Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইরানে বিক্ষোভের জন্য দেশের শত্রুরা দায়ী : আয়াতুল্লাহ খামেনি

পাঁচ দিনে ২২ জন নিহত

বিবিসি | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম


ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি দেশে বিক্ষোভের জন্য দেশের শত্রুদের দায়ী করেছেন। গত বৃহস্পতিবার থেকে বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর এই প্রথমবার তিনি কথা বললেন। পাঁচদিনের বিক্ষোভে সেখানে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ ২২ জন নিহত হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম সোমবার রাতে সহিংসতায় এক শিশুসহ ৯ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে। ২০০৯ সাল বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর এত বড় বিক্ষোভ আর হয়নি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তার সরকারী ওয়েবসাইটে বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্রে গোলযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ইরানের শত্রæরা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নগদ অর্থ, অস্ত্র, রাজনীতি ও গোয়েন্দা সার্ভিসসহ বিভিন্ন ধরনের পন্থ্ াব্যবহার করেছে। প্রথমে দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাশাদ শহর বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ শুরু হয়। তারপর তা ব্যাপক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়।
তেহরান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর জেনারেল আলি আসগর নাসেরবখত বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তেহরান প্রদেশে ৪৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার ২০০ জন, রোববার ১৫০ জন ও সোমবার ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, বিক্ষোভ একটি সুযোগ, হুমকি নয়। তিনি আইন ভঙ্গকারীদের দমন করার শপথ ব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভাষায় বিক্ষোভকারীদের বলিষ্ঠ প্রতিরোধের পক্ষে সমর্থন জোরদার করেছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের নির্বাচনী জয়ের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ আন্দোলনে নামে। এটি গ্রীন মুভমেন্ট নামে পরিচিত। অন্যুন ৩০ জন নিহত, হাজার হাজার লোককে আটকের মধ্য দিয়ে নির্মম ভাবে তা দমন করা হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়, মধ্যাঞ্চলীয় ইসফাহান প্রদেশের ওহদারজান শহরে সোমবার রাতে একটি থানা থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে ৬ জন নিহত হয়। খোমেইনি শহরে ১১ বছর ও ২০ বছর বয়সী দু’জন নিহত হয়। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়, পাশর্^বর্তী কাহরিসজানে একজন বিপ্লবী রক্ষী গুরুতর ভাবে আহত হন। এর আগের ঘটনায় নাজাফাবাদে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত ও ৩ পুলিশ আহত হন।
কর্তৃপক্ষ টেলিগ্রাম বা ইন্সটাগ্রামের মত সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
ইরানে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তুরস্ক সেখানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ এবং বিক্ষোভের আরো বিস্তারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
তার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের নেতাদের বিরুদ্ধে তার বাগযুদ্ধ জোরদার করেছেন। তিনি এক টুইটে বলেন, ইরানের জনগণ বহু বছর ধরে দমনের শিকার। তারা খাদ্য ও স্বাধীনতার জন্য ক্ষুধার্ত।
ইইউ ইরানকে তার নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনের অধিকার নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে বলেছে, তারা ইরান কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছে ও পরিস্থিতি মনিটর করছে।
মঙ্গলবার ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট রুহানির এক প্রধান সমর্থক ইসহাক জাহাঙ্গিরি ফারসি ভাষায় এক টুইটে বলেন, আইনি কাঠামোর মধ্যে ধীরে ধীরে সংস্কার হচ্ছে দেশের অবস্থা উন্নয়নের একমাত্র উপায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ