Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উত্তাপের ম্যানচেস্টার ডার্বি আজ গার্দিওলা-মরিনহো মুখোমুখি

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ম্যানচেস্টার ডার্বি- প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। বারুদে ম্যাচ যাকে বলে। এমনিতেই এই ম্যাচের উত্তাপ কতটুকু তা বুঝাতে ‘ম্যানচেস্টার’ আর ‘ডার্বি’ শব্দ দুটিই যথেষ্ঠ। সেই উত্তাপের মাত্রা আরো বেড়ে যায় যদি দু’দলের ডাগআউটে থাকে সময়ের সেরা দুই কোচের উপস্থিতি। আজ তেমনি এক ম্যাচ অপেক্ষা করছে ম্যানচেস্টোরের ওল্ড ট্রাফোর্ডে।
মাঠের লড়াইয়ে যদি মেসি-রোনালদো হন সময়ের সেরা প্রতিদ্ব›দ্বী তাহলে মাঠের বাইরে অর্ধাৎ সাইডলাইনের হিসাব করলে প্রথমেই চলে আসবে পেপ গার্দিওলা ও হোসে মরিনহোর নাম। ম্যানচেস্টারের দুই দলের কোচ বলে নয়, কোচ হিসেবে তাদের অসাধারণ সব অর্জনই তাদের এই আসনে বসিয়ছে। সময়ের পরিক্রমায় সেরা দুই কোচ আবার হচ্ছেন মুখোমুখি। ম্যাচটা গার্দিওলার কাছে যতটা তার চেয়েও বেশি গুরুত্বের মরিনহোর কাছে।
কিভাবে? সেটা পয়েন্ট টেবিলের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হবে। এবারের প্রিমিয়ার লিগে শীর্ষ দুই দলই ম্যানচেস্টারের। যেখানে গার্দিওলার সিটির চেয়ে পরিষ্কার আট পয়েন্টে পিছিয়ে মরিনহোর ইউনাইটেড। এ কারণেই ম্যাচটি মরিনহোর কাছেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কথা। হারলেই যে শিরোপার দৌড় থেকে পিছিয়ে পড়তে হবে অনেকটা। সেক্ষেত্রে পয়েন্ট ব্যবধান হয়ে যাবে ১১! আর সিটি নাম লেখাবে প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে টানা ১৪ জয়ের রেকর্ডে। সুতরাং একটু বাড়িয়ে এটাকে ‘শিরোপা নির্ধরণী’ ম্যাচ বললেও হয়ত বাড়িয়ে বলা হবে না।
মরিনহো অবশ্য এখনই লিগ শিরোপাজয়ী দলকে নিয়ে ভবিষদ্বানী করার সময় আসেনি বলে মনে করেন। এক্ষেত্রে নিজের দলের নাম বললেও সিটিকেই এগিয়ে রাখলেন স্বঘোষিত ‘স্পেশাল ওয়ান’, ‘আমরাও চ্যাম্পিয়ন হতে পারি, অথবা অন্য কোন দল। গত দুই বছরের তুলনায় এবার আমরা নিঃসন্দেহে অনেক ভাল খেলছি। কিন্তু সিটিও ভাল দল।’
মরিনহো কিন্তু আজকের ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী। আশাবাদী হওয়ার কারণও আছে। মৌসুমের অধিকাংশ সময়জুড়ে তাকে লড়তে হয়েছে দলের ইনজুরির সমস্যা নিয়ে। বর্তমানে সেই সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে উঠা গেছে। মধ্যমাঠে নেমানজা মাটিজের সঙ্গে আক্রমণে ফিরেছেন জøাটান ইব্রাহিমোভিচ। পল পগবা ফিরলেও নিষেধাজ্ঞার কারনে খেলতে পারবেননা। মারোয়ান ফেলাইনি রমেলু লুকাকুর মত তারকারা তো আছেনই।
যতটা আত্মবিশ্বাসের সুরে কথা বলেছেন গার্দিওলার মধ্যে ততটা ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করা যায়নি। তার মতে ওল্ড ট্র্যাফোডে মরিনহো তার ইউনাইটেড স্কোয়াডকে যতটা উজ্জীবিত ভাবে গড়ে তুলেছেন তার বিপরীতে সিটি কিছুটা হলেও পিছিয়ে থাকবে। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ম্যাচে শাখতার দোনেৎস্কের কাছে হারের পর এমনটা মনে হতেই পারে। সব প্রতিযোগিতা মিলে মৌসুমে এটি ছিল সিটির প্রথম হার। এমন পরিসংখ্যান সিটিকে ‘অপ্রতিরোধ্য’ তকমা দিলেও শেষ ৪ জয়ের দিকে তাকালে একটা জিনিস পরিষ্কার চোখে পড়বে। প্রতিটা জয়ই মাত্র ১ গোলের ব্যবধানে পাওয়া। কয়েকটি জয় আবার ভাগ্য প্রসুত। অর্থাৎ আক্রমণ নিয়ে একটু ভাবতেই হচ্ছে গার্দিওলাকে।
গার্দিওলা অবশ্য তার শিষ্যদের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখছেন। বিশেষ করে মাঝমাঠের সারথী কেভিনো ডি ব্রæইন ও আক্রমণে সার্জিও আগুয়েরে ও গ্যাব্রিয়েল জেসুস জুটির উপর তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে বলে জানান। ডি ব্রæইনকে ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস’ আখ্যা দিয়ে সাবেক বার্সেলোনা কোচ বলেন, ‘আমি মনে করি সে বিশ্বমানের কারণ সে সবকিছুই করতে পারে।’ আর আগুয়েরো-জেসুসকে নিয়ে মধুর সমস্যায় কাতালান কোচ। ব্রজিলিয়ান নাকি আর্জেন্টাই ফরোয়ার্ডকে মাঠে নামাবেন এ নিয়ে ইদানিং বেশ ভাবতেও হচ্ছে তাকে। যে কারণে বলেই ফেললেন, ‘আমার মনে হয় এটা কঠিনতম সিদ্ধান্ত কারণ দুজনই ফর্মের চূড়ায়, দুজনই খেলার দাবি রাখে। তাদের দুজনকে পেয়ে আমি খুশি।’
গত মৌসুমে এই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেই ম্যানচেস্টারের দুই দলে অভিষেক হয়েছিল মরিনহো ও গার্দিওলার। ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতে নিয়েছিল পেপ গার্দিওলা। এরপর থেকে ওল্ড ট্রাফোর্ডে আর হারেননি মরিনহো। মাঝে চলে গেছে ৪০ ম্যাচ, যেখানে মরিনহোর জয় ২৯টিতেই। মরিনহো কি পারবেন এই রেকর্ড অক্ষুন্য রাখতে। নাকি ১৯ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে ৯-৬ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা গার্দিওলা এবারো হাসবেন শেষ হাসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ম্যানচেস্টার

১৫ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ