Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবর্জনায় সৌন্দর্য ম্লান

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

সৌন্দর্য হারাচ্ছে লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে সৌর্ন্দয নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ময়লা ফেলায় মহাসড়কের পাশেই আবর্জনার স্তূপ তৈরি হয়েছে যত্রতত্র।

নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ময়লার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মহাসড়কে চলাচলকারীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অর্ধশতাধিক ময়লার ভাগাড় গড়ে উঠেছে। দিন যতই যাচ্ছে মহাসড়কের দু’দিকে ময়লার স্তূপ ততই বড় হচ্ছে। স্থানীয় হাটবাজার, পাড়া-মহল্লা এমনকি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ফেলার স্থান হিসেবেই বেছে নেওয়া হয়েছে মহাসড়ককে। ফলে সড়কের দু’পাশের বাতাস হয়ে উঠছে বিষাক্ত। এতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে স্কুল শিক্ষার্থীরাসহ পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। এ দুর্গন্ধের কারণে ডায়রিয়া ও পেটের অসুখ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

ময়লা-আবর্জনার কারণে মহাসড়কের সৌর্ন্দয নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বাড়িতে বসবাস করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। মহাসড়কের পাশ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরকে নাকে রুমাল চেপে প্রতিদিন এ স্থানগুলো পার হতে হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁওয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দুই পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভাগাড় সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানে মোগরাপাড়া চৌরাস্তার দোকানপাট ও বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

প্রতিদিনই পথচারী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। শুধু মোগরাপাড়া নয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর, গজারিয়া, দাউদকান্দি, গৌরীপুর, ইলিয়টগঞ্জ, কুটুম্বপুর, মাধাইয়া, চান্দিনা, নিমসার, ঝাগুরজুলি, পদুয়ার বাজার ও চৌদ্দগ্রাম এলাকায় প্রতিদিন শত শত টন ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মুজিবুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় গড়ে ওঠায় পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি দুর্গন্ধ ও বর্জ্য পোড়ানোর বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া প্রাণীকুলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অক্সিজেনের অভাব দেখা দিতে পারে। দ্রæত ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় সরিয়ে নেওয়া জরুরি।

মহাসড়কের পাশের গৌরীপুর মুন্সী ফজলুল রহমান ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী আফরোজা আক্তার, মিথিলা, আফসানা আক্তার, রোকেয়া ও আছমা বলেন, মহাসড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখায় চলাচলে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। এ জন্য তাদেরকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

নিয়মিত যাতায়াতকারী আলমগীর স্বপন বলেন, ময়লা আবর্জনা ফেলায় সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে দেশের ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের। উৎকট গন্ধের কারণে মহাসড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন।

ইতোমধ্যে মহাসড়কের পাশে যে স্থানে ময়লা ফেলা হচ্ছে সে ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ এবং বাজার কমিটির কাছে সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ কুমিলা-অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহাদ উল্লাহ জানান, বিনা অনুমতিতে রাস্তা ও রাস্তাসংলগ্ন জায়গা এক ধরনের দখল করে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। রাস্তার অর্ধেক অংশে ময়লা ফেলায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে বিভিন্ন পৌরসভাকে জানানো হয়েছে। জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় একাধিকবার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। খুব শিগগিরই মহাসড়কের পাশের বিভিন্ন পৌর কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে আবারো চিঠি দেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবর্জনায় সৌন্দর্য
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ