পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠতার কারণে দৈনিক ইনকিলাব মানুষের মন জয় করতে পেরেছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও ইনকিলাব স্বকীয়তা বজায় রেখে চলেছে। দৈনিক ইনকিলাব সত্য প্রকাশে অবিচল। দিনের শেষে সত্যেরই জয় হয়। ভবিষ্যতেও ইনকিলাব নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখবে আমি আশাবাদী। তিনি বলেন, সুযোগ্য সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দৈনিক ইনকিলাব আরও এগিয়ে যাবে। সিটি মেয়র গতকাল (মঙ্গলবার) নগরীর নূর আহমদ সড়কের সিএমইউজে মিলনায়তনে দৈনিক ইনকিলাব চট্টগ্রাম ব্যুরোর আওতাধীন জেলা, উপজেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের বার্ষিক সম্মেলন-২০১৮ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। দিনব্যাপী আয়োজিত বর্ণাঢ্য এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা ও চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শফিউল আলম। এ অঞ্চলের ইনকিলাব সংবাদদাতাদের স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি এবং আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের অংশগ্রহণে সম্মেলনস্থল মিলনমেলায় পরিণত হয়।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আরও বলেন, সংবাদপত্র সমাজের দর্পন, জাতির বিবেক। বর্তমানে দেশের যতটুকু অর্জন তার পেছনে রয়েছে সংবাদপত্র তথা মিডিয়ার কার্যকর ভূমিকা। সংবাদপত্রের গঠনমূলক সমালোচনা একটি জাতিকে পথ দেখাতে সহযোগিতা করে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সংবাদপত্রের ভূমিকা অপরিসীম উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমরা যে মত বা আদর্শের বিশ্বাসী হই না কেন জাতীয় স্বার্থে আমাদের এক হতে হবে। তাহলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। যে ইস্যুতে গণমাধ্যম যত বেশি সোচ্চার সে সমস্যা সঙ্কট তত বেশি দ্রæত সমাধান হয়। নীতি-নির্ধারকেরা গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানান। যেসব সঙ্কট এবং সমস্যা সংবাদপত্রে উঠে আসে তার সমাধানও দ্রæত হয়।
ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা এম এ মান্নান (রহঃ)-এর অবদান উল্লেখ করে সিটি মেয়র বলেন, তার দূরদর্শী ভূমিকায় এদেশের আলেমসমাজ অনেক এগিয়ে গেছে। দৈনিক ইনকিলাব তার অনন্য সৃষ্টি। তার সুযোগ্য সন্তান দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলিষ্ঠভাবে এ পত্রিকাটি এগিয়ে নিচ্ছেন। সম্পাদকের সাহসী, বলিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ ভূমিকায় দৈনিক ইনকিলাব এদেশের গণমানুষের মন জয় করতে পেরেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সিটি মেয়র বলেন, অসংখ্য পত্রিকার ভিড়ে ইনকিলাব অনন্য। ইনকিলাব আমি নিয়মিত পড়ি। ইনকিলাবের গঠনমূলক সমালোচনা এবং নিরপেক্ষ সংবাদ ও বিশ্লেষণ আমাদের উন্নয়নে সহযোগিতা করছে। ইনকিলাবের প্রতিটি প্রতিবেদন গঠনমূলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সত্য অনেকেই অপছন্দ করেন। কিন্তু দিনের শেষে সত্যেরই বিজয় হয়। ইনকিলাব সে সত্যের পক্ষেই আছে।
সিটি মেয়র বলেন, প্রতিটি গণমাধ্যম তাদের নিজস্ব চিন্তা-চেতনা ও ভিশন অনুযায়ী পরিচালিত হয়। একেকটি মিডিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি একেক রকম। কর্পোরেট হাউসগুলোও মিডিয়া পরিচালনা করছে। এর মাঝেও ইনকিলাবের যে ভিশন তা অত্যন্ত পরিষ্কার এবং স্পষ্ট। দৈনিক ইনকিলাব সত্য প্রকাশে অবিচল। শত প্রতিকূলতা এবং প্রতিবন্ধকতার মাঝেও ইনকিলাব তার নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রেখেছে। আশা করি ভবিষ্যতেও ইনকিলাব তার স্বকীয়তা বজায় রাখবে। মেয়র বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অসত্য দ্রæত প্রচার পায়। কিছু পাঠক চটকদার বিষয় পছন্দ করেন। কিন্তু যেটি সত্য এবং চিরন্তন সেটি পাঠকের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করতে সময় লাগে। তবে বাস্তবতা হলো দিনের শেষে অসত্য হারিয়ে যায় যেটি সত্য সেটি মানুষ গ্রহণ করে।
নগরবাসীর কাছে দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি পূরণে মেয়র তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, নির্বাচনী প্রতিটি ওয়াদা পূরণ করব। তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়ন তথা দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানিয়ে বলেন, আমাদের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু দেশের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে। এক্ষেত্রে সকল প্রকার সংকীর্ণতা পরিহার করতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল উন্নত দেশ গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে এক হতে হবে। উন্নত দেশ গড়তে জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মেয়র চট্টগ্রামের উন্নয়নে দৈনিক ইনকিলাবসহ গণমাধ্যমের আরও বেশি ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করেন। সিটি মেয়র হিসেবে দৈনিক ইনকিলাবের অগ্রযাত্রার পথে সব ধরনের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ইনকিলাব ব্যুরো প্রধান ও বিশেষ সংবাদদাতা শফিউল আলম বলেন, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও একই সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের গুরুদায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক এবং গঠনমূলক ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি প্রতিদিনই নগরীর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম তদারকের জন্য কোথাও না কোথাও সরেজমিন ছুটে যাচ্ছেন। বন্দরনগরী এবং দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রামের অবদান সর্বশীর্ষে রয়েছে। আর সেই চট্টগ্রামের সবুজ পাহাড়-প্রকৃতি ও পরিবেশকে সুরক্ষা করে গ্রীন সিটি ও ক্লিন সিটি গড়ার কাজে বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছেন বর্তমান সিটি মেয়র। তার গণমুখী অবদান ও ভূমিকা আরও জোরদারের জন্য চট্টগ্রামের সকল সেবাপ্রদানকারী সংস্থাকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়রের নেতৃত্বেই সমন্বয় এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চট্টগ্রাম নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের উন্নয়নের ব্যাপারে আশাবাদী এবং সহযোগী।
দৈনিক ইনকিলাব চট্টগ্রাম ব্যুরোর সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম সেলিমের সঞ্চালনায় বর্ণাঢ্য এ সম্মেলনের শুরুতে প্রধান অতিথি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে ‘গ্রীন সিটি-ক্লিন সিটি রূপকার’ খচিত ইনকিলাবের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট তুলে দেন চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শফিউল আলম। তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন চট্টগ্রাম ব্যুরোর ম্যানেজার (বিজ্ঞাপন) আনোয়ার সাদাত মুরাদ। অনুষ্ঠানে লেখক কলামিস্ট মোঃ খোরশেদ আলম দুলাল, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সেক্রেটারী ও ছিপাতলী জামেয়া গাউছিয়া মূঈনীয়া কামিল (এমএ) মাদরাসার প্রিন্সিপাল আল্লামা আবুল ফরাহ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন, জামাল খান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, ইসলামিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর, জামাল খান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী মোরশেদ আলম চৌধুরী, সাংবাদিক নেতা মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, অধ্যাপক মাহফুজুল হক, দৈনিক আজাদীর সিনিয়র সহ-সম্পাদক খোরশেদ আলম, সিএমইউজের সাবেক সেক্রেটারী কাশেম মাহমুদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ ও নির্বাহী সদস্য উত্তম সেনগুপ্ত, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুর রহিমসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ইনকিলাব চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্পোর্টস রিপোর্টার তাপস বড়–য়া রুমু, স্টাফ রিপোর্টার আইয়ুব আলী, ম্যানেজার (বিজ্ঞাপন) আনোয়ার সাদাত মুরাদ, বান্দরবান জেলার স্টাফ রিপোর্টার অধ্যাপক সাদত উল্লাহ, রাঙ্গামাটি জেলা সংবাদদাতা সৈয়দ মাহাবুব আহমাদ, ফটিকছড়ি উপজেলা সংবাদদাতা সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী, পটিয়া উপজেলা সংবাদদাতা এস কে নূর হোসেন, লামা উপজেলা সংবাদদাতা মাওলানা শামছুদ্দোহা, হাটহাজারী উপজেলা সংবাদদাতা আসলাম পারভেজ, রাউজান উপজেলা সংবাদদাতা এম বেলাল উদ্দিন, চন্দনাইশ উপজেলা সংবাদদাতা এম এ মোহসীন, কাপ্তাই উপজেলা সংবাদদাতা কবির হোসেন, রামগড় উপজেলা সংবাদদাতা রতন কুমার বৈষ্ণব ত্রিপুরা, সাতকানিয়া উপজেলা সংবাদদাতা জুনাঈদ মুহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, বোয়ালখালী উপজেলা সংবাদদাতা এম এস এমরান কাদেরী, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সংবাদদাতা নুরুল আবছার চৌধুরী, আনোয়ারা উপজেলা সংবাদদাতা জাহেদুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা মোঃ রাসেল হোসেন, লোহাগাড়া উপজেলা সংবাদদাতা তাজ উদ্দিন, সীতাকুÐ উপজেলা সংবাদদাতা শেখ সালাউদ্দিন, মীরসরাই উপজেলা সংবাদদাতা আমিনুল হক।
ইনকিলাব সংবাদদাতাগণ তাদের বক্তব্যে ইনকিলাবের আরও সমৃদ্ধি কামনা করে বলেন, সম্পাদকের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইনকিলাব জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদের কারণে গ্রামাঞ্চলেও প্রশাসন তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এসব কারণে ইনকিলাব এখন গণমানুষের আস্থার প্রতীক। জাতীয় রাজনীতি থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ইনকিলাবের ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে সর্বত্রই। তারা ইনকিলাবের অগ্রযাত্রায় আরও বেশি ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সম্মেলনস্থলে ঘুরে ঘুরে সংবাদদাতাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। সংবাদদাতাদের এ সম্মেলনে দৈনিক ইনকিলাবের তৃণমূল সাংবাদিকগণ একে অপরের সঙ্গে ভাবের আদান প্রদান, পেশাগত অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। এর ফলে পুরো দিন প্রাণবন্ত ছিল সম্মেলনস্থল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।