Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিরপুর ১২ নম্বরে বস্তিতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ২ হাজার ঘর

প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১৩ এএম, ১৩ মার্চ, ২০১৮

রাজধানীর মিরপুর ১২নম্বরের বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২হাজারের অধি ক ঘর পুড়ে গেছে। গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুড়ে যায় হাজারো ঘর। আগুনের দাপটে ঘর থেকে খুব বেশি কিছু সরানোর সুযোগ পায়নি বস্তিবাসী। ঘটনার পর থেকে গতকাল সোমবার সকাল সাতটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। অগ্নিকান্ডের কারন ও ক্ষতির পরিমান র্নিনয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বস্তির উত্তর দিক থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। কিছুক্ষণের মধ্যে দক্ষিণা বাতাসের তা ক্রমেই দক্ষিণ দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থনীয়রা আগুন ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে একপাশের কিছু ঘর ভাঙার চেষ্টা করলেও এতে লাভ হয়নি। আগুনের কারণে পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ধোঁয়ার কারণে ভেতরের দিকে যেতে পারেনি। জানা যায়, বস্তিটি ৭০ বিঘা জমি জুড়ে বিস্তৃৃত। এখানে কমপক্ষে সাত থেকে আট হাজার ঘর রয়েছে। কমপক্ষে ২৫ হাজার লোক বসবাস করেন এ বস্তিতে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লা জানিয়েছেন জানান, বস্তি অনেক ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। এসব ঘরে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি মানুষ থাকতো। আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। বস্তিবাসীর দাবি, নাশকতা করে কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তবে ইলিয়াস মোল্লার দাবি, এটা নাশকতা নয়, দুর্ঘটনা। তিনি বলেন, আমার একটি নির্মাণাধীন মার্কেটের সাতটি ফ্লোরে যাদের ঘর পুড়েছে তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ততক্ষণ তারা এখানে থাকবে। আমি তাদের খাবারের ব্যবস্থাও করবো।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিরপুর ১২ নম্বরের প্রায় ৭০ বিঘা জমির ওপর চারটি বস্তিটি ছিল। এগুলো হলো- হারুনাবাদ, কবির মোল্লা, সাত্তার মোল্লা ও নাগর আলী মাতব্বর বস্তি। মূলত সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার বাবা-চাচাদের জমিতে ৭৬ সাল থেকে এই বস্তি গড়ে ওঠে। ৩৫ বছরের পুরনো এ চার বস্তিতে ৫হাজার ঘর ছিল। এখানে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস করতো।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আরো জানান গেছে, যারা এই বস্তিতে আগে এসেছেন, তারা অনেকেই একাধিক ঘর আছে। প্রত্যেকের গড়ে ৮/১০ টি ঘর আছে। বাঁশ, টিন, কাঠ ও কংক্রিটের খুঁটি দিয়ে ঘরগুলো তৈরি। নিজেরা থাকার পাশাপাশি বাকি ঘর তারা ভাড়া দেয়। বস্তির জমির মালিকরা সেই ভাড়ার টাকার একটা অংশ পায় বলে দাবি করেছেন বস্তিবাসীরা।
ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) শাহিদুজ্জামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরিতে আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন। তালিকার পর প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, রোববার দিবাগত রাত ৪টার দিকে আগুন লাগে বস্তিতে। আগুন লাগার পর মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বস্তিতে। বস্তির বেশিরভাগ লোক গার্মেন্টে কাজ করে। তাই প্রায় সবার ঘরেই ঝুট এবং প্রচুর পরিমাণে দাহ্য বস্তু ছিল। ফলে আগুন খুব দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ২১টি ইউনিট কাজ করে সোমবার সকাল ৭টা ২২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা সাংবাদিক সমবায় সমিতির নির্বাহী কমিটির সদস্য জামাল উদ্দিন বারী জানান, এই বস্তিতে ঢাকা সাংবাদিক সমবায় সমিতির ২২ বিঘা জমি রয়েছে। সাংবাদিক সমিতিরি জমিতে বস্তিঘর তৈরি করে ভাড়া তোলছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাশকতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ