মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : নেপালের দুই বৃহত্তম কমিউনিস্ট পার্টি-কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (ইউনিফাইড মার্কিস্ট লেনিনিস্ট) এবং কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (মাওয়িস্ট সেন্টার) একীভূত হওয়ার দীর্ঘ-প্রতিক্ষিত প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। দুই দল সাত দফা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে যেখানে মার্ক্সবাদ ও লেলিনবাদকে মূলনীতি হিসেবে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে দলের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, মাওয়িস্ট সেন্টারের নেতা প্রচন্ড এবং ইউএমএল নেতা কে পি ওলি দলের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন। এর মাধ্যমে নেপালে মাওবাদের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘটলো, যেটা দেশটির বাম রাজনীতির ইতিহাসের চমকপ্রদ অংশ ছিল। এখন সেখানে কোন আনুষ্ঠানিক কমিউনিস্ট পার্টি নেই, যেটা চেয়ারম্যান মাও সে তুংয়ের মাওবাদ দ্বারা পরিচালিত হবে।
একীভূত হয়ে কী পেলেন প্রচন্ড
ইউএমএলের সাথে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে একদিক থেকে দলের প্রধান হিসেবে নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন প্রচন্ড। এখন থেকে, তার কথাই আর দলের শেষ কথা হবে না, যেটা এতদিন হয়ে আসছিল। এখন থেকে দলের প্রভাবশালী নেতাদের মিলিত মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে। এদের মধ্যে বর্তমান ও আগের তিন প্রধানমন্ত্রী ওলি, মাধব কুমার নেপাল এবং ঝালা নাথ খানাল রয়েছেন।
আরেক নেতা বাম দেব গৌতমও কম প্রভাবশালী নন। দলে এই নেতারা বিচ্ছিন্ন অংশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। যদিও নিজের অনুগতদের নিয়েই এগুচ্ছেন প্রচন্ড, তাদের সংখ্যা দ্রæত কমে যাবে। যে বোঝাপড়া হয়েছে, সেটা হলো নতুন দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের যে সর্বোচ্চ কমিটি, সেখানে একশ জনেরও কম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থাকবেন এবং এই অনুপাতে প্রচন্ড ১৫-২০ জনের বেশি সদস্য তার দল থেকে দিতে পারবেন না।
এটা প্রচন্ডের জন্য একটা দোটানা অবস্থা কারণ যদি তিনি নতুন দলের প্রেসিডেন্টও হন এবং তিন বছর পর তাকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়, তবু সেন্ট্রাল কমিটি পরে এই বোঝাপড়া প্রত্যাখ্যান করে ওলিকে পূর্ণ মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী করে রাখতে পারে।
প্রচন্ড কিভাবে পরিস্থিতি সামাল দেন, সেটা দেখাটা একটা মজার ব্যাপার হবে। নতুন দলে কি তিনি নিজের প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন নাকি তাকে দলে অগুরুত্বপূর্ণ করে তোলা হবে, যেখান থেকে ফেরার আর উপায় থাকবে না? এই প্রশ্নের কোন সুস্পষ্ট জবাব নেই। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি তার প্রতিকূলে এবং দেখে মনে হচ্ছে এই একীভূত হওয়াকে মেনে নিয়ে প্রচন্ড আসলে নিজের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেছেন।
ইউএমএল’র অখুশী নেতাদের সাহায্য করবে এই সিদ্ধান্ত
ইউএমএলের মধ্যে এমন নেতা রয়েছেন যারা ওলিকে অপছন্দ করেন। এই অপছন্দের মাত্রা এতটাই শক্তিশালী যে তারা বহিরাগত প্রচন্ডকে দলের প্রধান মানতে রাজি। ২০১৫ সালে দলের শক্তিশালী তিনটি অংশ নেপাল, খানাল এবং গৌতমের মধ্যে বিরোধের মধ্যে মীমাংসার প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হন ওলি। তবে, তার এই পদোন্নতির সাথে ভারত কর্তৃক অনানুষ্ঠানিক অবরোধের সময় মিলে যায়। এতে জাতীয়তাবাদের প্রচারণা চালিয়ে দলে ও দলের বাইরে নিজের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেয়ে যান ওলি। নেপাল যখন শক্ত আঘাতের মুখে পড়েছিল এবং পুরোপুরি ভারতীয় পণ্যের উপর নির্ভরশীল নেপালের বাজার যখন শূণ্য হয়ে গিয়েছিল, তখন নিজেকে জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে তুলে ধরেন তিনি, যিনি এমনকি ভারতীয় চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোরও সাহস রাখেন।
ভারতের জন্য শিক্ষা
দুই দল এক হওয়ার কারণে ভারত-বিরোধী কণ্ঠস্বর আরও সোচ্চার হওয়ার সুযোগ পেলো। গত তিন বছরে, নেপালে ভারতের কর্তৃত্ব সঙ্কুচিত হয়েছে। নিজেদের দোষের কারণেই নেপালে অবস্থানের অবনতি হয়েছে ভারতের। ২০১৫ সালের অবরোধের যে ক্ষতি হয়েছে, সেটা পোষাতে বহু বহু সময় লাগবে।
বেদনাদায়ক ওই অবরোধ থেকে জনগণ বুঝতে পেরেছে যে ভারতের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরতার কি মূল্য। এই শিক্ষার কারণেই তারা বুঝতে পেরেছে যে নরেন্দ্র মোদির ভারতে ‘দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব’, ‘অনন্য সম্পর্ক’- এ ধরনের বক্তব্যের আর মূল্য নেই। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।