রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন খ্যাত খুলনা-১ আসনে মনোনয়ন নিয়ে নয়া মেরুকরণ হচ্ছে। মনোনয়ন তালিকায় পাঁচজনের নাম জোরেশোরে উচ্চারিত হলেও প্রত্যাশীদের অন্যতম দাকোপ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেন রয়েছে শীর্ষে। ভোটের হিসাব-নিকাশে এমনই আভাস দিয়েছে দলের সাথে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী নির্ধারিত থাকলেও তাকে কুপোকাত করতে এই কৌশল নিতে পারে দলের নীতি নির্ধারকরা। এ ছাড়া এই আসনে জাতীয় পার্টি ঝোঁপ বোঝে কোপ মারার জন্য ঘাঁপটি মেরে বসে আছে। সব মিলিয়ে এ আসনটি হয়ে উঠতে পারে হেভিওয়েটের লড়াই।
দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে খুলনা-১ আসন গঠিত। এ আসনের আ.লীগের প্রার্থী হিসেবে বটিয়াঘাটার সন্তান খুলনা জেলা আ.লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং এই আসনের আ.লীগের টিকিটে দুইবার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য শেখ হারুনুর রশীদ প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। প্রবীন এই রাজনীতিক রাজনীতির শেষ সায়াহ্নে আর একবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। এই আসনে বর্তমান এমপি পঞ্চানন বিশ্বাস এবং সাবেক এমপি ননী গোপাল মন্ডল বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোট রাজনীতির মাঠে দুইবার খেলেছেন। কিন্তু দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে কখনোই বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন না বলে জনতার মঞ্চে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন জেলা আ.লীগের কান্ডারী শেখ হারুনুর রশীদ।
এ ছাড়া বটিয়াঘাটা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম খান নিজেকে খুলনা-১ আসনের প্রার্থী হিসেবে শক্ত মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি আগেভাগে থেকেই নির্বাচনী এলাকায় তোরণ নির্মাণ, প্যানা, ফেস্টুন, ব্যানার ইত্যাদি দিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন। বটিয়াঘাটা আ.লীগের সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করেছেন তিনি।
অপরদিকে, দাকোপ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও দাকোপ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ আবুল হোসেন দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ে পিছিয়ে নেই। দাকোপের অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার, পৌর মেয়রসহ উপজেলা আ.লীগের ৯০ শতাংশ নেতাকর্মী তার পক্ষে রয়েছে। কিন্তু দাকোপ উপজেলার সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি ননী গোপাল মন্ডল বিগত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে দলে ফিরে এলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সব কমিটি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বর্তমানে তার ঘোরবিরোধী। ননীগোপাল মন্ডল এই আসনের এবারের দলীয় টিকিট প্রত্যাশী। দলের টিকিট না পেলে তিনি আবারো বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন। ভোটের হিসেবে বিগত দিনের তুলনায় এবার বিএনপির ভোট বেড়েছে। সে কারণে মনোনয়নের ক্ষেত্রে আ.লীগ কৌশলী না হলে আ.লীগের ঘাঁটিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া দাকোপ উপজেলার ভোটেই আ.লীগের প্রার্থী বিজয় নিশ্চিত হবে, এমন হিসাব-নিকাশ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তা ছাড়া আ.লীগ বিএনপির বাইরে নির্দলীয় মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক বিজয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ ভ‚মিকা রাখবে। সে ক্ষেত্রে শেখ আবুল হোসেনকে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে আ.লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা খুলনা-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে এ আসনটি ছেড়ে দিলে খুলনা জেলা আ.লীগ সভাপতি ও সাবেক এমপি শেখ হারুনুর রশীদকে উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু পঞ্চানন বিশ্বাস টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন। তিনি আ.লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদের দ্ব›দ্ব মেটাতে শেখ পরিবারের সদস্যরা এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে এ আসনটির ভোটের লড়াইয়ে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র ও প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ জুয়েল কিংবা শেখ সোহেলের আগমন ঘটতে পারে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রেস সচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় এই আসনের একমাত্র জাপার প্রার্থী। তিনি গত নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির টিকিটে ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তবে তিনি বিভিন্ন স্থানে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, জাতীয় পার্টি এবং আ.লীগ আগামী নির্বাচনে যদি মোর্চা গঠন করে তাহলে এই আসন জাপাকে দিতে হবে এবং তিনি নির্বাচন করবেন। সে ক্ষেত্রে এই আসনের জন্য এটিও একটি চমক হতে পারে।
এ ছাড়া বিএনপির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বটিয়াঘাটা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমীর এজাজ খান বিএনপির টিকিটে বিগত দু’টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এবারো তিনি এই আসনের বিএনপির একমাত্র শক্ত প্রার্থী। আ.লীগ উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচনে ব্যার্থ হলে আ.লীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিত খুলনা-১ আসনের চিত্রটি এবার বদলে যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।