মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত অর্ধ শতাব্দির বেশি সময় ধরে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা উষ্ণ নয়। এর কারণও সবার জানা। কিন্তু দেশ দুটির সম্পর্কের এই টানাপড়েন কেন টিকে আছে এবং এর অবনতিতে মিডিয়ার ভূমিকাটি কী- তা নিয়ে খুব কমই আলোচনা হয়। অনেক সময় উত্তেজনাপ্রিয় মিডিয়া ‘ভুয়া’ খবর প্রচার করে। তারা জাতীয়তাবাদী চেতনা উষ্কে দিতে প্রেক্ষাপটের বাইরে গিয়ে উদ্ধৃতি দেয়, বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করে এবং নিরর্থক অনুমিতি তুলে ধরে। প্রতিবেশী দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মিডিয়ার এই ভূমিকাটি চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন দুই দেশের দুই অভিজ্ঞ সাংবাদিক তাদের ‘মিডিয়া এট ওয়ার্ক ইন চায়না এন্ড ইন্ডিয়া’ বইয়ে। তাদের একজন আনান্তু কৃষ্ণান আগে দি হিন্দুতে কাজ করতেন, এখন ইন্ডিয়া টুডে’র সঙ্গে যুক্ত। আর, তাং লু যুক্ত শিনহুয়া বার্তা সংস্থার সঙ্গে। ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা টিকিয়ে রাখতে মিডিয়ার ভূমিকাটি তুলে ধরেন তারা, ব্যাখ্যা করেছেন এর পেছনের কারণগুলো। ‘ম্যাসেজিং এন্ড মিসপারসেপশন ইন ইন্ডিয়া-চায়না রিলেশন্স: রিডিং দ্য টি লিভস’ শীর্ষক নিবন্ধে কৃষ্ণান বলেন, চীনের ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ ও বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ভারতের মিডিয়া ও কৌশলগত বিশ্লেষকদের অক্ষমতা ও বিভ্রান্তি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌছেছে। তিনি বলেন, এটা এমন এক সীমাবদ্ধতা যা ভারত ও চীনের সম্পর্ক রূপদানকারী মূল ধারার চিন্তাভাবনাকে বিকৃত ও মারাত্মকভাবে সীমিত করে ফেলছে। তিনি আরো বলেন যে, নয়া দিল্লি ও বেইজিং উভয় দিক থেকে একটি কার্যকর গণকূটনীতির সাড়াদানের ব্যর্থতা সমস্যাটিকে জটিল করে তুলেছে। বলিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক রিপোর্টিং-এর অভাবে হিমালয়ের উভয় পাশের মিডিয়ায় ভুল ব্যাখ্যা, হুশিয়ারিমূলক বক্তব্য ও ফুলিয়ে ফাপিয়ে সবকিছু তুলে ধরার প্রবণতা দেখা যায়। কৃষ্ণান ২০০৯ সালে চেন্নাই ভিত্তিক চায়না স্টাডিজ সেন্টারে ‘চায়নিজ স্টাটেজিক প্লান টু ব্রেকআপ ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন’ শীর্ষক নিবন্ধে এর কিছু উদাহরণ দেন। ভারত-চীন সীমান্ত আলোচনার ঠিক আগে ওই নিবন্ধে একটি অস্পষ্ট চীনা অনলাইন ফোরামের বরাত দিয়ে বলা হয় যে উপরে উল্লেখিত বক্তব্যটি চীনের সরকারি দৃষ্টিভঙ্গী কারণ ওই ফোরামটি একটি সরকারি থিংক-ট্যাংকের সঙ্গে যুক্ত। যেমনটা অনুমান করা গিয়েছিলো, ভারতীয় মিডিয়ায় এই হুমকি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত সরকার বলতে বাধ্য হয় যে ওই বক্তব্যটি চীনের সরকারি দৃষ্টিভঙ্গী নয়। কিন্তু ততদিনে ভারত-চীন সম্পর্কে যতটা ক্ষতি হওয়ার দরকার ছিলো তা হয়ে গেছে এবং সীমান্ত আলোচনা বিপন্ন হয়ে পড়ে। কৃষ্ণান যে বøগারের নাম: ঝংঘু ঝান লিউ উল্লেখ করেছিলেন তাও ছিলো ভুল। পরে টাইমস অব ইন্ডিয়া স্বীকার করে যে অনলাইনটি কোন সরকারি থিংক ট্যাংকের সঙ্গে যুক্ত ছিলো না, আর ব্লগারের নামটিও ছিলো ছদ্মনাম, যার মানে হলো ‘চীনা কৌশলবিদ’। ভারতে যারা চীনকে নিয়ে লেখালেখি করেন তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো চীনা ভাষার ওপর কম দখল। কৃষ্ণান উল্লেখ করেন যে, ভারতীয় নেটিজেনদের মতো চীনেও কোটি কোটি নেটিজেন রয়েছে। তারা খুবই সক্রিয় এবং তাদের এজেন্ডা ও মতামতও বিচিত্র। তাই যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের ‘চীনা ওয়াচাররা’ এসব নেটিজেনের বক্তব্যকে পাত্তা দেন না। কিন্তু ভারতে বিশ্বাস করা হয় যে চীনের ওয়েবসাইট বা পত্রিকায় যা প্রকাশিত হয় তার সবই সরকারি মনোভাব। বেইজিং-ভিত্তিক এই ভারতীয় সাংবাদিকের মতে চীনা রাজনীতি এখনো অস্বছ হলেও দেশটির তথ্যের ল্যান্ডস্কেপ আমূল বদলে গেছে। সরকারি প্রকাশনার বাইরেও হাজার হাজার প্রকাশনা রয়েছে যেগুলো সরকারের অভিমতের প্রতিফলন নয়। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।