Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বার্মিজ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া আরসা’র কোনো উপায় নেই

টুইটারে প্রকাশিত আরসা নেতা আতা উল্লাহ স্বাক্ষরিত বিবৃতি

| প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীরা বলছেন, বার্মিজ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া আরসার’র সামনে আর কোনো উপায় নেই। তাদের ভাষায়, রোহিঙ্গাদের ওপর যা হচ্ছে, তা মিয়ানমারের সরকার সমর্থিত সন্ত্রাস। গত শুক্রবার রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীরা ফের মিয়ানমারের সেনাদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীরা সংগঠন আরসা। আরসা স¤প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তাদের সে আক্রমণের দায়িত্ব স্বীকার করার পাশাপাশি জানিয়েছে তাদের এ ছাড়া কোনো উপায় নেই। আরসার নেতা আতা উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে টুইটারে। এতে তিনি লিখেছেন, ‘আরসার সামনে বার্মার রাষ্ট্র-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া নিজেদের রক্ষা ও উদ্ধার করার অন্য কোনো উপায় নেই।’ আতা উল্লাহ বিবৃতিতে আরো লিখেছেন, রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ মানবিক চাহিদা মেটানো ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অবশ্যই তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, শুক্রবার মিয়ানমারে সেনা সদস্যদের বহনকারী একটি গাড়িতে হামলা চালিয়েছে রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীরা। এতে কমপক্ষে ৫ সেনা সদস্য আহত হয়েছেন। মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, ২০ জন বিদ্রোহী পাহাড় থেকে সেনা সদস্যদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালায়। হাতে তৈরি বোমা ও অস্ত্রের সাহায্যে এই হামলা চালায় তারা। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বাঙালি সন্ত্রাসীদের দল ‘আরসা’ এই হামলা চালিয়েছে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা দাবি করেছেন, রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যেভাবে হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছিল, তাতে নিজেদের স¤প্রদায়ের লোকজনকে রক্ষার জন্য তাদের সামনে লড়াই ছাড়া ভিন্ন কোনো পথ খোলা ছিল না। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষকে তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা উচিত বলেও মনে করে বিদ্রোহীরা। গত শনিবার রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ বা ‘আরসা’র এক টুইট বার্তায় এসব মন্তব্য করা হয় বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। পরে বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরসা এই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার পর পরই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এখনো শরণার্থীদের ঢল অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনাকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদী উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করলেও বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের সরকার তা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। শুক্রবারের হামলা সম্পর্কে আরসা দায় স্বীকার করলেও এ সম্পর্কে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য জানায়নি। রাখাইনের ওই এলাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ। বিদ্রোহীদের এই টুইট সম্পর্কে মিয়ানমারের সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, কোনো ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে তারা ‘আপস’ করবে না। আরসার দাবি, তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী ১০ লাখ রোহিঙ্গার নাগরিকত্বসহ মৌলিক অধিকারের জন্য লড়ছে। তাদের মূলনীতি ‘রক্ষা করা, উদ্ধার করা ও প্রতিরোধ গড়া’। আরসা নিজেকে কোনো ধরনের ‘সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর তকমা’ থেকে দূরে রাখার দাবি করে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশের নাগরিক বলে মনে করে না। তাদের দাবি, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী। আরব নিউজ, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ