পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পর্যটকদের চলাচল অবারিত রেখে ভিআইপি সড়ক হিসেবে সংরক্ষণের দাবি
শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার ব্যুরো : প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে দেশের গর্ব ১২০ কিমি মেরিন ড্রাইভ সড়কের সৌন্দর্য। পর্যটকদের যানচলাচল অবারিত রেখে ভারী যান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে সড়কটি ভিাআইপি সড়ক হিসেবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন কক্সবাজারের সচেতন মহল।
গত ৬ মে কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতেকরে পর্যটন শহর কক্সবাজারের সাথে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হল সাগর-পাহাড় বেষ্টিত আরো ৮০ কিমি পর্যটন এলাকা। সেনাবাহিনীর তত্ত¡াধানে নির্মিত উন্নত এই সড়ক যেন খুলে দেয় অপার সম্ভাবনার বিশ্ব পর্যটনের অবারিত দুয়ার। পর্যটনের বিকাশ ছাড়াও এই সড়কের কারণে বেড়েগেছে এলাকার মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন।
অভিজ্ঞ মহলের মতে বাংলাদেশের কক্সবাজারেই শুধু আছে দীর্ঘ ১২০ কিমি সমূদ্র সৈকত। এক পাশে সাগরের অথৈই জলরাশী আর এক পাশে সুউচ্চ দীর্ঘ পাহাড় শৃঙ্গ। এর মাঝখানে যে সড়ক তারই নাম কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিমি মেরিন ড্রাইভ সড়ক। এটি শুধু কক্সবাজারের নয়, গোটা বাংলাদেশের অহঙ্কার। এই সড়ক দিয়ে ভ্রমণের সময় পর্যটকরা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির অপরূপ সৌন্দর্যের কথা ভাবতে ভাবতে যেন আত্মভুলা হলে পড়েন। সেই গর্বের সড়ক এখন কুরে কুরে খাচ্ছে যন্ত্রদানব। প্রতিদিন শত শত ভারী যানবাহন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতের কারণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে দেশের অহঙ্কার মেরিন ড্রাইভ সড়কটি।
মেরিন ড্রাইভ সড়ক ছাড়াও কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত যাতায়াতের আরো দু’টি সড়ক রয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা সড়কের সাথে লিংক রোড এলাকায় যুক্ত হয়েছে যুগ যুগ ধরে পরিচিত আরাকান সড়ক। এটি এখন শহিদ জাফর আলম সড়ক নামে নামকরণ করা হয়েছে। প্রসস্থ এই সড়ক দিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ যোগাযোগে সব ধরণের যানবাহন চলাচলের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও উখিয়ার কোর্টবাজার হয়ে টেকনাফের সাথে যানবাহন যাতায়াতের অরো একটি সড়ক আছে। এটি ইনানী পয়েন্টে যুক্ত হয়েছে মেরিন ড্রাইভ সড়কের সাথে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সেনা অভিযানের কারণে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম। আরাকানে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে ব্যাপকভাবে সাড়া দেয় আন্তর্জাতিক মহল। সেই সুবাদে কক্সবাজার-উখিয়া-টেকনাফে বেড়েছে দেশী-বিদেশী সংস্থার লোকজনের ব্যাপক যাতায়াত। এর উপর এখন চলছে পর্যটন মৌসুমের পিক আওয়ার। এখন সড়ক গুলোতে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহন সংখ্যা। পাশাপাশি মেরিনড্রাইভ সড়কের সুবাদে বিস্তীর্ণ যে অর্থনৈতিক জোন সৃষ্টি হয়েছে প্রতিদিন এর মালামাল পরিবহণ হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে। এছাড়াও সব সড়ক গুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে যেকোন ধরণের যানবাহন। এতে করে কক্সবাজার ভ্রমণে আসা লাখ লাখ পর্যটকের যেমন ভোগান্তি হচ্ছে, তেমনিভাবে সড়কের উপর লোডও বাড়ছে বেশী। বিশেষ করে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে দেশের গর্ব মেরিন ড্রাইভ সড়কটি।
সরে জমিনে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ঘুরে দেখাগেছে, শত শত কোটি টাকা খরচ করে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে দুই যুগ ধরে নির্মিত এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে হালকা, মাঝারী ও ভারী যানবাহন। ভারী যানবাহনের কারণে এই সড়কটি যেমন ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে, তেমনিভাবে দ্রæত ক্ষয়ে যাওয়ার কারণে সড়কটির সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। অথচ এই সড়ক দিয়েই চলাচল করে থাকে ভিভিআইপি, ভিআইপিদের যানবাহন, দেশী বিদেশী সংস্থার যানবাহন ও পর্যটকবাহী শত শত যানবাহন। দেখাগেছে বিনা প্রয়োজনে বড় বড় বাস-ট্রাক ও ভারী যাহন বিনা বাধায় এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। অথচ সকলেই অনুভব করে থাকেন মেরিন ড্রাইভ সড়কটি ভিআইপি সড়ক হিসেবে সংরক্ষন করা দরকার। সচেতন মহল মনে করেন, ভারী যানবাহন চলাচলে এই সড়ক দিয়ে কঠোরভারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা দরকার। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কক্সবাজারের সচেতন মহল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আলী হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কের মত মূল্যবান সড়কটি এভাবে নষ্ট হতে দেয়া যায়না। এই সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেয়াই আছে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান (চেয়ারম্যান) বলেন, কক্সবাজার হতে টেকনাফ পর্যন্ত যে অর্থনৈতিক জোন সৃ্িট হয়েছে এতে মালামাল পরিবহনের জন্য এই সড়কের প্রয়োজন হলেও ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তিনি আরো জানান, মেরিনড্রাইভ সড়কটি চার লাইনের করার জন্য সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে, জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করলে দেশের গর্ব এই সড়কটি দ্রæত নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
কক্সবাজার সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম রহিমুল্লাহ বলেন, বিভিন্ন কারণে এখন কক্সবাজারের গুরুত্ব বেড়েছে। পর্যটন মৌসুম ছাড়াও সারাবছর এখন ভিআইপি ও দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আনাগুনা বেড়েছে কক্সবাজারে। ভারী যানবাহন চলাচল করলে মেরিনড্রাইভ সড়কটি নষ্ট হয়ে সৌন্দর্য হারাতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।