পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় কি হয় সে শঙ্কায় বিএনপির মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় কার্যত মাঠে নেমে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটি তৃণমূলকে সংগঠিত করতে চায়। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে ১৫টি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা সারাদেশের জেলা-উপজেলা সফর করে তৃণমূলে দলকে সুসংগঠিত করবেন। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানোর পাশাপাশি সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন। ইতোমধ্যে ১৫টি সাংগঠনিক টিমের দেশব্যাপী নির্বাচনী সফরের তালিকা ও সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদিকে আগামী ৩০ জানুয়ারি সিলেট সফরের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উল্লেখ্য, প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সিলেটের হজরত শাহজালাল (রহ:) ও শাহপরাণ (রহ:) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২৬ জানুয়ারি থেকে দলকে গোছাতে আমরা ১৫টি টিমে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে যাচ্ছি।
২০তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে বছরের প্রথম দিনে দল গোছাতে ১০০ দিনের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঘর গোছানোর চেষ্টার দৃশ্যমান সফলতা দেখা যায়নি বরং স্থানীয় পর্যায়ে নেতা ও দলীয় সংসদ সদস্যদের দ্ব›দ্ব-কোন্দল আরো প্রকাশ্য হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের সব ধরনের সমস্যা সমাধানে দলের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় এই টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দলের ভেতরে ছোটখাটো সমস্যা থাকতেই পারে। সে কারণে দলকে আধুনিক এবং মাঠ সুসংগঠিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেব। আমাদের টিম নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রত্যেকের সাংগঠনিক এলাকায় তারা টিমওয়ার্ক করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান দেবে। তৃণমূলকে সুসংগঠিত করতে এই টিম ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
আওয়াশী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের মিশন নিয়ে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আজ শুক্রবার থেকে আওয়ামী লীগের ১৫টি টিম মাঠে নামছে। মূল লক্ষ্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করার বার্তা দেয়ার পাশাপাশি কোন আসনে কে হতে পারেন যোগ্য প্রার্থী তার মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করা। তাই প্রতিটি আসনের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের খসড়া তালিকা সাংগঠনিক সফর দলের প্রধানদের কাছে ইতোমধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, দেশে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আওয়ামী লীগ নেতারাও এমন আভাস দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও হিসাব-নিকাশের নির্বাচন বলে মনে করছেন নেতারা। গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ আভাস দেন দলটির দুই সিনিয়র নেতা। তারা হলেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
আমির হোসেন আমু বলেন, জাতীয় স্বার্থে শেখ হাসিনাকে পুনরায় নির্বাচিত করতে হবে। আমরা চাই, একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক। আমরা প্রমাণ করতে চাই, সংবিধানের ভিত্তিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেই নির্বাচনই হবে স্বচ্ছ। এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা প্রমাণ করার চেষ্টা করব, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে, সত্যিকার অর্থেই ট্রান্সপারেন্ট হবে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সামনের সময় আমাদের জন্য অগ্নিপরীক্ষার সময়। কোনো অবস্থাতেই দ্বিধা-দ্ব›দ্ব রাখা যাবে না। যারা দ্বিধা-দ্ব›দ্ব রাখবেন তারা আওয়ামী লীগ করতে পারবেন না। আমাদের পথ একটাই, বিজয়ের পথ। অন্য কোনো পথ সামনে নেই।
বিগত সময়ে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বিভিন্ন সভায় আগামী নির্বাচনকে মহা হিসাব-নিকাশের নির্বাচন বলে ইঙ্গিত করেছেন। বিষয়টি মাথায় নিয়েই তৃণমূলে সাংগঠনিক সফরে নামছে আওয়ামী লীগ। এতে তৃণমূলে জাতীয় নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন নেতারা। তারা মনে করেন, নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে বিএনপি ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিএনপিই ভোটের ময়দানে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ। তারা এবার দল বাঁচাতে নির্বাচনে অংশ নেবে। এদিকে টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন কর্মকান্ডে জনগণের মাঝে কিছুটা বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।
সাংগঠনিক টিমের নেতারা বলছেন, আমরা এসব বিষয়ে নজর দিয়ে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব। আমাদের বেশিরভাগ আসনেই একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। আমরা তাদের নেত্রীর প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে কাজ করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাব। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এই টিমগুলো আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সংগঠনের জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা পর্যায়ে সাংগঠনিক সফরে যাবেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
সূত্র জানায়, সাংগঠনিক সফরে দলের তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরতে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হবে। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত জোটের অতীতের অপশাসন, অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতাসহ নেতিবাচক রাজনীতির দিকগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সারাদেশে প্রায় ১২ লাখ পোলিং এজেন্টকে প্রশিক্ষণ দেবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শুক্রবার থেকে একযোগে আমাদের সাংগঠনিক সফর শুরু হচ্ছে। এই সফরের মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনী প্রস্তুতি সেরে নেবো। আমাদের টিমে সিনিয়র রাজনীতিক তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও অন্য নেতারা রয়েছেন।
এদিকে আজ থেকে শুরু সাংগঠনিক সফরের প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকার নিকট জেলা মানিকগঞ্জ জেলায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে অ্যাড. সাহারা খাতুন, অ্যাড. আব্দুল মান্নান খান, মোজাফফর হোসেন পল্টু, মুকুল বোস, ডা. দীপু মণি, আবদুস সোবহান গোলাপ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, নুরুল মজিদ হুমায়ুন, আখতারুজ্জামান, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, অ্যাড. মৃণাল কান্তি দাস, অ্যাড. কামরুল ইসলাম, সিমিন হোসেন রিমি, অ্যাড. এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার সফর করবেন।
এছাড়া উত্তরবঙ্গের বগুড়া জেলায় লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ডা: রোকেয়া সুলতানা, মো: মমতাজ উদ্দিন সফরে যাবেন। শ্রী পীষুষ কান্তি ভট্টাচার্য, আব্দুর রহমান, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, এস এম কামাল হোসেন, অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন আজ নড়াইল জেলায় সাংগঠনিক সফর করবেন।
অ্যাড. আব্দুল মতিন খসরু, মাহবুব-উল আলম হানিফ, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ফরিদুন্নাহার লাইলী, হারুনুর রশীদ ফেনী জেলায় সাংগঠনিক সফর করবেন।
এছাড়া সফরের দ্বিতীয় দিন আগামীকাল শনিবার লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ডা. রোকেয়া সুলতানা, মো: মমতাজ উদ্দিন নাটোর জেলা সফর করবেন।
আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আব্দুর রহমান, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, অ্যাড. আফজাল হোসেন, ড. শাম্মী আহমেদ, অ্যাড. শ ম রেজাউল করিম পটুয়াখালী সফর করবেন।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, হাছান মাহমুদ, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল (চট্টগ্রাম মহানগর), দীপংকর তালুকদার, আমিনুল ইসলাম, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া বান্দরবান জেলা সফর করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।