মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার ২৭ ভাগ হলো মুসলিম। কিন্তু আনুপাতিক হারে এই সম্প্রদায়ের বেশ বড় একটি অংশই গরিব। এমন পর্যবেক্ষণ ভারতের প্রতিথযশা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ‘লিভিং রিয়েলিটি অব মুসলিমস ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি। এই প্রতিবেদন করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের আর্থসামাজিক অবস্থা নিয়ে। এ খবর দিয়েছে ভারতের পত্রিকা দ্য হিন্দু।
অধ্যাপক সেন আরও বলেন, ‘জীবনযাত্রার অবস্থার (লিভিং কন্ডিশন) দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা আনুপাতিক হারে বেশি বঞ্চিত ও দরিদ্র।
এই তথ্য এখন গবেষণামূলক স্বীকৃতি পেয়েছে। এ কারণেই এই প্রতিবেদন নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি ভিত্তিতে চিন্তা করার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়েছে।’
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে একাধিক অধ্যায় রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে ৬৫টিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেন মুসলমানরা। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের ওপর এখন পর্যন্ত করা সবচেয়ে বড় জরিপের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। মোট ৩২৫টি গ্রাম ও ৭৫টি ওয়ার্ডে জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। অধ্যাপক সেনের ট্রাস্ট প্রতিচি ইন্ডিয়ার সহযোগিতায় ৩৬৮টি পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে অ্যাসোসিয়েশন স্ন্যাপ ও গাইডেন্স গিল্ড নামে কলকাতা ভিত্তিক দুইটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) দাবি করেছে, তাদের সরকার ২০১১ সালের পর পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের আর্থসামাজিক উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু এই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, স্বাক্ষরতা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের দিক থেকে মুসলমানদের অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই। যেমন, পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের স্বাক্ষরতার হার রাজ্যের গড় স্বাক্ষরতার হারের চেয়ে এখনও সাত শতাংশ কম।
প্রতিবেদনের সারাংশতে বলা হয়, ‘যেসব মুসলিম পড়ালেখা বন্ধ করেছেন তাদের ৫ শতাংশ বলেছেন আগ্রহের অভাবই স্কুল থেকে তাদের ঝরে পড়ার মূল কারণ। পড়ালেখা করে ভবিষ্যতে কোনো লাভ হবে বলে তাদের মনে হয়নি।’ এসব বলা হলেও, কোনো নির্দিষ্ট দল বা সরকারি সংগঠনকে মুসলিমদের অনগ্রসরতার জন্য প্রতিবেদনে দায়ী করা হয়নি।
স্বাস্থ্যের দিক থেকেও মুসলিমদের অবস্থা ভালো নয়। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের উপাত্ত ও মাঠ পর্যায়ের জরিপ ব্যবহার করে বলা হয়েছে, যেসব ব্লকে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে, সেখানে হাসপাতাল সুবিধা কমেছে। এতে বলা হয়, ৫০ শতাংশ বা তারও বেশি মুসলিম যেসব ব্লকে বসবাস করেন, সেখানে যত শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল আছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে সেসব ব্লকে, যেখানে মুসলিমদের জনসংখ্যার হার ১৫ শতাংশের কম। এই ধরণের বৈষম্য এই বিশাল প্রতিবেদনের প্রায় প্রতিটি পৃষ্ঠাতেই তুলে ধরা হয়েছে।
দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী মুসলিমদের বিরুদ্ধে এই বৈষম্যের জন্য কাউকে দায়ী করা না হলেও, বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে এ নিয়ে রাজনীতির জল ঘোলা হতে পারে। তবে এই প্রতিবেদন নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে কিছু স্থানীয় মুসলিম রাজনৈতিক সংগঠন। রাজ্যের অন্যতম শক্তিশালী মুসলিম সংগঠন জামাতে ইসলামি-হিন্দ (জেআইএইচ) বলেছে, তৃণমূলের শাসনামলে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা ‘মোটামুটি লাভবান হয়েছে’। উল্লেখ্য, এই সংগঠনটি নির্বাচনে অংশ নেয় না বা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। জেআইএইচ-এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ প্রধান মশিউর রহমান তৃণমূলের শাসনামলে কীভাবে সংখ্যালঘুরা মোটামুটি উপকৃত হয়েছে, তা তুলে ধরেন। সরাসরি ওই প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আগের বছরগুলোর তুলনায় এখন পশ্চিমবঙ্গ সিভিল সার্ভিসে মুসলিম শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। এ বছর ২৪ জন। দ্বিতীয়ত, বাম শাসনামলে শুরু হওয়া আলিয়াহ বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সরকার ৩০০ কোটি রুপি দিয়েছে। মুসলিম মেয়েদের জন্য জেলায় জেলায় বহু হোস্টেল তৈরি করা হয়েছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।