জেলার হাতীবান্ধার দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫২.৮৪ সেন্টিমিটার যা বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্বাভাবিক( ৫২.৬০) সেন্টিমিটার। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদ দৌলা সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে ধরলা নদীর পানি শিমুলবাড়ি পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সে. মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী,দোয়ানী,ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,কালমাটি,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ,কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি,রাজপুর,গোকু-া ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর বলেন, বন্যা কবলিত জেলার পাঁচ উপজেলায় ১৫০ মেঃ টন চাল,১২ লাখ ৭০ হাজার টাকা,শুকনো খাবার ও শিশু খাদ্য বরাদ্দ হয়েছে তা বিতরণ কার্যক্রম শেষের দিকে। বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদ দৌলা বলেন, তিস্তার পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটর উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, পানি আরো বাড়বে। তিনি বলেন, তিস্তাপারের মানুষদের নিরাপদ স্থানে থাকার জন্য বলা হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ