Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে চমক বিরোধী জোটের প্রার্থী মাহাথির

প্রধানমন্ত্রী নাজিবের বিরুদ্ধে এক জোট হয়েছেন মাহাথির-আনোয়ার

| প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মালয়েশিয়ার আগামী সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মাহাথির মোহাম্মদের নাম ঘোষণা করেছে বিরোধী জোট। ৯২ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদকে আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার বলা হয়। দেশটির চার দলীয় বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে এ কথা ঘোষণা করা হয়। মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে চমকের সৃষ্টি করেছে জোটের এ ঘোষণা। কারণ, এ জোটে মাহাথির মোহাম্মদের সাথে রয়েছে তার পরম শত্রæ আনোয়ার ইব্রাহিমের দল। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নাজিবের বিরুদ্ধে এক জোট হয়েছেন মাহাথির-আনোয়ার। সমস্যাপূর্ণ বিষয়ে মতপার্থক্য অবসানের লক্ষ্যে চার দলীয় হোপ এলায়েন্স-এর এ ঘোষণা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে বিরোধী দলের ঐক্যের এক বড় নিদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগস্টের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। গত রবিবার বিরোধী জোটের সম্মেলনে জোটের মহাসচিব সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী ড.ওয়ান আজিজাহ ওয়ান ইসমাইলি উপ-প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ব্যাপক দুর্নীতি কেলেংকারির অভিযোগ সত্তে¡ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে শত শত মিলিয়ন ডলার নয়ছয় করার অভিযোগ আছে। এর ফলে বিগত দু’টি নির্বাচনে তার ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট জোটের প্রতি সমর্থন হ্রাস পায়। বিশ্লেষকরা বলেন, মালয়েশিয়ার বিরোধী জোট দলীয় কোন্দল, অনুক‚ল নির্বাচনী সীমানা পরিবর্তন এবং সরকারের প্রতি গ্রামীণ মালয়ী জাতিগোষ্ঠির সমর্থনের কারণে এখনো সমস্যার সম্মুখীন। থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড ইকোনোমিক এফেয়ার্সের প্রধান ওয়ান সাইফুল ওয়ান জান বলেন, এটা সুস্পষ্ট যে বিরোধীরা নিজেদের ঐক্যবদ্ধ প্রমাণ করতে জোর চেষ্টা করছে। মাহাথির এখনো মালয়ীদের কাছে জনপ্রিয় যা নাজিবের জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকি। তবে একটি আনলেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কারণে সরকার এখনো সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। সরকারি নেতারা নির্বাচনে মাহাথিরের প্রার্থী হওয়ার নিন্দা করেছেন। বিরোধী জোট যদি নির্বাচনে জয়ী হয় তাহলে মাহাথির হবেন বিশে^র প্রবীণতম প্রধানমন্ত্রী। সরকারের মন্ত্রী আবদুল রহমান দাহলান তার প্রার্থিতাকে বিরোধী দলের সংস্কার কর্মসূচির জন্য বিরাট প্রতিবন্ধকতা বলে আখ্যায়িত করেন। এক টুইটে তিনি বলেন, মাহাথিরকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী করা এবং তার দ্বারা সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার আশা করা হাস্যকর ব্যাপার হবে। এটা তাদের জন্য এক দুঃখজনক ঘটনা, যাহোক আসন্ন নির্বাচনে শাসক জোটের জয়লাভের পথ সহজ করে দেয়ার জন্য বিরোধীদের ধন্যবাদ জানাই। ২০০৩ সালে ক্ষমতা ত্যাগের আগে মাহাথির ২২ বছর মালয়েশিয়ার এশিয়ার দীর্ঘতম সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কর্তৃত্বপরায়ণতার কিছু অভিযোগ ছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নাজিবকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তিনি আবার জোরেশোরে রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। এর আগে মাহাথির বলেন, তিনি ফের প্রধানমন্ত্রী হতে চান না। কিন্তু আগামী নির্বাচনে তিনি বিরোধীদের নেতৃত্ব দেবেন যদি সব দল সম্মত হয়। আর যদি বিরোধী দল জয়ী হয় তাহলে অন্য কোনো প্রার্থী না পাওয়া গেলে প্রধানমন্ত্রী পদে তিনি আবার বসবেন। তবে প্রধান শর্ত, সবাইকে একমত হতে হবে। নাজিব তার বিরুদ্ধে দু’বছর আগে কেলেংকারির ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল ও উপ-প্রধানন্ত্রীসহ সরকারে তার সমালোচকদের বরখাস্ত করেছেন এবং মিডিয়ার মুখ বন্ধ করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও আরো কয়েকটি দেশ তার বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত তহবিল তছরূপ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল করতে তার প্রতিষ্ঠিত ও নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ তহবিল ওয়ানএমডিবির অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগের তদন্ত করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, এই তহবিল থেকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার নয়ছয় করা হয়েছে। তবে মালয়েশিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল তদন্তের পর এ অভিযোগ থেকে নাজিবকে নির্দোষ ঘোষণা করেন রয়টারসের খবরে বলা হয়, বিরোধী জোট রবিবার নির্বাচনে আসন বরাদ্দ এবং বিজয়ী হলে প্রধান মন্ত্রীর মেয়াদ দু’ দফা করার ব্যাপারে সম্মত হয়। বিরোধী দলের জোটে সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিমের দলও আছে। জনপ্রিয় বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম জেলে থাকায় নাজিবের বিরুদ্ধে মাহাথিরকে বেছে নিয়েছে বিরোধী জোট। ভিওএ।



 

Show all comments
  • কামরুজ্জামান ১১ জানুয়ারি, ২০১৮, ৪:২৭ এএম says : 0
    রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মালয়েশিয়ার


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ