Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জঙ্গি হামলা ও নাশকতা রোধে মাঠে থাকবে সোয়াট

প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আজ প্রশিক্ষণ শেষ হচ্ছে পুলিশের বিশেষ টিমের
স্টাফ রিপোর্টার : আজ প্রশিক্ষণ শেষে গোয়েন্দা পুলিশের সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টিম স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাক্টিকস (সোয়াট) এলিট ফোর্স মাঠে নামছে। ইউরোপ ও আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোর আদলে অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ মাঠে থাকবে জঙ্গি দমনে। যেসব অভিযান সাধারণত পুলিশের পক্ষে পরিচালনা করা সম্ভব নয়, সেসব ঝুঁকিপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনায় থাকবে সোয়াট টিম। কোনো হাই-প্রোফাইল ব্যক্তি সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি হলে বা বড় ধরনের জঙ্গি হামলা হলে আক্রান্তদের উদ্ধার এবং সন্ত্রাসী বা জঙ্গিদের গ্রেফতার করতে বিশেষ অভিযান চালাবে এ সোয়াট টিম। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশের সূত্র জানায়, জিম্মি উদ্ধার ও জঙ্গি দমনে ‘ক্রিস সুপার ভি সাবমেশিনগান’সহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে আজ নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষ হচ্ছে। সমাপনী অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত থাকবেন।
সোয়াটকে শক্তিশালী টিম গড়তে ইতোমধ্যেই ২০০টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র (ক্রিস সুপার ভি সাবমেশিনগান) ও ৫০ হাজার রাউন্ড গুলি দেয়া হয়েছে। এ অস্ত্রগুলো তুলনামূলক হালকা ও সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় তা জনবহুল জায়গায় অপারেশনের কাজে ব্যবহার করা হবে। আর এই অস্ত্রের সঙ্গে আমেরিকা থেকে কারবাইন রাইফেল, ব্লক সেভেনটিন পিস্তল এবং রাইফেলসহ বিপুল অস্ত্র এসেছে। এ ছাড়া, ১২ কোটি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে দু’টি সোয়াট ভ্যান (অত্যাধুনিক বুলেট প্রুফ ভ্যান)। এই সোয়াট ভ্যানের চাকা গুলিবিদ্ধ হলেও তা ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ অতিক্রম করতে পারবে নির্বিঘেœ। জিম্মি উদ্ধারসহ অপারেশন চালানোর কাজে এই গাড়ি ব্যবহার করা হবে।
সূত্র মতে, বর্তমানে সোয়াট টিমের সদস্য সংখ্যা ৫০ জন। আরো বেশকিছু পুলিশ সদস্যকে উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সোয়াটকে পৃথক একটি ব্যাটালিয়ন হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সোয়াট টিমের ৫০জন সদস্য ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র স্টেট ডিপার্টমেন্টের এন্টি টেররিজম অ্যাসিসট্যান্ট প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এ ছাড়া সোয়াট টিমের সদস্যরা দেশীয় ট্রেনিংও নিয়েছেন। সোয়াটের ২০ সদস্যের একটি টিম সিলেটের স্কুল অব ইনফরমেটি অ্যান্ড ট্রেকটিসে প্রশিক্ষণ নেন। সেখানে সেনাসদস্যরা তাদের হেলিকপ্টার রেপলিংবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। আর হাইরাইজ ভবনে অপারেশন চালানো বা অগ্নিকা-ে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে এই ট্রেনিং কাজে লাগবে বলে জানিয়েছেন সোয়াটের প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা।
বাংলাদেশে এই সোয়াট টিম গঠনের জন্য ২০০৮ সালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বাঁছাই করা ২৪ জনের একটি টিমকে বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য আমেরিকা পাঠানো হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ শেষে আমেরিকার পক্ষ থেকে এই টিমের জন্য প্রায় ১২ কোটি টাকা মূল্যের অত্যাধুনিক অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মূল্যবান সরঞ্জাম দেয়া হয়। এরপর ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা দেশে ফিরে সোয়াট নামে গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট গঠন করে। বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান পরিচালনা করতেই এ টিম গঠন করা হয়। এরপর রাজধানীর বেশ কয়েকটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে জিম্মি উদ্ধারসহ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধারসহ জঙ্গিদের গ্রেফতার করে এ টিম। শুরুতে এর সদস্য ২৪ জন থাকলেও এখন অর্ধশত সদস্য রয়েছেন।
জিম্মি ব্যক্তিকে উদ্ধার, জঙ্গি হামলা মোকাবেলা ও ছিনতাইকৃত বিমান উদ্ধার-সংক্রান্ত সোয়াট টিমের সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিলেও গত ৬ বছরে এই টিম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, পহেলা বৈশাখ এবং বিজয় দিবসসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের অনেক প্রশংসাও কুঁড়িয়েছে এই সোয়াট টিম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জঙ্গি হামলা ও নাশকতা রোধে মাঠে থাকবে সোয়াট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ