Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণহত্যার প্রমাণ চায় মিয়ানমার

পালিয়ে যাওয়ারা দেশে ফিরে মূল জনস্রোতে মিশে গেলে মিয়ানমার স্বাগত জানাবে : তুন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়েছে মিয়ানমার। অভিযোগের বিপরীতে সুস্পষ্ট প্রমাণ হাজির করার আহবান জানিয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন। অবশ্য প্রমাণ হাজির করতে বললেও ঘটনা অনুসন্ধানে এখনও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে রাখাইনে প্রবেশ করতে দেয়নি সেখানকার ডি-ফ্যাক্টো সরকার। তা সত্তে¡ও স্যাটেলাইট ইমেজ এবং সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে রাখাইনের জাতিগত নিধন ও গণহত্যার আলামত পাওয়া গেছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি, ব্রিটিশ মাধ্যম গার্ডিয়ান ও রয়টার্স তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানের মাধ্যমে তুলে এনেছে রাখাইনের জাতিগত নিধনের আলামত। জাতিসংঘও জাতিগত নিধনের আশঙ্কা করছে। সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন (ইউএনএইচআরসি) ধারাবাহিকভাবে একে জাতিগত নিধন বলে আসছে। তবে নিজেদের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তে সেনা সদস্যদের যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন দাবি করেন, আরকান লিবারেশন আর্মি-আরসার ভয়েই রাখাইন থেকে লোকজন পালিয়ে গেছে। মিয়ানমারের নীতি মাফিক রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয় আড়াল করে বাঙালি মুসলমান নামে চিহ্নিত করেছেন তিনি। বলেছেন, পালিয়ে যাওয়া মানুষেরা দেশে ফিরে মূল জনস্রোতে মিশে গেলে মিয়ানমার স্বাগত জানাবে। কেউ কেউ পালিয়ে গেলেও অধিকাংশ রোহিঙ্গাই এখনও রাখাইনে অবস্থান করছে দাবি করে উপদেষ্টা বলেন, জাতিগত নিধন অথবা গণহত্যা সংঘটিত হলে তাদের রাখাইনে থাকা সম্ভব হতো না। মিয়ানমারের উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব কথা জানিয়েছে। শত শত বছর ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসছে রোহিঙ্গারা। কিন্তু বৌদ্ধ সংখ্যাগুরুর দেশ মিয়ানমার তাদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অনাবশ্যক জনগোষ্ঠী বলে বিবেচনা করে থাকে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ আখ্য দেয়। সব থেকে কম নাগরিক সুবিধা পেয়ে থাকে তারা। থাউং তুন বলেন, পুরনো বাসিন্দারা যদি জাতীয় মূল স্রোতের অংশ হতে চায় তাহলে স্বাগত জানানো হবে। উদাহরণ হিসেবে বার্মিজ ভাষা শেখার মাধ্যমে ওই আগ্রহ দেখাতে হবে। ‘যারা মিয়ানমারের নাগরিক হতে চান, তাদের স্বাগত জানাতে পারায় আমরা খুশি, তবে তাদের একটি প্রক্রিয়পার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তারা স্বয়ংক্রিয় নাগরিকে পরিণত হতে পারবেন না,’ বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার থাউং তুন বলেন, তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়শই মিয়ানমারে জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে অনেক অভিযোগ শুনতে পাই। আগেও বলেছি, এখন তা আবারও বলছি-এটা সরকারের নীতি নয়, আর আমরা আপনাদের তা নিশ্চিত করতে পারি। যদি কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে আমরা পরিস্কার প্রমাণ পেতে চাই।’ তার মতে, অভিযোগকে হালকাভাবে নিয়ে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।জেনেভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশে থাউং তুন বলেছেন, ‘রাখাইনে বসবাস করা মুসলিম সমপ্রদায়ের বড় অংশ এখনও রয়ে গেছে। যদি গণহত্যা চালানো হতো তাহলে সবাই বিতাড়িত হতো।’ খোদ মিয়ানমারের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর সা¤প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৯০ শতাংশই পালিয়ে গেছে। গত বুধবারও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান রা’দ আল-হুসেন বলেছেন, তার জোরালো সন্দেহ রয়েছে গত বছরের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনা অভিযানে গণহত্যার আলামত রয়েছে। তবে নিজেদের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তে সেনা সদস্যদের যাবতীয় অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি।



 

Show all comments
  • Badal Chowdhury ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:৩৪ পিএম says : 0
    আর কত প্রমান লাগবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Morshed Niazi Rasel ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:৩৫ পিএম says : 0
    মিছা কথা কইলো মিয়ানমার
    Total Reply(0) Reply
  • তমা ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:৩৬ পিএম says : 0
    ফাইজলামির একটা সীমা থাকা দরকার।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ