পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মোটা অংকের টাকা নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে তোলা হতো ট্রলারে। এরপর কয়েকদিন গভীর সাগরে ঘুরিয়ে নামিয়ে দেয়া হতো সেন্টমার্টিন দ্বীপে। সেখানে চক্রের কাউকে খুঁজে না পেয়ে সর্বস্ব হারিয়ে তারা ফিরে যেতেন গ্রামে। মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে যুবকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় মানব পাচারকারি চক্রের পাঁচ সদস্যকে পাকড়াও করার পর এমন তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
গতকাল সোমবার র্যাব-৭ চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার পাঁচজন হলেন- মো. ইসমাইল, শফিউল আলম, রিয়াজ খান, মো. হোসেন ও ইউনুস মাঝি। র্যাব জানায়, চক্রের অন্যতম হোতা দুই ভাই ইসমাইল ও শফিউল। দুজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সাতটি করে মানব পাচার আইনে মামলা রয়েছে।
চক্রটি কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দরিদ্র লোকজনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। পরে তাদের ট্রলারে তুলে দেয়। তাদের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয় এর আগে। ট্রলারে তোলার আগে পাসপোর্টগুলো নিয়ে নেয়া হয়। মালয়েশিয়া পৌঁছার পর পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু তাদের মালয়েশিয়া না নিয়ে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দেয়া হয়। এভাবে গত কয়েক বছরে তারা শত শত যুবককে পথে বসিয়েছে।
ভুক্তভোগীদের একজন জয়নাল আবেদীন র্যাবকে জানিয়েছেন, গ্রেফতার রিয়াজ খানের কাছে পাসপোর্ট তৈরির জন্য যান। তখন তাকে কম খরচে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলেন রিয়াজ। পাসপোর্ট তৈরির জন্য ১৫ হাজার টাকা নেন। পরে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য এক লাখ টাকা দেন। তার মতো আরও ১৫ থেকে ২০ জনের কাছ থেকে টাকা নেয় চক্রটি। পরে তাদের কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার একটি ঘাট থেকে মালয়েশিয়া নেয়ার জন্য একটি ট্রলারে তোলা হয়। পরে তাদের সেন্টমার্টিন দ্বীপে নামিয়ে দেয়া হয়। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা করারও সাহস পাননি।
র্যাব জানায়, বিদেশেও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে চক্রটি। গ্রেফতার আসামি হোসেনের ছেলে মো. এমরান মোজাম্বিকে চাঁদা আদায় করেন। ভুক্তভোগী মোক্তার আলী চক্রটির মাধ্যমে মোজাম্বিক যান। সেখানে এমরান মোক্তারের কাছে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তাকে আটকে রাখেন। ওই টাকা বাংলাদেশে তার বাবা হোসেনকে দেয়ার জন্য বলেন। বাধ্য হয়ে হোসেনের হাতে ওই টাকা তুলে দেয় মোক্তারের পরিবার। গ্রেফতার আসামিরা দরিদ্র লোকজনকে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে থাকা তাদের চক্রের সদস্য মুক্তিপণ হিসেবে টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার এ চক্রের সদস্যদের অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কোন অভিযোগ করার সাহস পায় না। তারা মালয়েশিয়া লোক পাঠানোর কথা বলে নিরীহ লোকজন টাকা দিতে না পারলে তাদের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে তাদেরকে অবৈধভাবে সাগর পথে ট্রলার যোগে মালয়েশিয়া কোন এক অজ্ঞাত দ্বীপে নামিয়ে দিয়ে আসে। এরপর তার পরিবারের কাছ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ চায়। দিতে না পারলে স্বাক্ষরযুক্ত স্ট্যাম্পের মাধ্যমে তাদের আবাদি জমি জমা বাড়ি-ঘর দখল করে নেয়। অন্যদিকে, মালয়েশিয়াগামী হতভাগ্যরা কোন এক দ্বীপে মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকে। খাবারের অভাবে কেউ কেউ মারাও যায়। আবার কেউ সাগরে ট্রলার ডুবেও মারা যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।