Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাব্য সঙ্কটে খরস্রোতা ডলুর বুকে জেগেছে চর

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে সৈয়দ জুনাঈদ মোঃ হাবিব উল্লাহঃ নাব্য সংকটে পড়েছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার এককালের খরস্রোতা ডলুনদী। এখন নদীর বুকে জেগে উঠেছে চর। মাইলের পর মাইল বালুচর আর চর। নদীর বুকে চর জেগে উঠায় নাব্য হ্রাস পেয়েছে। চির চেনা রূপ যৌবন আর লাবণ্যে ভরা এই অঞ্চল তথা সাতকানিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ নদীপথের ডলুনদী। চিরাচারিত স্বভাব পুরোটাই পাল্টে গেছে কালের পরিক্রমায়। ডলুনদীকে ঘিরে সাতকানিয়া বাসীর আশির্বাদ জড়িত। বর্ষায় যেমন এই নদী অগ্নিরূপ ধারণ করে তেমনি শুষ্ক মৌসুমেও নদীর প্রকৃতি রূপ লাবণ্যে ভরে উঠে। কালের স্বাক্ষী ডলুনদীর রয়েছে হাজার বছরের ইতিহাস। এই নদীকে ঘিরে এককালে এখানে গড়ে উঠেছিল সাতকানিয়া প্রথম মুন্সেফি আদালত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, চিম্বুক পাহাড় থেকে লোহাগাড়ার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খরস্রোতা টংকাবতী খাল ও হাঙ্গর খাল মিলে প্রমত্তা ডলুনদীর উৎপত্তি। যাহা সঙ্গুনদী হয়ে কর্ণফুলিতে প্রবেশ করেছে। ৫/৬টি ছোট-বড় খাল নিয়ে ডলুনদীকে করে তোলে চিরপ্রাণ যৌবণ। আর এই নদীতীরকে ঘিরে এই অঞ্চলে গড়ে উঠেছে প্রাচীন সভ্যতা।
এক কালে এই ডলুনদীতে ভেসে চলত নৌকা সাম্পান। তখন নদী কেন্দ্রীক যোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে ডলুনদীর তীরে গড়ে উঠেছিল সাতকানিয়ার প্রথম মুন্সেফি আদালত। তখন মানুষজন ও ব্যবসায়ীরা নৌকা করে সওদা নিয়ে একস্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়ত করত। কিন্ত আজ সেই চিত্র আর নেই। নদীর উজানে অব্যহত বৃক্ষ নিধন, বালু আহরণ, পাহাড়ী এলাকায় বসতী স্থাপন মাঠি ক্ষয়ের কারণে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। তাই এই জনপদের সভ্যতা সৃষ্টিকালীন ডলুনদীর সর্পিল গতি ক্রমশ বয়ে সাঙ্গু নদী হয়ে কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান এই অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে ডলু নদীর রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। নদী তীরের মানুষ কৃষি কাজ এবং মাছ স্বীকার করে তাদের জীবিকা নির্বহ করত।
এখন সেই নদী জেলে শূন্য। সবই যেন এখন শুধুই স্মৃতি। বৃদ্ধ রমজান আলী জানান, অতীত স্মৃতির দৃশ্যগুলো এখন আর চোখে পড়ে না। তিনি বলেন, এককালে নদী ছিল গভীর। গোসল করতে গেলে সাতার কাটতাম। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে সবাই মিলে নদী তীরে লাকড়ি ধরার উৎসব পালন করতাম। স্থানীয়দের মতে, একশ্রেণীর লোভী মৎস স্বীকারী জেলেরা উপজেলা মৎস বিভাগের দায়িত্ব অবহালাকে পুজি করে। নদীতে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ করে। প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ব্যবহার করে মাছ স্বীকার করায় ডলুনদীর মৎস সম্পদের বিলুপ্তি ঘঠেছে। এ বিষয়ে স্থানীরা কতৃপক্ষের যথাযথ দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চর


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ