Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইরানে বিক্ষোভ আরো ছড়িয়ে পড়ছে, নিহত ১০

| প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ইরানের বিভিন্ন জায়গা থেকে আরো বিক্ষোভ ও মৃত্যুর খবর আসছে। সরকারি সংবাদ মাধ্যমেই এখন বলা হচ্ছে, কয়েকদিনের বিক্ষোভ-সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১০ জন নিহত হয়েছে। এসব মৃত্যু কোথায় বা কীভাবে ঘটেছে তা রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলা হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট রুহানি জনগণকে শান্তি রক্ষার আহ্বান জানানো সত্বেও বিভিন্ন সূত্র থেকে সহিংসতার খবর আসছে। রোববার রাতে দক্ষিণাঞ্চলীয় ইজেহ শহরে গুলিবিদ্ধ হয়ে দু›জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। পশ্চিম ইরানের দোরুদে বিক্ষোভকারীরা একটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ছিনিয়ে করে নেয় এবং তারপর তা অন্য দুটি গাড়িতে আঘাত করে। এতে দু›জন নিহত হয়।
দোরুদ শহরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথম দিনের সহিংসতায় দু›জন গুলিতে মারা যায়, এবং তারা সহিংসতার জন্য উগ্রপন্থী সুন্নি মুসলিম তাকফিরি গোষ্ঠীকে দায়ী করেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৪শ’ লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ টেলিগ্রাম বা ইন্সটাগ্রামের মত সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, জনগণের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করার অধিকার আছে কিন্তু সহিংসতা মেনে নেয়া হবে না। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী হুঁশিয়ারি দেয় যে, বিক্ষোভ চলতে থাকলে তারা রাষ্ট্রের ‘লৌহকঠিন মুষ্টির’ সম্মুখীন হবে।
এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল গত বৃহস্পতিবার মাশাদ শহর থেকে। মূলত জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধির মত অর্থনৈতিক ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হলেও এখন বিক্ষোভকারীরা ধর্মীয় নেতা-নিয়ন্ত্রিত ইরানি সরকারকে উৎখাত করার ডাক দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এখন বিক্ষোভের কিছু সংবাদ চিত্র দেখানো হচ্ছে, এতে যুবক বিক্ষোভকারীদের ব্যাংকে আক্রমণ করতে, বা ইরানি পতাকা পোড়াতে দেখা যাচ্ছে।
রোববার ইরানের খোরামাবাদ, যানজান ও আহভাজ শহরে মিছিল থেকে দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনির পদত্যাগ ও তাঁর ‘নিপাত’ যাওয়ার দাবিতে সেøাগান দেয়া হয়। আবহার শহরে বিক্ষোভকারীরা দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনির ছবিওয়ালা বিশাল ব্যানারেও আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিবিসির ফার্সি বিভাগের বিশ্লেষক কাসরা নাজি জানাচ্ছেন, এখনো এ বিক্ষোভ তরুণ-যুবকদের ছোট ছোট গোষ্ঠীর মধ্যে সীমিত, কিন্তু তা ক্রমাগত বিভিন্ন ছো ছোট শহরে ছড়িয়ে পড়ছে, এবং তা আরো ব্যাপক হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে।
কিন্তু এ বিক্ষোভের দৃশ্যত কোন নেতৃত্ব নেই। সরকারবিরোধী অনেক ব্যক্তিত্বকে ইতিমধ্যেই নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে বা তাদের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাসরা নাজি বলছেন, কিছু বিক্ষোভকারী এমনকি ইরানে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথাও বলছে।
ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের সময় উৎখাত হওয়া শেষ শাহর পুত্র রেজা পাহলভী এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। তিনি এই বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন, কিন্তু এই বিক্ষোভ যে কোনদিকে যাবে বা এর পরিণতি কি হবে - তা কেউই বলতে পারছেন না।
২০০৯ সালে সংস্কারের দাবির ব্যাপক বিক্ষোভের পর এই প্রথম দেশটিতে এরকম বড় প্রতিবাদ হচ্ছে। সেই বিক্ষোভ ইরানের সরকার কঠোরভাবে দমন করেছিল।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সহিংসতাকে অগ্রহণযোগ্য বলে সতর্ক এবং একইসঙ্গে সমালোচনার সুযোগ দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। দেশটিতে কয়েকদিন ধরে সরকার বিরোধী সহিংস বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে রোববার তিনি এ অঙ্গীকার করেন। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরানে


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ