নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গত ২৭ জানুয়ারি মিরপুরে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ফিল্ডিংয়ের সময় আঙুলে পাওয়া আঘাত যে এতটা ভোগাবে, সেটা ভাবতেও পারেননি সাকিব আল হাসান। গোটা বাংলাদেশই কী ভাবতে পেরেছিল, তাকে ছাড়া এতটা অসহায় হয়ে পড়বে দল! সেটা ঠিকই টের পেয়েছিলেন বলেই নিদাহাস ট্রফিতে শুরু থেকেই খেলতে চেয়েছিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তবে বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগেই আঙুল ফুলে-টুলে কিছুটা জটিলতা দেখা দেয়। সে কারণেই থাইল্যান্ডে পরীক্ষা করাতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই জানতে পারেন, ফিরতে দেরিই হবে তাঁর। এরপর বসে থাকেননি। একবার শ্রীলঙ্কায় গেলেও সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া যান। দুঃসময় কেটে গেছে। এখন তিনি মাঠে ফিরতে প্রস্তুত। আর সেটা আজই হতে পারে বলে নিশ্চিত করেছে দলের একাধিক সূত্র।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের অলিখিত ফাইনাল খেলতে গতকাল বিকেলেই শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেছেন সাকিব। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রাউন্ড রবিন লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে তাঁর খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিসিবি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিকিৎসক দেবাশিস চৌধুরীও জানিয়েছেন, ‘পুরোপুরি সুস্থ হয়েই কলম্বো যাচ্ছেন সাকিব।’
চোট থেকে সেরে না উঠলেও শ্রীলঙ্কায় ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে শুরুতে রাখা হয়েছিল সাকিবকে। পরে বিসিবি জানায় টুনামেন্টে খেলা হচ্ছে না নিয়মিত অধিনায়কের। তার অনুপস্থিতিতে দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাঠে একজন জেনুইন অলরাউন্ডারের অভাব খুব করে টের পেয়েছে বাংলাদেশ দল। হয়তো আজকের ম্যাচে সেই অভাব আর টের পাবেনা টাইগাররা। তাতে হতাশা থাকলেও দলকে অনুপ্রাণিত করতে টুর্নামেন্টের শুরুতে শ্রীলঙ্কা গিয়েছিলেন সাকিব। সেখান থেকেই চোট পাওয়া আঙুলের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে যান অস্ট্রেলিয়ায়। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আবার ফেরানো হলো অধিনায়ককে। এই একটি ফেরা এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রেকর্ডগড়া জয়ের পর বদলে গেছে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমও। আজ তাই ফাইনালের টিকিট হাতে পেতেই মুখিয়ে কোচ অধিনায়ক।
আগের দিন ম্যাচ থাকায় গতকাল অনুশীলন ছিল না বাংলাদেশের। সকালটা তাই ছিল অনেকটাই ম্যাড়মেড়ে। বিসিবির সাকিবের ফেরার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি হঠাৎই ছড়িয়ে দেয় উত্তেজনার দাবানল। প্রশ্ন উঠলো, ‘খেলবেন তো সাকিব’? সংবাদ সম্মেলনে আসবার ফাঁকে সেন্টার উইকেটে চোখ বুলিয়ে এসেছেন কোর্টনি ওয়ালশ। জানিয়েছেন, মাঠে সেরা তারকার ফেরার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরও পেয়ে যাবে সকলে। সাকিবের ফেরার খবর জানানোর ঘণ্টাখানেক পর সংবাদ সম্মেলনে এসে ওয়ালশ জানালেন, তারা সাকিবকে ফিরে পেতে মানসিকভাবে প্রস্তুতই ছিলেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আমরা আশা করছিলাম যে ওকে পাব। এখানে এসেছিলও, খেলতে পারেনি। তবে দলের অংশই ছিল। আমরা জানতাম যদি চোট কাটিয়ে উঠতে পারে, যদি সুযোগটা আসে, যে কোনো সময়ই সাকিব ফিরবে। ফিট সাকিবকে দলে স্বাগত জানাতে আমরা প্রস্তুতই ছিলাম। সবাই জানত। এটা নিয়ে বেশি ভাবনার কিছু দেখছি না।’
যদি সাকিব খেলেন, সেক্ষেত্রেও থাকবে কিছু প্রশ্ন। নিয়মিত অধিনায়ক ফিরলে হয়তো নেতৃত্বও দেবেন তিনি। সেক্ষেত্রে দলের ধারাবাহিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা। হুট করে এসে এই টুর্নামেন্টে দলের পরিকল্পনা, ভাষা, এসবের সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন। যদিও সাকিব নতুন কেউ নন, তবু কিছু সংশয় জাগতে পারে। ওয়ালশ যদিও কোনোরকম সংশয়ের কিছুই দেখছেন না, ‘সংশয়ের জায়গা নেই। সে যদি খেলার মতো অবস্থায় থাকে, তাহলে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব দলের জন্য কোনটি ভালো হবে। যেটাই করি না কেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভালোর স্বার্থে করা হবে। কেবল ফিট হলেই ওকে বিবেচনা করা হবে। সংশয়ের কিছু নেই।’
একদিকে যেমন নির্ভার বাংলাদেশ কোচ, ঠিক তার উল্টো চিত্র শ্রীলঙ্কা শিবিরে। ওয়ালশের পর সম্মেলন কক্ষে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পা দেবার সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন, ‘সাকিব যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশ দলে, খবরটা শুনেছেন?’ হাসলেন লঙ্কান কোচ। বললেন, ‘আমি সেটা জানি।’ প্রতিপক্ষ দলে বড় অস্ত্র যোগ হচ্ছে, হাথুরু তো জানবেনই। কিন্তু হঠাৎ বাংলাদেশ দলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার যোগ হওয়ায় নিজেদের প্রস্তুতি, কৌশলে নিশ্চয়ই বদল আনতে হচ্ছে শ্রীলঙ্কা দলকে। সাকিবকে নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনা সাজাতে একটু কি কঠিন হচ্ছে হাথুরুর? ‘আমরা জানি, ও খুব ভালো একজন খেলোয়াড়। সাকিব এলে ওদের সুবিধা হবে। সমন্বয়ে বদল আনতে পারে। চাইলে একজন ব্যাটসম্যান বেশি খেলাতে পারবে, চাইলে একজন বোলারও। আমরা শুধু সাকিবকে কীভাবে মোকাবিলা করতে পারি, সেটা নিয়ে ভাবছি। কীভাবে ওর ৪ ওভার ভালোভাবে সামলানো যায়, ওর ব্যাটিংয়ের সময় কীভাবে বোলিং করতে পারি, সেটাই ভাবছি।’
সাকিব থাকা মানে বাংলাদেশ দলের একসঙ্গে তিন খেলোয়াড় পাওয়া! ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই দুর্দান্ত এমন খেলোয়াড় যে দলে থাকবে, তাদের যেমন আত্মবিশ্বাস বাড়াবে, মনস্তাত্তি¡ক একটা চাপ থাকবে প্রতিপক্ষের ওপরও। তবে হাথুরু মনে করেন না, সাকিবের যোগ হওয়াটা বাড়তি চাপ তাঁদের জন্য, ‘অগেই বলেছি, দুই দলের মধ্যে এমন কিছু জানার আর বাকি নেই, যা দিয়ে কেউ মনস্তাত্তি¡ক খেলা খেলবে বা ট্রাম্প কার্ড ব্যবহার করতে পারবে! যা বলতে পারি, যদি সাকিব অর্ধেক ফিটও হয়, তাহলে এটা তাদের ডেস্পারেট অ্যাটেম্পট। আর সে যদি ফিট হয়, তাহলে ওদের সুবিধা। সবাই জানি, সে (অলরাউন্ড) র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর খেলোয়াড়।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।