Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অদম্য মেধাবী : পাস করেও হাসি নেই শারীরিক প্রতিবন্ধী জাকারিয়ার

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : প্রতিবন্ধিতা দমাতে পারেনি মাদারীপুরের জাকারিয়াকে। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করেও হাসি নেই পরিবারটির। আগামীর আলোকিত পথ গড়ার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে দারিদ্রতা। এছাড়া জাকারিয়ার পরিবারে রয়েছে আরো তিনজন শারীরিক প্রতিবন্ধী।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামের বাবুল হাওলাদারের বড় ছেলে এ.কে.এস. ডি. আদেল উদ্দিন হাওলাদার স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র জাকারিয়া হাওলাদার শারীরিক প্রতিবন্ধী। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। গতকাল শনিবার ফলাফল দিলে সে জিপিএ-৩.৩৬ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়েছে। আগামী দিনে পড়াশুনা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা রয়েছে।
জাকিরয়া বলেন, হাটতে না পারায় স্কুলে যেতে খুব সমস্যা হয়। কিন্তু পড়াশুনার প্রতি আমার প্রবল ইচ্ছে ও আগ্রহ। নিজের পায়ে দাড়াতে না পারলেও পড়াশুনা করে ভালো কোন কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হতে চাই। আমার ৩ ভাই-বোনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এমনকি আমার বাবাও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের সংসারে খাবারটুকুই যোগার করাই কষ্টকর। তবুও শারীরিক প্রতিবন্ধী তিন ভাই-বোনই পড়াশুনা করছে। আমি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গৃহকর্তা বাবুল হাওলাদার ও তার তিন সন্তানই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামে পরিবারটির বসবাস। বাবুল হাওলাদার সংসারের খবর চালাতে ঢাকা শহরে চেয়ে-নিন্তে আয় করে। তা দিয়েই কোনরকম খেয়ে না খেয়ে চলে পরিবারটি। ছোট খুপড়ি ঘরে বাবুলে স্ত্রী ও চার সন্তানে থাকে। এর মধ্যে দুই ছেলে ও এক মেয়ে শারিরীক প্রতিবন্ধী। এদের হাত-পা কোমর চিকন হয়ে বাঁকা। ফলে হাঁটা-চলা করতে পারে না। এরমধ্যে বড় সন্তান জাকারিয়া স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। বাকি দুজন পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাদের মা হুইল চেয়ারে করে বিদ্যালয়ে নেয়া-আনা করেন। আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় এদের শিক্ষাসহ জীবন ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার দাবী বাবুলে স্ত্রী জোসনা বেগমের। হুইল চেয়ার ছাড়া কোথাও যাওয়া আসা করতে পারে না এরা। শুধু বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা ছাড়া বাকি সময় ছোট খুড়রি ঘরে বসে থাকতে হয়। এদের শিক্ষাজীবন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তাদের আত্মীয়-স্বজন।
আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্ম সহযোগিতার আশ্বাস দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ ফারুক আহম্মদ। তিনি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান। তাই সমাজের বিত্তশালীরা এসব অসহায় পরিবারটির পাশে দাড়ালে এরাও সমাজের বোঝা না হয়ে সম্পদ হতে পারে। তাই সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান এই পরিবারের।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেধাবী

২ জানুয়ারি, ২০১৯
১১ ডিসেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ