Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রত্যাবাসন ঠেকাতে তৎপর রাখাইনের উগ্র বৌদ্ধরা

মংডু জেলার ছয়টি স্থানে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার সরকার

| প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে গত বছরের আগস্ট থেকে পালিয়ে এলেও এখনও ফেরত পাঠানো যায়নি একজনকেও। চুক্তি সম্পন্ন হলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এখনও শুরু হয়নি। কেউ ফিরে যাওয়ার আগেই সেখানকার রাখাইন জনগোষ্ঠীর উগ্রবাদী অংশ এর বিরোধিতা শুরু করেছে। মংডু জেলার ছয়টি স্থানে ফেরত নেওয়া রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপনের সিদ্ধান্তে সহিংসতার আশঙ্কা জানিয়েছে তারা। অরিগনভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউরোএশিয়ারিভিউ জানিয়েছে, ওই সম্প্রদায়ের পক্ষে একটি নাগরিক প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সরকারকে এরইমধ্যে তাদের আপত্তির জায়গাগুলো জানিয়েছে। রাখাইন প্রতিনিধিরা অবশ্য দাবি করছেন, তারা প্রত্যাবাসনের বিরোধী নয়, কেবল যথাযথ যাচাই-বাছাই নিশ্চিত করার পক্ষে। পালিয়ে আসার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার। মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনের মংডু জেলার ছয়টি স্থানে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার। এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান জানাতে গত ২৪ ফেব্রæয়ারি রাজধানী সিত্তেতে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এক বৈঠকে বসে রাখাইন সম্প্রদায়ের ৮০ জন নাগরিক প্রতিনিধি। বৈঠকে রাখাইনদের নাগরিক প্রতিনিধি সোয়ে নাইং বলেছেন, ওই এলাকায় ১৯৪০-এর দশক থেকেই রোহিঙ্গাদের সঙ্গে স্থানীয়দের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। ইউরোএশিয়া রিভিউকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় রাখাইন জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সেখানে পুনর্বাসিত করা হলে দুই সম্প্রদায়ের একত্রে বসবাস করা অসম্ভব।’ তিনি বলেন, ওই এলাকাটি উপকূলে অবস্থিত। সে কারণে সেখানে দেওয়াল নির্মাণ সম্ভব নয়। আর তাই বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে। সোয়ে নাইং বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে ফেরত আসা প্রত্যেককেই সরকার খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করুক। কারণ, তাদের মধ্যে অনেক যোদ্ধা রয়ে গেছে। ফলে আমরা সার্বভৌমত্ব নিয়ে শঙ্কিত।’ বিদ্বেষী প্রচারণার মধ্য দিয়ে রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেখানকার রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষের ঘৃণার চাষাবাদ হয়েছে দীর্ঘদিন। বিদ্বেষের শেকড় তাই দিনকে দিন আরও শক্ত হয়েছে। মিয়ানমারের অধিবাসী হলেও রোহিঙ্গাদেরকে বেশিরভাগ রাখাইন বৌদ্ধ বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বিবেচনা করে। সরকারের সঙ্গের বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব ও অন্যান্য অধিকারের দাবির পেছনে রাখাইনের ভূমি দখলের অন্য রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার অজুহাত তোলেন জাও উইন। দাবি করেন, জাতিগত রাখাইনদের নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গাদের রাখাইনের ভূমি দখলের রাজনৈতিক এজেন্ডায় মিয়ানমার শঙ্কিত। মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে শেষ থেকে মিয়ানমার সরকার ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কমপক্ষে ৪৫৫টি গ্রামের সব অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করে দিয়েছে। ইউরোএশিয়া রিভিউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ