পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘আমি সৃষ্টি করতে পারি, ধ্বংসও করতে পারি’
ফয়সাল আমীন : আমদানি নির্ভরতা কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতিতে সিলেটের ফেঞ্জুগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের সর্ববৃহৎ সার কারখানা। চীনা সরকারের ঋণ ও দেশের রাজস্ব তহবিলের অর্থায়নে নির্মিত হয় ঐতিহাসিক শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরী লিমিটেড। আ’লীগ ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনার অবদান চির অমøান হয়ে থাকবে এই ফ্যাক্টরী ইতিহাসের সাথে, এমনটি মনে করে নেতাকর্মীরা। যা নিয়ে গর্ব করেন তারা। সার-কারখানা নির্মাণে সরকারের এ সফলতার ধ্বংস কামনা করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। শুধু তাই নয়, দম্ভসুরে ঘোষণা দিয়েছেন ‘সৃষ্টি করতে পারেন, ধ্বংসও করতে পারেন তিনি’। সার-কারখানা এলাকায় আর প্রসাব করতে যাবেন না বলেও বেসামাল বক্তব্য ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রকাশ্যে। তার এহেন বক্তব্যে তোলপাড় বইছে ফেঞ্চুগঞ্জসহ গোটা সিলেটের জনপদে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তার মানসিক ভারসাম্য নিয়ে। ফেঞ্চুগঞ্চ ডিগ্রি কলেজের সাবেক জিএস, স্থানীয় আ’লীগ নেতা আব্দুল মতিন বলেন, দেশের একটি সম্পদ ধ্বংস কামনার মধ্যে দিয়ে সরকার ও রাষ্ট্রদ্রোহী মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন এমপি মাহমুদ উস সামাদ। তিনি যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে প্রলাপ বকছেন, তা সৃুনিশ্চিত। তার বিশ্রাম ও চিকিৎসা প্রয়োজন। অন্যথায় তার নিজের, দল, সরকার, জনগণের জন্য যেকোন সময় বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন তিনি। ইতিমধ্যে সমালোচিত নানা কাজে দলের নেতাকর্মীরা তার জন্যও বিব্রত, আতঙ্কিত। গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শাহজালাল সার-কারখানা সিবিএ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন সিলেট-৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। সিবিএ সভাপতি সালেহ আহমদের সভাপতিত্বে এ্ই অনুষ্ঠানে বক্তব্যের এক পর্যায়ে আয়োজকদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বেসামাল বক্তব্য দিতে থাকেন এমপি। তার লাগামহীন বক্তব্য রেকর্ড করে নেন কৌতূহলী অনেকে। এ নিয়ে একাধিক অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ হলে তা ব্যাপকতা পায় মুহূর্তে। হতবাক, বিস্মৃত হয়ে পড়েন খোদ সরকার দলের নেতাকর্মীরা। সরকার প্রধানসহ মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টরা যখন বলছেন দেশের মানুষ আগের চেয়ে ‘ভালো’ আছে। এমনকি ফিনল্যান্ডে আওয়ামী লীগের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ‘শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, দেশের মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক ‘ভালো’ আছে। এরকম বাস্তবতাকে চ্যালেঞ্জ করে এমপি মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বলেছেন, ‘ইলিয়াস আলীকে মিস করেন তিনি, তার মতো ৫০ জন এমপি থাকলে বাংলাদেশের অবস্থা এতো খারাপ হতো না।’ বক্তব্য এ পর্যন্ত দিয়ে ক্ষান্ত হননি তিনি। নিজের যুদ্ধাংদেহী মনোভাব প্রকাশ করতে যেয়ে বলেন, ‘ছোট বেলায় মারামারি করে বড় হয়েছে তিনি। গুন্ডা ছিল ৮ জন, ক্লাস এইট-নাইনে থাকতেই তিনি শাসন করেছেন তাদের। আমি কাউকে গুন্ডামি করতে দেই নাই, দেবও না। আমি স্বাধীনতাবিরোধী প্রস্তাব এনেছি। আলোচনা সভার বিশৃঙ্খলা করে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমি এখানে কোন দিন প্রশাব করতেও আসবো না, শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরী ধ্বংস হয়ে যাক, আমি এটা কামনা করি। আমি সুষ্টি করেছিলাম। তোমরা জানো এক ভিড্ওি কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন, কয়েছ যদি পাস করো, আমি যদি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করি তাহলে শাহজালাল ফার্টিলাইজার হবে। এ নিয়ে ১৫৭টি রিট হয়েছে, শেখ হাসিনা জানেন মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী সব পারে। আমি সৃষ্টি করতে পারি, ধ্বংসও করতে পারি।’ এমপি মাহমুদ উস সামাদ তার ঝাঁঝালো বক্তব্যে আরো বলেন, ‘আমি বক্তব্য দিচ্ছি আর এখানে উচ্চু বাক্য হচ্ছে, ‘তাহলে এখানো আমাকে কেন এনেছো। সারাদিন থেকে কয়েক ঘন্টা বক্তব্য দিয়েছি, কই আমার গলার তো কোন পরিবর্তন হলো না। আমি মানুষকে বড় মায়া করি, লাত্তি দেই না।’ উল্লেখ্য যে, ২০১১ সালে তৎকালী মাহজোট সরকারের ঐতিহাসিক উদ্যোগ ফেঞ্চুগঞ্জে দেশের সর্ববৃহৎ শাহজালাল সার-কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ২০১২ সালের ২৪ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কারখানা নির্মাণের লক্ষ্যে ওই বছর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনও দেয়া হয়। তন্মধ্যে চীন সরকারের ঋণ হচ্ছে ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিলের। প্রায় ৪ বছরেই সার-কারখানাটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। গত বছর থেকে এই সার-কারখানা বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। কিন্তু উৎপাদনের প্রথম বছরে (২০১৬-১৭ অর্থ বছরে) লোকসান ২৩৯ কোটি টাকা। এছাড়া সার-কারখানা নির্মাণে ব্যয়ের পাঁচ হাজার ৪০৯ কোটি টাকার প্রায় অর্ধেক টাকাই লোপাট করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। এ সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি নিম্নমানের যন্ত্রপাতি কেনা এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কয়েকদিনের মধ্যে সার-কারখানা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন সংসদীয় কমিটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।