Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারো উত্তপ্ত ক্যান্ডি

অমিত জীবন বীরসিংহসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৮১ জনকে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আবারো উত্তপ্ত হচ্ছে শ্রীলঙ্কার পাহাড়ি পর্যটক শহর ক্যান্ডিতে। নতুন করে পুড়ছে মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রেসিডেন্ট মৈত্রী পালা সিরিসেনা গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের হাত থেকে আইন-শৃঙ্খলা দপ্তর সরিয়ে নিয়েছেন। গত বুধবার জরুরি অবস্থা জারি করেও সিংহলি বৌদ্ধ এবং মুসলিমদের মধ্যে সংঘর্ষ পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। ব্যাপক হারে সেনা মোতায়েন করা সত্তে¡ও সংঘর্ষ চলছে। এখনও বন্ধ রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ । সংবাদমাধ্যমের দাবি, সেনা টহলের মধ্যেই এ দিন ধর্মীয় স্থানগুলো লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়েছে। মুসলিম-বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেওয়ায় গত বৃহস্পতিবার সন্দেহভাজন এক নেতা অমিত জীবন বীরসিংহসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ৮১ জনকে।
পুলিশ মুখপাত্র রোয়ান গুনাছেকেরা জানান, এই বিক্ষোভের মূল পান্ডা অমিত জীবন বীরসিংহের মাশন বালাকাইয়া একটি গ্রুপ রয়েছে যে গ্রুপ থেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণাত্মক বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশ করেছে। তার বিরুদ্ধে দাঙ্গা এবং প্ররোচনামূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে
এখনও পর্যন্ত দাঙ্গার জেরে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। অগ্নিকান্ডর মধ্যে পড়ে দমবন্ধ হয়ে প্রাণ হারান এক জন। গ্রেনেড বিস্ফোরণে নিহত হন আর এক জন। ক্যান্ডি জেলা জুড়ে অন্তত ৪৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পুলিশের। দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট আইনশৃঙ্খলা দফতর হস্তান্তর করেছেন। যদিও মাত্র ১১ দিন আগে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিংহকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। গতকাল বিক্রমসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টিরই প্রবীণ নেতা রঞ্জিত মাদ্দুমা বান্দারাকে পুলিশমন্ত্রী করা হয়েছে। তার পরেই পুলিশ তড়িঘড়ি আটক করে অমিত জীবন বীরসিংহকে।
গতকালই ক্যান্ডি গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। গত রাত থেকে পুলিশকে সাহায্য করতে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় চলতে থাকা দাঙ্গার নিন্দা করেছে জাতিসংঘ। যত দ্রত সম্ভব পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আর্জি জানিয়েছে তারা। বিশ্লেষকরা জানান, দেশটির তিন দশকের যুদ্ধের অবসানের পর থেকে বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী ও মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বৌদ্ধদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সন্ন্যাসী বোদু বালা সেনা। বৌদ্ধ এ সন্ন্যাসীর সঙ্গে মায়ানমারের কট্টরপন্থী উগ্র বৌদ্ধ গোষ্ঠীগুলোর সম্পর্ক রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রপের গবেষক আলান কিনান বলেন, শ্রীলঙ্কা এখন খাঁদের কিনাড়ে। এ হামলা সুসংগঠিত এবং সু-পরিকল্পিত দাবি করে তিনি জানান, বৌদ্ধরা মুসলিমদের সহিংসতায় পরিকল্পিতভাবে উসকে দিচ্ছে; যাতে পরবর্তীতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে আরো বেশি সহিংসতা চালানো যায়। ২৭ বছর বয়সী সুকরি কাশিমের চারটি শোয়ার ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। ওয়েলেকাদার বাড়ির গ্যারেজে পুড়ে যাওয়া গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ভয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছেন তিনি। ‘আমরা নিরাপদ বোধ করছি না। আমাদের সব শিশুই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমরা জানি না কোথায় যাবো অথবা কার ওপর আস্থা রাখবো।



 

Show all comments
  • গনতন্ত্র ১০ মার্চ, ২০১৮, ১১:০৯ পিএম says : 0
    আমরা স্বার্থপর, স্বার্থের জন্য ভাইয়ে ভাইয়ে কামড়া-কামড়ি করি, সেই সুযোগে অন্যরাও কামড় মারার সুযোগ পাচ্ছে ৷ সাবধান না হলে আমাদেরকেও কামড় খেতে হবে ৷
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেপ্তার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ