নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দ্যা রাম্বল ইন দ্য জঙ্গলের কথা মনে আছে? ১৯৭৪ সালে কঙ্গোতে অনুষ্ঠিত যে প্রতিযোগিতায় জর্জ ফোরম্যানকে হারিয়ে জিতেছিলেন ‘দ্য গ্রেটেস্ট আলী’। সেই যুগেও বিশ্বের প্রায় ৫ কোটি মানুষ দেখেছিলেন সেই দ্বৈরথ। সেই নামের সাথে মিল রেখে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ‘রাম্বল ইন গুলিস্থান’ নামের একটি প্রো বক্সিং প্রতিযোগিতা। ভেন্যুও ছিল মোহাম্মদ আলীর পায়ের ধুলো পড়া পল্টন ময়দানের ‘মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম’। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বারেরমতো পেশাদার বক্সিং প্রতিযোগী আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল¡ বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশন এবং স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট এক্সেল। এবার ‘রাম্বল ইন গুলিস্তান’র আয়োজকও এই দুই প্রতিষ্ঠান।
পাঁচটি ক্যাটাগরিতে মোট ১০ জন বক্সার এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। ব্যানটমওয়েটে আবু তালহা হৃদয় কোন হৃদয়ের পরিচয় দেননি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাব্বির নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলায় মেতে উঠলেন হৃদয়। ফেদারওয়েটে নঁওগার বাবুল রেজাকে দ্বিতীয় রাউন্ডেই ট্যাকনিকাল নক আউটে (টিএনও) করেন আমিনুর ইসলাম। সুপার ফ্লাইটওয়েটে রাজশাহীর উৎসব আহমেদ ট্যাকনিকাল নক আউটে হারিয়েছে বান্দরবানের আবু বক্করকে। হেরেও তুলনামূলক কম সুবিধা ভোগ করা অঞ্চলের বক্কর জানান, ‘কঠিন অনুশীলনের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও সফল হতে চাই।’ ওয়েল্টারওয়েটে আলআমিন ২ মিনিটের মাঝে ট্যাকনিক্যাল নক আউট করেন মুনতাহা উল হককে। আর দিনের সবচেয়ে জমজমাট ম্যাচে লাইট হেভিওয়েটে ফাইট করেন জাহিদুল ইসলাম ও আরিফ হোসেন। এই দুই প্রতিযোগীই রাজশাহীর। স্পিল্ট ডিসিশনে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন আরিফকে হারিয়ে ম্যাচ জেতেন জাহিদুল।
বাংলাদেশ বক্সিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি আদনান হারুন প্রতিযোগিতা শেষে সবার কাছে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আসটি সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করার জন্য। প্রথম ম্যাচের পর নামাজ বিরতিতে দৈনিক ইনকলাবের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি তার ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। আদনান নিজেও একসময় রিং কাঁপাতেন, তাকে নিজের খেলার ব্যাপারে জানতে চাইলি তিনি বলেন, ‘অফিসিয়ালি আমি এখনও অবসরের ঘোষণা দিইনি। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, আমি নিজের খেলায় জোর দেওয়ার থেকে যদি বক্সিং ডেভলোপমেন্টে মনযোগ দেই তাহলে দেশের বক্সিংয়ের জন্য সেটা মঙ্গল বয়ে আনবে। তখন আমি সত্যকারের মেধা তুলে আনাতে আরও বেশি সময় পাবো।’
আদনান যে সত্যকারের মেধা তুলে আনার ব্যাপারে সক্ষম সে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যায় যখন ফেদারওয়েট প্রতিযোগী বাবুল রেজার জীবনকাহিনী উঠে আসে এই প্রতিবেদকের নিকট। রাজমিস্ত্রীর কাজ করা এই বক্সার জানান তাকে প্রতিদিন সকাল ৫টায় উঠে প্রথমে শরীরচর্চা করতে হয়, তারপর পেশাদারী কাজ মিটিয়ে রাতে আবারও অনুশীলন। বক্সিংয়ের জন্য এই ধরনের হৃদয় নিঙড়ানো খেলোয়াড় খুঁজে বের করে, রিংয়ে পাঠিয়ে আদনান প্রমাণ করেছেন যে তিনি কেবল স্বপ্ন দেখেন না, সেটার বাস্তবায়নও করতে জানেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।