বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে পর্যাপ্ত ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নির্মিত না হওয়ায় এলাকাবাসি এখন আতঁকে ওঠে। ঘুর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের দাবী জানিয়েছেন সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় এলাকার মানুষ। তবে অনেক এলাকাবাসি দুর্যোগকালিন ও পরবর্তী করণীয় বিষয় প্রশিক্ষণ নিয়ে সচেতন হচ্ছেন। যেসব ঘুর্নিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নির্মাণ হয়েছে সেগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে উপকূলবাসী। সিডরের ১১ বছর পার হলেও তেমন গড়ে উঠেনি পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার। এতে উপকূলীয় বাসির মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। স্থানীয়দের অভিমত, সিডরের সময়ে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে এই জেলায় এতো বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তখন থেকেই উপকূলবাসীর অন্যতম প্রধান দাবি ছিল পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ।
জানা গেছে, সিডরের পর বিভিন্ন এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার হলেও এতে ধারণ ক্ষমতা অনেক কম। একটি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬-৭ শ’ লোকের ধারন ক্ষমতা থাকলেও সেখানে আশ্রয় নিতে হয় আড়াই থেকে ৩ হাজারের অধিক। ঘূর্ণিঝড় সতর্ক সংকেত ঘোষণা হলে এই শেল্টারগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। অনেকে শেল্টারে জায়গায় পান না। আবার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শেল্টার নেই। অনেকগুলো আবার রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহার অনুপযোগী। অনেক স্থানে শেল্টারে যাওয়ার রাস্তাঘাটের অবস্থা খারাপ।
সিডরের পর শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জে বেশকিছু স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে রাস্তাঘাট। সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য ট্যাঙ্কি, টিউবওয়েল, বাথরুম টয়লেটের ব্যবস্থা থাকলেও সেগুলো ব্যবহার অনুপযোগি হওয়ায় স্যানিটেশন ব্যবস্থা চরম আকার ধারন করেছে। ওই সকল সাইক্লোন শেল্টারে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। উদ্বিগ হয়ে পড়েছে অভিবাবকেরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির, তন্নী, নাজমুল বলেন, ‘ভবনে টিউবওয়েল আছে পানি নেই। আমরা স্কুলে আসার পর টয়লেটে যেতে পারি না। অন্যের বাড়ির টয়লেটে যেতে হয়। তারপর খাবার পানি খেতে পারি না’। বানিয়াখালী গ্রামের মমতারানী ও শাহানাজ বেগম বলেন, ‘আমাদের এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার কম। যা আছে তাতে সংকুলান হয় না। পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার না থাকায় আমরা দুর্যোগকালিন ও পরবর্তী করণীয় বিষয় প্রশিক্ষন নিয়েছি। আমাদের মত অনেকেই প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণ করেছে। ’
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জেজেএস এর মহড়া প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমরা ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে কাজ করছি। সিডরের পর বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় সরকারী ও বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে উপকুলিয় এলাকাবাসিকে দুর্যোগকালিন প্রস্তুতি ও পরবর্তী করনীয় বিষয় প্রশিক্ষন দিয়ে থাকি। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ প্রশিক্ষন পেয়ে সচেতন হয়েছে। দূর্যোগের বিপদ সংকেতের খবর পেলে তারা দ্রæত সাইক্লোন শেল্টারে যান। তবে মোরেলগঞ্জ ও শরনখোলা উপজেলায় আরও সাইক্লোন শেল্টার দরকার। মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল খায়ের বলেন,‘ঘুর্ণিঝড় সিডরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলাতে। এখনও পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার গড়ে না ওঠায় এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে থাকে। দ্রুত সাইক্লোন শেল্টার নির্মানের দাবী জানান তিনি’। খাউলিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিলন মীর বলেন, প্রয়োজনের তূলনায় সাইক্লোন শেল্টার এখনও অনেক কম। দ্রুত এই এলাকায় নতুন সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা দরকার। যেগুলো আছে সেগুলো সংরক্ষনের অভাবে বাথরুম নষ্ট হয়ে গেছে। আশ্রয় কেন্দ্রলোকে সংস্কার করা জরুরী’। বাগেরহাট জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে জেলায় বর্তমানে ২৩৪ টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। নতুন করে আরও ২০টি নির্মাণ করা হচ্ছে। জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যায়ক্রমে জেলায় আরও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি এসব কেন্দ্রে যেতে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সুবিধার সহ গৃহপালিত পশু-পাখি রাখার সুব্যবস্থা থাকে এখন থেকে এমন ডিজাইনে অবকাঠামো নির্মাণে জোর দেওয়া হবে’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।